বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জীবনযাত্রায় ব্যাঘাত ঘটানো আন্দোলন রুখে দেবে ছাত্রলীগ: সভাপতি

  • প্রতিনিধি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়   
  • ১১ জুলাই, ২০২৪ ১৫:১৩

সাদ্দাম বলেন, ‘আন্দোলনের নামে যারা জনসাধারণের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ব্যাঘাত ঘটিয়ে, দেশরত্ন শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ অভিমুখে অগ্রযাত্রা ব্যাহত করার প্রচেষ্টা করবে তাদের রুখে দেয়া হবে।’

সড়ক অবরোধ, জীবনযাত্রায় বাধা সৃষ্টি ও ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের কর্মসূচি থেকে শিক্ষার্থীদের অবিলম্বে ফেরত আসার তাগিদ দিয়েছে ছাত্রলীগ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে বৃহস্পতিবার দুপুরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সাদ্দাম হোসেন এ তাগিদ দেন।

তিনি বলেন, ‘আন্দোলনের নামে যারা জনসাধারণের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ব্যাঘাত ঘটিয়ে, দেশরত্ন শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ অভিমুখে অগ্রযাত্রা ব্যাহত করার প্রচেষ্টা করবে তাদের রুখে দেয়া হবে।’

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অ্যাকাডেমিক পরিবেশ অব্যাহত রাখা, জনদুর্ভোগ তৈরি না করে ক্লাস-পরীক্ষায় ফিরে আসা এবং কোটা ইস্যুর যৌক্তিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ইতিবাচক সমাধান দাবিতে ছাত্রলীগ এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন। এটি সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান।

লিখিত বক্তব্যে সাদ্দাম বলেন, ‘আদালতের চূড়ান্ত রায় পর্যন্ত অপেক্ষা না করে আদালতে বিচারিক প্রক্রিয়ায় পক্ষভুক্ত হয়ে নিজেদের বক্তব্য তুলে না ধরে বর্তমানে তথাকথিত আন্দোলনের নামে প্রকৃতপক্ষে সাধারণ জনগণের জীবনযাত্রা ব্যাহত করার প্রচেষ্টা চলছে, যা কোনোমতেই যৌক্তিক কোনো পদক্ষেপ নয়।’

ছাত্রলীগ বলছে, এমন অবস্থায় কোটা বাতিল বা সংস্কারের জন্য দেশব্যাপী যে আন্দোলন পরিচালনা হচ্ছে সে সম্পর্কে পুনঃভাবনার প্রয়োজন রয়েছে। কোটা সংক্রান্ত বিষয়টির সংবেদনশীলতা সম্পর্কে সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল হবার পরও এ কথা বিবেচনাধীন যে আন্দোলনকারীরা সমাজ ও দেশ হতে বিচ্ছিন্ন কেউ নয়। নিজেদের দাবি ও সুনিশ্চিত ভবিষ্যৎ চিন্তার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের বিষয়টিও তারা কোনভাবেই এড়িয়ে যেতে পারে না।

সাদ্দাম বলেন, ‘এই মুহূর্তে বাংলাদেশে তো কোনো কোটা নেই। আজকে যারা চাকরিতে আগের নিয়ম বহালের জন্য আন্দোলন করছে, তারা কি চাকরিজীবী নাকি আন্দোলনজীবী? আন্দোলন করে যারা জীবিকা নির্বাহ করতে চায়, ছাত্রসমাজের পক্ষ থেকে আমরা ছাত্রলীগ তাদের বিরুদ্ধে প্রস্তুত রয়েছি।’

আন্দোলনকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, “কোটা ব্যবস্থায় একটি যৌক্তিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাধান ও সংস্কার আনয়ন করা এই মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি পদক্ষেপ। এ পদক্ষেপ বাস্তবায়নে কোনো হঠকারিতা নয়, তাড়াহুড়ো নয়, কোনো অবরোধ বা জিম্মি পরিস্থিতি তৈরি করে ‘স্পট ডিসিশন’ গ্রহণ করা নয়।”

তিনি বলেন, ‘কোটা ব্যবস্থার সময়োপযোগী সংস্কার আনয়নের জন্য একটি সমন্বিত রাষ্ট্রীয় উদ্যোগের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রকাঠামোর প্রেক্ষিতে একটি যৌক্তিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক, স্থায়ী সমাধানের উদ্যোগ প্রয়োজন।

‘এমন উদ্যোগে এ দেশের ছাত্রসমাজ, তরুণ প্রজন্ম তাদের মেধা-মনন দিয়ে একটি উপযুক্ত ব্যবস্থা প্রণয়নে সক্রিয়ভাবে ভূমিকা রাখতে পারে, কিন্তু তেমন কোনো সমন্বিত উদ্যোগের আহ্বান না জানিয়ে, এমনকি আদালতের চূড়ান্ত রায় পর্যন্ত অপেক্ষা না করেই কেন এই অনিঃশেষ আন্দোলন?’

