বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘পিয়ন’ জাহাঙ্গীর, স্ত্রী-সন্তান ও প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব জব্দ

  • প্রতিনিধি, বেগমগঞ্জ-সোনাইমুড়ী (নোয়াখালী)   
  • ১৫ জুলাই, ২০২৪ ২৩:০৪

সত্রে জানায়, বিএফআইইউ সব ব্যাংকে এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা পাঠিয়েছে। সে সঙ্গে জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী-সন্তানদের ব্যাংক একাউন্ট খোলার ফরমসহ যাবতীয় তথ্য আগামী পাঁচদিনের মধ্যে পাঠাতে বলা হয়েছে। এর আগে গত বছরের ৬ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জাহাঙ্গীর আলম সম্পর্কে সবাইকে সতর্ক করে বলা হয়েছিল- প্রধানমন্ত্রী বা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে জাহাঙ্গীর আলমের কোনো সম্পর্ক নেই।

নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার নাহার খিল গ্রামের মৃত রহমত উল্যাহর ছেলে মো. জাহাঙ্গীর আলম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত সহকারী পরিচয়ে গত এক দশক ধরে নোয়াখালী জেলাসহ নানা জায়গায় দাপিয়ে বেড়িয়েছেন তিনি। ব্যক্তিগত সফরে গাড়িবহর ও প্রশাসনিক প্রটোকল নিয়ে চলাচল করতেন রাজকীয় স্টাইলে।

‘করিৎকর্মা’ জাহাঙ্গীর এবার ভিন্নভাবে আলোচনায় এসেছেন। রোববার জাহাঙ্গীর ছাড়াও তার স্ত্রী কামরুন নাহার ও তাদের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

সূত্রে জানা যায়, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) সব ব্যাংকে এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা পাঠিয়েছে। সে সঙ্গে জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী-সন্তানদের ব্যাংক একাউন্ট খোলার ফরমসহ যাবতীয় তথ্য আগামী পাঁচদিনের মধ্যে পাঠাতে বলা হয়েছে।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠানে উল্লিখিত ব্যক্তিবর্গ ও তাদের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের নামে কোনো হিসাব থাকলে সেসব হিসাবের লেনদেন মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২–এর ২৩ (১) (গ) ধারার আওতায় ৩০ দিনের জন্য স্থগিত রাখার নির্দেশনা দেয়া হলো।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এর আগে গত বছরের ৬ ডিসেম্বর জাহাঙ্গীর আলম সম্পর্কে সবাইকে সতর্ক করা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইংয়ের সেই সতর্ক বার্তায় বলা হয়েছিল, ‘প্রধানমন্ত্রী বা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে জাহাঙ্গীর আলমের কোনো সম্পর্ক নেই। তার ব্যাপারে প্রয়োজনে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহায়তা নিতেও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পক্ষ থেকে সবাইকে অনুরোধ করা হয়েছে।’

তথ্য বলছে, নব্বই দশকের দিকে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাড়ি সুধা সদনে আসা দলীয় নেতা-কর্মীদের পানি খাওয়ানোর কাজ করতেন জাহাঙ্গীর। আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে শেখ হাসিনার খাদ্য বহনকারী হিসেবে ‘টিফিন ক্যারিয়ার’ তিনি নিজ হাতে রাখতেন। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে গ্রেনেড হামলার সময় দুঃসাহসিক ভূমিকা রাখায় তিনি আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের মাঝে পরিচিতি লাভ করেন।

আওয়ামী লীগ নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় আসার পর গণভবনে যাতায়াতের সুযোগ পান জাহাঙ্গীর। ঢাকার ইপিজেডে ২০০৯ সালে ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতেন তিনি। দলীয় নেতা-কর্মীরা ঝুট ব্যবসায় হাত দিলে জাহাঙ্গীর প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী পরিচয়ে ফোন করে সরাসরি তাদের প্রতি নিষেধাজ্ঞা জারি করতেন। এই ব্যবসার মাধ্যমে বিপুল অর্থ আয় করেন তিনি। এরপর আর তাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। আওয়ামী লীগের দলীয় এমপি এবং মন্ত্রীদের কাছে নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী পরিচয় দিয়ে তদবির করতেন।

গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজ এলাকা নোয়াখালী-১ থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়ে পাননি জাহাঙ্গীর। পরে নোয়াখালী-১ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য এইচএম ইব্রাহীমের বিপক্ষে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রচার চালান তিনি। শেষে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন।

প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক চীন সফর নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি নিজের বাসার সাবেক এক কর্মীর অর্থসম্পদের বিষয়টি সামনে আনেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার বাসায় কাজ করেছে, পিয়ন ছিল সে। এখন ৪০০ কোটি টাকার মালিক। হেলিকপ্টার ছাড়া চলে না। বাস্তব কথা। কী করে বানাল এত টাকা? জানতে পেরেছি, পরে ব্যবস্থা নিয়েছি।’

জানা যায়, জাহাঙ্গীর আলম প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে টানা দুই মেয়াদের পাশাপাশি গত মেয়াদেও কিছুদিন দায়িত্ব পালন করেছেন। পরবর্তীকালে বিভিন্ন অভিযোগ ওঠায় তাকে ওই দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু তারপরও প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী পরিচয় দিয়ে তিনি বিভিন্ন অনৈতিক কাজ করে গেছেন।

এ বিভাগের আরো খবর