শেখ হাসিনার নামে আরও তিনটি হত্যা মামলা করা হয়েছে উল্লেখ করে বাসসের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, এসব মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে।
বার্তা সংস্থাটির খবরে বলা হয়, বৃহস্পতিবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এসব মামলা করা হয়।
আদালত বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড শেষে ঢাকা মহানগরের তিন থানাকে এসব মামলার অভিযোগ এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেয়।
শোরুমের কর্মচারী হত্যা মামলা
ঢাকার কেরানীগঞ্জের লায়ন শোরুমের কর্মচারী নাদিমুল হাসান এলেনকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৯০ জনের নামে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তরিকুল ইসলামের আদালতে নিহতের মা কিসমত আরা মামলাটি করেন।
আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে অভিযোগটি সূত্রাপুর থানা পুলিশকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেয়।
ওই মামলার অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছেন ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, হাছান মাহমুদ, শেখ ফজলে নূর তাপস, শেখ ফজলে শামস পরশ, জুনাইদ আহমেদ পলক, সাঈদ খোকন, কাজী ফিরোজ রশীদ, অ্যাডভোকেট কাজী নজিবুল্লাহ হিরু, মাঈনুল হোসেন খান নিখিল, আবদুল্লাহ আল মামুন, হাবিবুর রহমান, সৈয়দ নুরুল ইসলাম, হারুন-অর-রশীদ, বিপ্লব কুমার সরকার।
গত ১৯ জুলাই সূত্রাপুর থানাধীন কবি নজরুল কলেজ ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের কাছে ওয়াসা পানির পাম্পে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের ছোঁড়া গুলিতে এলেন নিহত হন।
সাংবাদিক হত্যা মামলা
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সড়ক পরিবহন শ্রমিক দলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ও সাংবাদিক হাসান মাহমুদকে খুনের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩৫ জনের নামে ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল হকের আদালতে নিহতের স্ত্রী ফাতেমা বেগম মামলাটি করেন।
আদালত অভিযোগটি খিলগাঁও থানা পুলিশকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেয়।
মামলার অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছেন ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, সালমান এফ রহমান, গোলাম দস্তগীর গাজী, শামীম ওসমান, সাবের হোসেন চৌধুরী, নজরুল ইসলাম বাবু, শাহজাহান খান, মসিউর রহমান রাঙ্গা, এনায়েত উল্যাহ, ইরফান সেলিম, লোটাস কামাল, আতিকুল ইসলাম, হারুন-অর-রশীদ, বিপ্লব কুমার সরকার।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, হাসান মাহমুদ সাংবাদিক হিসেবে জীবিকা নির্বাহ করতেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ৩১ জুলাই রাত দেড়টার দিকে উত্তর মুগদাপাড়ার বাসা থেকে তিনি বের হন। রাতে আর বাসায় ফেরেননি।
অনেক খোঁজাখুজির পর স্ত্রী জানতে পারেন, সাদা পোশাকধারী অজ্ঞাতনামা লোক এবং আরও অজ্ঞাতনামা ৫০ থেকে ৬০ জন হাসান মাহমুদকে তুলে নিয়ে গেছে। পরে তিনি জানতে পারেন গোড়ান ছাপড়া মসজিদের সামনে তার স্বামী পড়ে আছেন। সেখান থেকে ভোর পাঁচটার দিকে মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানান।
যুবক আল শাহরিয়ার হোসেনকে হত্যার অভিযোগে মামলা
গুলি করে যুবক আল শাহরিয়ার হোসেনকে হত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরসহ ৩৯ জনের নামে মামলা করা হয়েছে। মামলায় ২০০ থেকে ৩০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নিহতের বাবা মনির হোসেন বাদী হয়ে এ মামলা করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড শেষে মামলার আবেদনটি এজাহার হিসেবে মোহাম্মদপুর থানাকে গ্রহণ করতে নির্দেশ দেন।
এ মামলার উল্লেখযোগ্য অপর আসামিরা হলেন আসাদুজ্জামান খান কামাল, আনিসুল হক, মোহাম্মদ আলী আরাফাত, সালমান এফ রহমান, হাছান মাহমুদ ও দীপু মনি।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ১৯ জুলাই সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মোহাম্মদপুর থানাধীন এলাকায় হাজার হাজার ছাত্র-জনতা কোটা সংস্কারের আন্দোলন করছিলেন। সেই আন্দোলনের ওপর পুলিশ এবং ছাত্রলীগ-যুবলীগসহ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা নির্বিচারে গুলি চালায়। তখন আল শাহরিয়ার হোসেন রাস্তা পার হতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।