সাদ্দাম বলেন, ‘হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সরকার আপিল করেছে, বর্তমানে যা বিচারাধীন বিষয়। একটি বিষয় যখন আদালতের গণ্ডিতে প্রবেশ করে, তখন তার সমাধান আইনের কাঠামোতেই হতে হয় এবং এর জন্য প্রয়োজনীয় সময় অপেক্ষা করতে হয়। এ কথা কি তথাকথিত আন্দোলনকারীরা জানে না?’

তিনি বলেন, ‘কোটা বতিলের নির্বাহী আদেশ যেহেতু বিচার বিভাগ থেকে বাতিল করা হয়েছে, সেহেতু আদালতে এটির কার্যক্রম শেষ হবার পরই কেবল আইন ও নির্বাহী বিভাগ নতুন করে নিজেদের সিদ্ধান্ত নিতে পারে এবং ততদিন অপেক্ষা করতে হবে। রাষ্ট্র কাঠামোর এই বেসিক বিষয় না বুঝে জনগণকে জিম্মি করে তথাকথিত আন্দোলন চালানো হলে আন্দোলনকারীদের এটিও মনে রাখা দরকার, এ দেশের আইন বিভাগ সার্বভৌম, বিচার বিভাগ স্বাধীন এবং নির্বাহী বিভাগ জনগণের ভোটে প্রতিষ্ঠিত। তাই অহেতুক কোনো উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আন্দোলনের কাছে কেউ নতি শিকার করবে না।’

‘কোটা না মেধা’ স্লোগানটি উদ্দেশ্যমূলক প্রচারণা বলেও মনে করে ছাত্রলীগ।

সংগঠনটির ভাষ্য, যেখানে সরকারি চাকরির প্রতিটি পরীক্ষার্থীতেই একজন পরীক্ষার্থীকে প্রিলিমিনারি, লিখিত ও ভাইভা প্রতিটি ধাপ পার হয়ে আসতে হয়, সেখানে ‘কোটা না মেধা’ স্লোগানটি ভিত্তিহীন, কল্পনাপ্রসূত ও উদ্দেশ্যমূলক প্রচারণা। এখানে মেধার বিপরীতে মেধার প্রতিযোগিতায় সমাজের অনগ্রসর অংশকে কিছুটা এগিয়ে দেয়া হয়, যা পুরোপুরি ন্যায় ও সংবিধানসম্মত।

আন্দোলনের নামে ‘অনিঃশেষ অবরোধ কার্যক্রম’ পরিচালনা কোনোভাবেই দাবির সুষ্ঠু সমাধান নিয়ে আসতে পারে না বলে মনে করেন ছাত্রলীগ সভাপতি।

তিনি বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে সমস্যার গভীরে গিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ তাৎক্ষণিক সমাধান নয়, বরং বিচার বিভাগীয় পর্যবেক্ষণের আলোকে সাংবিধানিক অনুশাসন অক্ষুণ্ন রেখে, অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর প্রতি দায়বদ্ধতাকে বিবেচনায় নিয়ে, জেন্ডার সমতা নিশ্চিতকল্পে, প্রান্তিক ও নিম্নবর্গীয় মানুষের প্রতি রাষ্ট্রীয় দায়িত্বের আলোকে যৌক্তিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক, স্থায়ী, যুগোপযোগী, ইতিবাচক সমাধান নিয়ে আসার জন্য কাজ করছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।

আদালতের কাছে প্রত্যাশার বিষয়ে সাদ্দাম বলেন, ‘ছাত্রলীগের প্রত্যাশা, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার প্রতীক উচ্চ আদালত এ দেশের মহান সংবিধানে উল্লেখিত অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মসংস্থান এবং সুযোগের সমতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিদ্যমান বাস্তবতায় কোটা নিয়ে এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে যাতে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষ সন্তুষ্ট হবে, দেশের প্রতিটি নাগরিককে কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা দান করবে।’

এ বিভাগের আরো খবর