বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানীর ডেমরার সানারপাড়ে মিরাজ হোসেন ও মোহাম্মদপুরের বছিলায় বুড়িগঙ্গা ফিলিং স্টেশনের মেশিন অপারেটর মনসুর মিয়া এবং মিরপুরে নাহিদুলকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তিনটি হত্যা মামলা হয়েছে।
মামলাগুলো এজাহার হিসেবে গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট থানাকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এই তিন মামলায় শেখ হাসিনাসহ ১৫৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেলাল হোসেনের আদালতে মিরাজ হোসেনকে হত্যার অভিযোগে ৯২ জনকে আসামি করে খোরশেদ আলম মিয়া একটি মামলা দায়ের করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে ডেমরা থানা পুলিশকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেয়।
এ মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়া উল্লেখ্যযোগ্য অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- সাবেক সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, পুলিশ কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান, হারুন-অর-রশীদ ও বিপ্লব কুমার সরকার।
একই দিন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালতে মনসুর মিয়া নিহত হওয়ার ঘটনায় ২২ জনকে আসামি করে তার ভাই আয়নাল হক মামলা করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে অভিযোগটি মোহাম্মদপুর থানা পুলিশকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেয়।
এ মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়াও উল্লেখ্যযোগ্য অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, আনিসুল হক, তাজুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, ড. হাছান মাহমুদ, মোহাম্মদ আলী আরাফাত, সাবেক সংসদ সদস্য সালমান এফ রহমান, সাদেক খান, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, পুলিশ কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান, হারুন-অর-রশীদ, বিপ্লব কুমার সরকার ও ড. খ মহিদ উদ্দিন।
অপরদিকে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের আদালতে নাহিদুল ইসলাম নিহতের ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ ৪১ জনকে আসামি করে তার ভাই সবুজ একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে অভিযোগটি মিরপুর থানা পুলিশকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।
মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়াও উল্লেখ্যযোগ্য অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহেনা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, ফজলে নূর তাপস ও ফজলে শামস পরশ।
মনসুর হত্যা মামলার অভিযোগে বলা হয়, কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে ১৯ জুলাই মনসুর মিয়া মোহাম্মদপুরের বছিলা ব্রিজ এলাকায় তার সন্তানকে মাদ্রাসা থেকে আনতে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। পরে তাকে ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মিরাজ হত্যা মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ৫ আগস্ট মিরাজ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেন। ডেমরার সানারপাড় মেইন রোডে পৌঁছলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও র্যাবের সঙ্গে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, কৃষকলীগের কয়েকশ’ ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ও আক্রমণ করে। তারা গুলি চালাতে থাকে। এতে মিরাজসহ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাকে মিটফোর্ড হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নাহিদুল হত্যা মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ১৯ জুলাই মিরপুর গোলচত্বর এলাকায় নাহিদুলকে শেখ হাসিনার নির্দেশে গুলি করে হত্যা করা হয়।