বিএনপির সঙ্গে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সম্পর্ক দৃঢ় থেকে দৃঢ়তর হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম। একইসঙ্গে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন যে, বাংলাদেশে চীনের যে বিনিয়োগ সেটা দেশের উন্নয়নের স্বার্থে আরও বৃদ্ধি পাবে।
বুধবার সকালে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনের সঙ্গে বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে বক্তব্য দেন মির্জা ফখরুল।
বৈঠকে অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে চীনের হস্তক্ষেপ না করার নীতির ওপর গুরুত্বারোপ করে বাংলাদেশ ও এর জনগণকে অতীতের মতো সমর্থন দিতে চীনের প্রতিশ্রুতির কথা পুনর্ব্যক্ত করেন রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।
তিনি বলেন, দেশের উন্নয়ন ও জনগণের কল্যাণে আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াবে চীন।
বেলা ১১টার দিকে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে পৌঁছে প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেন চীনা রাষ্ট্রদূত।
বৈঠক শেষে ফখরুল সাংবাদিকদের বলেন, ‘অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে আমাদের আলোচনা হয়েছে। দীর্ঘদিন পর চীনা রাষ্ট্রদূতকে আমাদের অফিসে পেয়ে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত।
‘বিশেষ করে ছাত্র নেতৃত্বাধীন গণআন্দোলনের প্রেক্ষাপটে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে চীনা রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠককে দলের পক্ষ থেকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নেয়া হয়েছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণের প্রতি চীনের দৃঢ় অঙ্গীকার রয়েছে। তারা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, তারা আধিপত্যবাদে বিশ্বাস করে না। তারা এর আগে বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এদেশের জনগণের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল এবং এখন তারা সেই অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে।’
তিনি বলেন, ‘স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোকে অর্থনৈতিক সহায়তা প্রদানসহ চীনের উল্লেখযোগ্য বৈশ্বিক ভূমিকার প্রশংসা করে বিএনপি।’
ফখরুল বলেন, ‘চীনের রাষ্ট্রদূত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।’
ফখরুল বলেন, ‘ইয়াও ওয়েন বিশ্বাস করেন বিএনপি ও চীনা কমিউনিস্ট পার্টির মধ্যে সম্পর্ক ও সহযোগিতা আরও জোরদার হবে।
‘আমরা বিশ্বাস করি চীনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আরও গভীর হবে এবং পারস্পরিক বিশ্বাসের ভিত্তিতে আমরা আমাদের সম্পর্ককে এগিয়ে নেব।’
ইয়াও ওয়েন বলেন, বিএনপি মহাসচিব ও দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে তাদের অত্যন্ত ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে আমরা আমাদের সহযোগিতা পর্যালোচনা করেছি এবং আলোচনা করেছি।
‘চীনা কমিউনিস্ট পার্টি ও বিএনপির মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতা ও বিনিময়ের দৃঢ় সম্পর্ক রয়েছে।’
বৈঠকে চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, তারা উভয়ে এই চমৎকার সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে এবং ভবিষ্যতে বিনিময় ও সহযোগিতা বাড়াতে সম্মত হয়েছেন।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, তারা বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করে চীনের সমর্থন দেয়ার নীতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আব্দুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী, আইনবিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।