বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আওয়ামী লীগ প্রণীত কালাকানুনেই তাদের বিচার হোক

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ১৩ অক্টোবর, ২০২৪ ২১:০৩

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘ক্ষমতাচ্যুতরা অতীত অপকর্মের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা না চেয়ে আনসার লীগ, বিচার লীগ ও নানারকম দাবিদাওয়ার লীগ নামে আরেক রূপে ফিরে আসার চেষ্টা করছে। তাদের অনেকে দাড়ি ও টুপি পরছে। উদ্দেশ্য বিশ্ববাসীকে মেসেজ দেয়া- আমরা যতদিন ছিলাম ততদিন চরমপন্থার উত্থান হতে দেইনি। আমরা নাই তাই এখন বাংলাদেশে চরমপন্থা আছে।’

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমরা কারও ওপর কোনো জুলুম ও অবিচার চাই না। আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ধরে যেসব কালাকানুন করেছে তার ভিত্তিতেই তাদের বিচার হোক। তারা যেন তাদের সঠিক পাওনাটা পায়।’

রোববার রাজধানীর চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতের রুকন (সদস্য) সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জামায়াত ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।

জামায়াতের আমীর বলেন, ‘২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর লগি-বৈঠার তাণ্ডব চালিয়ে বাংলাদেশের মানবতা, গণতন্ত্র এবং জনগণের ইচ্ছা ও আশা-আকাঙ্ক্ষাকে জবাই করা হয়েছিল। ওইদিনই সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশ পথ হারিয়েছিল।

‘তারা সেদিনের হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে সারা বিশ্বকে স্তম্ভিত করে দিয়েছিল। বহু শিশু এই দৃশ্য দেখার পর একনাগাড়ে অনেকদিন রাতে ঘুমাতে পারেনি, চিৎকার দিয়ে উঠেছে। কিন্তু মজলুমরা তার বিচার পায়নি।’

তিনি বলেন, ‘মুষ্টিমেয় কিছু দুর্বৃত্ত ছাড়া বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ মজলুম ছিলেন। আর মজলুমদের সামনের কাতারে ছিল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

‘দীর্ঘ সাড়ে ১৭ বছর বহু ত্যাগ ও কষ্ট স্বীকার করে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বাংলাদেশ আবার আপন পথ ফিরে পেয়েছে।’

ডা. শফিকুর বলেন, ‘ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে পেছনের দরজা দিয়ে সাজানো-পাতানো নির্বাচনের মাধ্যমে ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসেছিল তারা। এখন তাদের নাম সাহস করে কেউ নেয় না। তাদের দল (আওয়ামী লীগ) যারা করে তারাও সেই নাম নিতে চায় না। আমরা মজলুম জনগণ তাদের নাম নেব কেন?

‘তাদেরকে তারা নিজেরা নিষিদ্ধ করার ইতিহাস আছে। তারা যখন বাকশাল কায়েম করে তখন তাদের দলসহ সব রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করেছিল। আর এবার আল্লাহর সাহায্য নিয়ে জনগণ তাদের দলকে নিষিদ্ধ করেছে।’

জামায়াতের আমীর বলেন, ‘সাড়ে ১৫ বছর দাপটের সাথে তারা দেশ শাসন করেছে। ক্ষমতায় আসার মাত্র দু’মাসের মাথায় দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর গায়ে তারা আঘাত করে ৫৭ জন চৌকস ও দেশপ্রেমিক, প্রতিশ্রুতিশীল সেনা কর্মকর্তাকে বেদনাদায়কভাবে হত্যা করেছিল।

‘সেনা কর্মকর্তাদের হত্যার ঘটনায় তদন্তের যে উদ্যোগ সরকার নিয়েছিল, তা জনগণকে ধোঁকা দেয়ার জন্য। নেপথ্যের নায়কদের, হুকুমদাতাদের, দৃষ্কৃতকারীদের আড়াল করার জন্য।’

তিনি বলেন, ‘বিডিআর হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের নায়ক-নায়িকারা তাদের অপরাধের পাওনা এখনও পায়নি। এ পাওনা তাদেরকে পেতে হবে। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত সব হত্যার বিচার করতে হবে।

‘তবে অগ্রাধিকারভিত্তিতে আগে সাম্প্রতিক গণহত্যায় জড়িতদের বিচার করতে হবে। তাদের বিচার এজন্য করতে হবে- শহীদদের তাজা রক্ত এখনও ভাসছে। আহতরা কাতরাচ্ছে। সাক্ষী মজুদ। আলামত জীবন্ত ও স্পষ্ট। যত দ্রুত সম্ভব ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করে ওদেরকে সঠিক পাওনা বুঝিয়ে দিতে হবে।’

জামায়াতের প্রধান বলেন, ‘২০১৩ সালের ৫ মে বিভিন্ন দাবিতে সোচ্চার অরাজনৈতিক একটি সংগঠন হেফাজতের ওপর ক্র্যাকডাউন করা হয়েছিল। তা ছিল আরেকটি মানবতাবিরোধী অপরাধ। এটি ছিল আরেকটি গণহত্যা। কতজনকে হত্যা করা হয়েছে তা আজও জাতি জানতে পারেনি।’

তিনি বলেন, ‘অতীত অপকর্মের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা না চেয়ে আনসার লীগ, বিচার লীগ ও নানারকম দাবিদাওয়ার লীগ নামে তারা আরেক রূপে ফিরে আসার চেষ্টা করছে।

‘তাদের অনেকে দাড়ি ও টুপি পরছে (আর্টিফিসিয়াল কিনা জানি না)। একদিকে দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষকে ধোঁকা দিচ্ছে ও বিশ্ববাসীকে মেসেজ দেয়া যে, আমরা যতদিন ছিলাম ততদিন চরমপন্থার উত্থান হতে দেইনি। আমরা নাই তাই এখন বাংলাদেশে চরমপন্থা আছে।’

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা কোনো সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে আইন হাতে তুলে নিয়ে প্রতিশোধ নেব না। কিন্তু ন্যায়বিচার পেতে আমরা বিদ্যমান আইনের মাধ্যমে জুলুমের প্রতিকার চাইব। আমরা সেই প্রতিকারটিই চাচ্ছি।

‘গণঅভ্যত্থানের পর মজলুম দল হিসেবে প্রতিশোধ নেয়ার অধিকার ছিল জামায়াত ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের। কিন্তু ৫৪ হাজার বর্গমাইলের দেশের কোথাও একটিও প্রতিশোধ নেয়া হয়নি।’ নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে জামায়াতের এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘আমরা একটি ঐক্যবদ্ধ জাতি গঠন করতে চাই। তাই আমাদের সীমাহীন ধৈর্য্যের পরিচয় দিতে হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর