বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর খিলগাঁওয়ে পল্লীমা স্কুলের সামনে আহত পরিবহন শ্রমিক সোহেলের দায়ের করা হত্যাচেষ্টা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে আদালত।
এছাড়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিরাপত্তারক্ষীকে অপহরণ ও গুমের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বহিষ্কৃত সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
উল্লিখিত তিন আসামিকে বুধবার কারাগার থেকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তাদেরকে এসব মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন। বিচারক সাইফুর রহমান তদন্ত কর্মকর্তার আবেদন মঞ্জুর করে তিনজনকেই গ্রেপ্তার দেখান।
নৌপথে পালানোর সময় গত ১৩ আগস্ট গোপন তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর সদরঘাট এলাকা থেকে সালমান এফ রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। নিউমার্কেট এলাকার দোকান কর্মচারী শাহজাহান আলীকে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় পরদিন ১৪ আগস্ট তার ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশীদ।
গত ৩ সেপ্টেম্বর রাতে সাবেক আইজপি মামুনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে মোহাম্মদপুরে মুদি দোকানি আবু সায়েদ হত্যার অভিযোগে করা মামলায় পরদিন ৪ সেপ্টেম্বর তার আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।
রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় মোহাম্মদ ইসমামুল হক নামে এক কিশোরকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে ২৪ সেপ্টেম্বর তার চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।
গত ১৬ আগস্ট রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকা থেকে সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর আদালত তার আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।
সালমান-মামুনের মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলন চলাকালে গত ৪ আগস্ট বিকেল সাড়ে ৫টায় খিলগাঁও থানাধীন শহীদ বাকি সড়ক খিলগাঁও পল্লীমা স্কুলের সামনে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যুক্ত হন মো. সোহেল।
তালতলা মার্কেটের সামনে থেকে সরকার দলীয় সমর্থকসহ পুলিশ ছাত্র-জনতার দিকে ইট-পাটকেল, টিয়ার গ্যাস, রাবার বুলেট, ছররা গুলিসহ সাউন্ড গ্রেনেড চার্জ করে। ফলে মামলার বাদী পুলিশের ছররা গুলির আঘাতে ডান হাতে কাঁধের ওপর এবং কপালে গুলি লাগে। গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হন। এ ঘটনায় তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৭৯ জনের নামে খিলগাঁও থানায় হত্যাচেষ্টার মামলা করেন।
মেজর জিয়াউলের মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০০৯ সালে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ করায় সেনাবাহিনী থেকে জোর করে কর্নেল তৌহিদুল ইসলামকে অবসরে পাঠানো হয়। এরপর তিনি ২০১৬ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রধান প্রটেকশন অফিসার হিসেবে কাজ করেন।
খালেদা জিয়ার নিরাপত্তারক্ষী থেকে সরে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের হুমকি ও ভয়ভীতি দেখানো হয় তাকে। সরতে রাজি না হওয়ায় প্রথমে তাকে গুম করা হয়। এরপর দু’টি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এ সময় অন্যায়ভাবে ২৫ দিন তাকে জেল খাটানো হয়।
এ ঘটনায় নিউ মার্কেট থানায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারেক সিদ্দিকীসহ ১০ জনের নামে মামলা করা হয়।