বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জনরোষ থেকে বাঁচতে সরকার যা ইচ্ছা তাই করছে: ফখরুল

  • নিজস্ব প্রতিবেদক   
  • ৩১ জুলাই, ২০২৪ ২১:০৪

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের আন্দোলন বলপূর্বক বন্ধ করতে সরকারের কর্তাব্যক্তিরা বেআইনি কাজ করছেন। তারা নির্বিচারে ছাত্রদের গ্রেপ্তার করে অভিভাবক, তরুণ সমাজ এবং জনমনে ভীতি ও ত্রাসের সঞ্চার করছে। তবে এসব করে কোনো লাভ হয়নি। বরং সরকারের কূটকৌশল উপেক্ষা করে জনগণের সমর্থনে শিক্ষার্থীরা নতুন উদ্যমে আন্দোলন এগিয়ে নিচ্ছেন।’

শিক্ষার্থীদের আন্দোলন বলপূর্বক বন্ধ করতে সরকারের কর্তাব্যক্তিরা বেআইনি কাজ করছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, ‘জনরোষ থেকে নিজেদের রক্ষা করতে সরকার সুবিধা ও ইচ্ছামাফিক যা ইচ্ছা তাই করছে।’

বুধবার এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।

তিনি বলেন, ‘এটা দিবালোকের মতো স্পষ্ট যে, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন বলপূর্বক বন্ধ করতেই সরকারের কর্তাব্যক্তিরা বেআইনি কাজ করছেন। কারফিউ চলাকালে এলাকা ভাগ করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ব্লক রেইড পরিচালনা করছে। তারা নির্বিচারে ছাত্রদের গ্রেপ্তার করে অভিভাবক, তরুণ সমাজ এবং জনমনে ভীতি ও ত্রাসের সঞ্চার করছে।

‘তবে এসব করে কোনো লাভ হয়নি। বরং সরকারের কূটকৌশল উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীরা নতুন উদ্যমে আন্দোলন এগিয়ে নিচ্ছেন জনগণের সমর্থনে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গণবিচ্ছিন্ন সরকার আইন, সংবিধান, গণতান্ত্রিক রীতি-নীতি, মানবিকতাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে জনরোষ থেকে নিজেদের রক্ষা করতে সুবিধা ও ইচ্ছামাফিক যা ইচ্ছা তাই করছে।

‘এসব করতে গিয়ে তারা রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে ছিন্নভিন্ন করে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক ও মানবিক চরিত্র গুম করেছে। গণতন্ত্র, ভোটাধিকার, বাকস্বাধীনতা, মতপ্রকাশ, বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনসহ মানুষের সাংবিধানিক অধিকারকে সরকার বর্বরভাবে নস্যাৎ করতে গিয়ে একনায়কতন্ত্র কায়েম করেছে। দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘অনেক অভিভাবক এখনও তার শিক্ষার্থী সন্তানের খোঁজ পাচ্ছেন না। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাসরুর হাসানকে ডিবি ২৫ জুলাই রাতে তুলে নিয়ে গেলেও তার অভিভাবকরা থানা, ডিবি অফিস, বিভিন্ন হাসপাতালে তার কোনো খোঁজ না পেয়ে মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করতে আসেন। আর সেখান থেকে মাসরুরের বাবা ও ভাইকে ডিবি তুলে নিয়ে যায়।

‘এরকম অসংখ্য শিক্ষার্থীর খোঁজ তাদের অভিভাবকরা না পেয়ে উদ্বিগ্ন। তারা অসহায় অবস্থায় আছেন। আটকের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতের সামনে হাজির করার আইন থাকলেও ডিবি হেফাজতে ৪/৫ দিন রেখে বেআইনি কাজ করছে গণবিরোধী সরকার।’

‘আবার আটক না করেই নিরাপত্তার নামে হাসপাতাল থেকে চিকিৎসাধীন ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের ডিবি অফিসে তুলে এনে তাদেরকে জিম্মি করে রেখেছে। আইনি ভিত্তি ছাড়াই হেফাজতের এমন ঘটনা নজিরবিহীন।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, “বুধবার ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, যশোর, বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল নিক্ষেপ, গ্রেপ্তার-নির্যাতন করে বাধা দিয়েছে। আদালত চত্বরসহ বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীরা জনগণের সমর্থনে কর্মসূচি পালন করে গণহত্যার বিচার ও গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি করেছেন। শান্তিপূর্ণ এই কর্মসূচি পালনেও সরকার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে বাধা প্রদান ও শিক্ষার্থীদের আটক করে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে আহত করে।’

ফখরুল বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনে গুলি চালানোর প্রমাণ থাকার পরও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার না করে অপরাধীকে খুঁজে বেড়ানো এবং ধরিয়ে দেয়ার আহ্বান উপহাস মাত্র।

‘সরকারের নির্দেশেই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও ছাত্রলীগের ক্যাডাররা নির্বিচারে গুলি করে শত শত ছাত্র-জনতার প্রাণ কেড়ে নিয়ে গণহত্যা চালিয়েছে, এটা প্রমাণিত সত্য। সরকার জনগণের বিরুদ্ধে যেন যুদ্ধ ঘোষণা করেছে।

‘সরকার নিজেদের রক্ষার জন্য প্রকৃত হত্যাকারীদের না ধরে বিরোধী দলের ওপর দায় চাপানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে। ছাত্র-গণআন্দোলন বন্ধ করতে রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ বন্ধ, সান্ধ্য আইন জারি ও সেনাবাহিনী নামিয়ে গণগ্রেপ্তার করে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, সরকার প্রতিদিনই সাধারণ শিক্ষার্থীসহ বিএনপি ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের গণগ্রেপ্তার করে, মামলা, হামলা করে এবং রিমান্ডে রেখে নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে। প্রতিদিনই মিথ্যা মামলার সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব মিথ্যা মামলায় আসামি কারা, অনেক ক্ষেত্রে মামলার বাদীই জানেন না। মৃত ব্যক্তি, বিদেশি অবস্থান করছেন এমন অনেককেই এসব মামলার আসামি করা হচ্ছে। এসব ঘটনা শুধু নির্দয়, অমানবিকই নয়; সরকারের নির্লজ্জ প্রতিহিংসা ও ফ্যাসিবাদী চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘গণবিচ্ছিন্ন সরকার আজ ইতিহাসের নির্মম ও বর্বর হামলা, গণহত্যা চালিয়ে গণশত্রুতে পরিণত হয়েছে। আন্দোলন দমনে নির্বিচার হত্যা মানবতাবিরোধী অপরাধ ও আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে বিচারযোগ্য অপরাধ। দিন যতই যাচ্ছে সরকারের অস্তিত্ব সংকট ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে।

‘নির্লজ্জ সরকার যতই মিথ্যাচার, সাজানো মামলায় গ্রেপ্তার অব্যাহত রাখুক না কেন, কোনো কিছুতেই ছাত্র-গণআন্দোলনে দিশেহারা জনবিচ্ছিন্ন আওয়ামী সরকার তার পতন ঠেকাতে পারবে না।’

এ বিভাগের আরো খবর