শেরপুর ও সাতক্ষীরা জেলা কারাগারে বিক্ষুব্ধ লোকজন ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন। এ সময় দুই কারাগারে থাকা ১১ শতাধিক বন্দি পালিয়ে গেছেন। তাদের মধ্যে শেরপুর কারাগারে ছিলেন ৫১৮ জন আর সাতক্ষীরা কারাগারে ছিলেন ৫৮০ জন বন্দি। এ সময় কারাগারে থাকা অস্ত্র ও মূল্যবান সামগ্রী লুটের ঘটনা ঘটে। সোমবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।
শেরপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) আব্দুল্লাহ আল খায়রুম ও কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক হুমায়ুন কবীর খান কারাগারে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও বন্দি পালিয়ে যাওয়ার খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
জেলা প্রশাসন ও কারা সূত্রে জানা গেছে, বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে ৫টার মধ্যে কয়েক হাজার বিক্ষুব্ধ মানুষ পৌরসভার দমদমা কালিগঞ্জ এলাকায় অবস্থিত জেলা কারাগারের সড়কসংলগ্ন ফটক ভেঙে ভেতরে ঢোকেন। এরপর তারা অগ্নিসংযোগ করেন। এ সময় আতঙ্কে কারাগারের নিরাপত্তারক্ষীরা সরে যান। পরে কারাগার থেকে কয়েক শ’ বন্দি পালিয়ে যান।
কারাগারে ভাঙচুরের সময় অস্ত্র ও মূল্যবান সামগ্রী লুটের ঘটনা ঘটে। সংবাদ পেয়ে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে যায়।
জেলা কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক হুমায়ুন কবীর খান বলেন, ‘কারাগারে আটক ৫১৮ বন্দিই পালিয়ে গেছেন। আর কতগুলো অস্ত্র লুট হয়েছে তা হিসাব করে দেখা হচ্ছে।’
এদিকে সাতক্ষীরা জেলা কারাগারের তালা ভেঙে সব বন্দিকে মুক্ত করে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা। এরপর একে একে বেরিয়ে আসতে দেখা যায় সব বন্দিকে। সোমবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
সাতক্ষীরা জেলা কারাগারে নোটিশ বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী কারাগারে ৫৮০ বন্দি ছিলেন। শহরের মিলবাজার জেলা কারাগারের পুরো এলাকা জুড়ে প্রথমে বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ করা হয়। এরপর তালা ভেঙে সবাইকে বের হয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের খবরের পর বিজয়োল্লাসে নামেন সাধারণ মানুষ। পুরো শহর যখন জয়ের আনন্দ-উল্লাসে মেতে ছিল ঠিক তখন জেলা কারাগারে বিক্ষুব্ধ জনতা গিয়ে সবাইকে বের করে আনে। বের হওয়ার সময় কয়েকজন কারাবন্দির কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, ‘আমরা এতো কিছু জানি না। সবাই বের হচ্ছিল তাই আমরাও আসলাম। ভেতরে কেউ নেই।’
জেল সুপার ও জেলারকে বার বার ফোন করা হলেও ফোন না ধরায় তাদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।