বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম।
ঢাকার সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে বীর শহীদদের প্রতি বুধবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে তিনি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
পরে জাতীয় স্মৃতিসৌধের পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন এ উপদেষ্টা।
ওই সময় তার সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাসহ সাভার উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পরে প্রশ্নের জবাবে এ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, ‘মন্ত্রণালয়টা পুনর্গঠনে আমরা বসব। কীভাবে পুনর্গঠন করা যায়। পরিকল্পনা করে আমাদের এটা করতে হবে। কারণ বিগত কোটা আন্দোলনে সবচেয়ে বেশি ইমেজ ড্যামেজ হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের। নানাভাবে এটাকে আমরা দেখব বিভিন্ন পর্যায় থেকে সবচাইতে ইমপর্টেন্ট যেটা, সেটা হচ্ছে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সংগ্রাম করতে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিষয়টা প্রধান হয়ে গেছে, জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে মুক্তিযোদ্ধারা ইমেজ সংকটের মধ্যে পড়েছে।
‘একটি সুবিধাভোগী শ্রেণি হিসেবে মুক্তিযোদ্ধাকে চিত্রিত করেছে বিগত স্বৈরাচারী ব্যবস্থা। সে কারণে এটাকে পুনর্গঠনের ব্যাপারে এই মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগ এবং তাদের বীরত্ব সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধা যারা আছেন তাদের মতামত নিয়েই সামনের দিনে আমরা এগিয়ে যাব।’
ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমরা এই ব্যাপারে পরিকল্পনা গ্রহণ করব, এখনও করি নাই। আসছি সবে, আমি আজকেই অফিস করব। মন্ত্রণালয়ের সকলের সাথে বসে আমরা এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেব কী কী করতে হবে। আপনারা সব জানাতে পারবেন।
‘অনেক সিদ্ধান্ত নেয়ার আছে। সত্যিকার অর্থেই আছে। সবাই আমরা ভাবি, বাস্তবেই ঘটেছে এ ঘটনা। এটা সবার সামনেই হবে যা কিছু আমরা পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়ন করব, তবে সংস্কার হবে এবং ড্রাস্টিক সংস্কার হবে।’
মন্ত্রণালয় নিয়ে এ উপদেষ্টা বলেন, ‘এই মন্ত্রণালয়ের ইমেজ সংকট যেটা হয়েছে, আমি কোটা আন্দোলন করতে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা, মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানের কোটা যে বিষয়গুলো সংগ্রামে ফুটে উঠেছিল। এটা আন্তর্জাতিকভাবেই বিস্তৃত হয়েছে। সবাই এটাকে নিয়ে সংবাদ করেছে, এখনও বিশ্লেষণ হচ্ছে এসব বিষয়গুলো নিয়ে। সত্যিকার অর্থে যারা মুক্তিযোদ্ধা, প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা, আমি মুক্তিযোদ্ধাই বলতে চেয়েছিলাম, কিন্তু সেখানে আমাকে প্রকৃত শব্দ লাগাতে হলো, এটা দুঃখের ব্যাপার।
‘অনেক দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে তারা তাদের সন্তানকে রাস্তায় তাজা রক্ত ঝরাতে দেখেছে। এটা থেকে নিষ্কৃতি পাওয়াটা তাদের জরুরি এবং এ বিষয়ে আমরা দ্রত পদক্ষেপ নেব। মন্ত্রণালয়ে বসে আলোচনা করে পর্যায়ক্রমে আমরা সিদ্ধান্তগুলো নেব। বস্তুনিষ্ঠ ও কার্যকর সিদ্ধান্তগুলোই আপনারা দেখতে পাবেন। এখানে সংস্কার হবে এবং ভালো সংস্কার হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা তো নানা বিষয়ে অনেক ফ্যান্টাসি গল্প তৈরি করেছি। এগুলোর আড়াল থেকে সত্য তথ্য বের করে জনগণের সামনে উপস্থাপন করব।
‘তাহলে আজকে যে শহিদদের স্মরণে এখানে পুষ্পমাল্য দিলাম তাদের আত্মা শান্তি পাবে।’