কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে দেশব্যাপী আন্দোলনের সময় হত্যাকাণ্ডের বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
সচিবালয়ে বুধবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় গণহত্যা ও গুলিবর্ষণের ঘটনার বিচারের জন্য এরই মধ্যে কিছু মামলা হয়েছে, কিন্তু রাজপথে থাকা ছাত্র সংগঠন, মানবাধিকার সংগঠনসহ অনেকে দাবি করছে যে, এটিকে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে খতিয়ে দেখা যায় কি না।
‘আমরা দেখেছি, জুলাই গণহত্যার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের অধীনে বিচার করা সম্ভব।’
জাতিসংঘের অধীনে তদন্ত টিম কাজ করবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিগত সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ যারা যারা এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত, তাদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।’
এ উপদেষ্টা বলেন, ‘১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন আছে। এটা পরে ২০০৯ ও ২০১৩তে সংশোধন হয়েছে। এই আইনে আমরা জুলাই গণহত্যা, জুলাই গণহত্যা বলতে আমি আগস্ট মাসের প্রথম পাঁচ দিনের হত্যার কথা বলছি, এর জন্য দায়ী যে ব্যক্তিবর্গ আছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে উনাদের বিচারের জন্য আমরা ইতিমধ্যে একটা ছোটখাটো গবেষণার মতো করেছি।
‘আমরা গবেষণা করে দেখেছি, এই আইনের অধীনে এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ব্যক্তিরা যারা বিভিন্ন আদেশ দিয়েছেন, সহযোগিতা করেছেন, তাদের সকলকে বিচারের আওতায় আনা সম্ভব।’
তিনি বলেন, ‘(আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে) একটা তদন্ত সংস্থা রয়েছে। একটা প্রসিকিউশন টিম আছে। এগুলোকে আমরা রিঅর্গানাইজ করার চেষ্টা করছি। আদালতটা একটু পরে করব।’
আসিফ নজরুল বলেন, ‘বিচারের ক্ষেত্রে আমরা সত্যিকারের স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার জন্য আমাদের টিম জাতিসংঘের সর্বাত্মক তত্ত্বাবধানে কাজ করবে। এখানে জাতিসংঘের যে আবাসিক প্রতিনিধি আছে, সিদ্ধান্ত নিয়েছি তার সঙ্গে মিটিং করব।
‘তার কাছে সহযোগিতা চাইব। এ ছাড়া আরও উচ্চপর্যায়ে থেকে জাতিসংঘের বিভিন্ন কনসার্ন এজেন্সি আছে, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই বিচারের আওতায় বিগত সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিদের সংশ্লিষ্টতা খতিয়ে দেখে উনাদেরও বিচার করা সম্ভব।’