শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের দিনে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় ব্যাপক সহিংসতা দেখা দেয়। থানার ভেতর থেকে পুলিশের গুলিতে সাধারণ মানুষ নিহত হওয়ার পাশাপাশি বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যেরও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।
ক্ষুব্ধ জনতা থানা কার্যালয় ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও গাড়িতে আগুন দিয়েছে। লুটপাটের ঘটনাও ঘটেছে। মৃত্যু যেন মামুলি বিষয়ে পরিণত হয়েছিল সেদিন।
মঙ্গলবারের পর আজ বুধবারও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে এসেছে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যের মরদেহ। নিউজবাংলার হাতে এসেছে অন্তত নয়জন নিহত পুলিশ সদস্যের নাম ও পরিচয়। এছাড়া আরও সাতজন পুলিশ সদস্যের মরদেহ ঢামেক মর্গে রয়েছে, যাদের নাম-পরিচয় এখনও শনাক্ত হয়নি।
ঢামেকে বুধবার রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানা থেকে ছয় পুলিশ সদস্যের মরদেহ আনা হয়। তাদের নাম-পরিচয় পাওয়া গেলেও কে কোন অবস্থানে ছিলেন তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
শনাক্ত হওয়া মরদেহের মধ্যে রয়েছেন- রাজু আহমেদ, বয়স ৩৫, পিতার নাম আলী ওসমান, গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জ; সুজন চন্দ্র দে, বয়স ৪১ বছর, পিতার নাম খোকন চন্দ্র দে। তার গ্রামের বাড়ি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
নিহত আরেক পুলিশ সদস্য মোহাম্মদ রেজাউল করীম, বয়স ৫২ বছর, পিতার নাম নুরুল ইসলাম, গ্রামের বাড়ি বগুড়া।
আরও রয়েছেন- মো. ফিরোজ হোসেন, বয়স ৪৮ বছর, পিতার নাম জলিল শেখ, গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ; সজীব কুমার দাস, বয়স ৩০ বছর, পিতার নাম গোপীনাথ দাস; আবু জাফর, বয়স ৪৩ বছর, পিতার নাম হযরত আলী, গ্রামের বাড়ী টাঙ্গাইল।
যাত্রাবাড়ী থানা থেকে এদের লাশ এসেছে বলে মেডিক্যাল সূত্র নিশ্চিত করেছে। তবে পুলিশের এই সদস্যরা কে কোথায় কোন পদে দায়িত্ব পালন করছিলেন তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এছাড়া উত্তরা পূর্ব থানায় সেদিন ব্যাপক সংঘর্ষের খবর আসে। ঘটনাস্থলেই অন্তত ১৬ জন প্রাণ হারান বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে উঠে এসেছে। বুধবার ঢামেকে সেখান থেকে আরও তিনজন পুলিশ সদস্যের লাশ উদ্ধার করা হয়। এদের মধ্যে একজন এসআই খগেন্দ্র চন্দ্র, বয়স ৪৯ বছর, পিতার নাম গগেন্দ্র চন্দ্র সরকার, গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জ বলে ঢামেক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
এছাড়া নিহত অপর দুই পুলিশ সদস্যের একজন হলেন আবু হাসনাত রানা, বয়স ২১ বছর, পিতার নাম রফিকুল ইসলাম।
জানা গেছে, রানার গ্রামের বাড়ি ঠাঁকুরগাওয়ে এবং তিনি এসএসএফ সদস্য ছিলেন। নিহত অপর পুলিশের নাম শহীদুল আলম। তিনি ট্রাফিক বিভাগে কর্মরত ছিলেন। তার পিতার নাম আছিল উদ্দিন আহমেদ। তিনি রাজধানীর মহাখালীতে থাকতেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
এছাড়া ঢামেক মর্গে আরও ৭ পুলিশ সদস্যের লাশ রয়েছে, যাদের নাম-পরিচয় এখনও শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মরদেহগুলো থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল। এ থেকে ধারণা করা যায় মরদেহগুলো দুই-একদিন পড়ে ছিল।