ছাগলকাণ্ডে আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক সদস্য মতিউর রহমান, তার প্রথম স্ত্রী নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা চেয়ারম্যান লায়লা কানিজ লাকী ও ছেলে আহম্মেদ তৌফিকুর রহমান অর্ণবের দেশত্যাগে সোমবার নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আদালত।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল নিউজবাংলাকে এ তথ্যটি নিশ্চিত করেন।
এনবিআর সদস্য মতিউর রহমানকে রোববার কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট আপিলাত ট্রাইব্যুনাল, ঢাকা থেকে সরিয়ে দেয়া হয়।
ওই দিন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের শুল্ক-১ শাখার উপসচিব মকিমা বেগম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, বিসিএস (শুল্ক ও আবগারি) ক্যাডারের কর্মকর্তা কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট আপিলাত ট্রাইব্যুনাল, ঢাকার প্রেসিডেন্ট মতিউর রহমানকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে সংযুক্ত করা হয়েছে।
এ ঘটনার এক দিন পর মতিউর, তার স্ত্রী ও সন্তানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিল আদালত।
নিষেধাজ্ঞা পাওয়া মতিউরের প্রথম স্ত্রী লাকীর সংসারে তৌফিকুর রহমান অর্ণব ও ফারজানা রহমান ইপসিতা নামে দুই সন্তান রয়েছে। অন্যদিকে ছাগলকাণ্ডে ভাইরাল তরুণ মুশফিকুর রহমান ইফাত তার দ্বিতীয় স্ত্রী ফেনীর সোনাগাজীর শাম্মী আখতারের সন্তান।
ছেলে মুশফিকুর রহমান ইফাতের ১২ লাখ টাকায় ছাগল কেনার জেরে দেশজুড়ে আলোচিত হয় এনবিআর সদস্য মতিউর রহমানের নাম।
এ কর্মকর্তার বিপুল সম্পদ ও ছেলের বিলাসী জীবনযাপন নিয়ে দৈনিক সমকাল ২১ জুন অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ছাগলকাণ্ডে আলোচিত তরুণ মুশফিকুর রহমান ইফাত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য মতিউর রহমানেরই ছেলে। যদিও গত বুধবার এই পরিচয় পুরোপুরি অস্বীকার করেন তিনি। আড়াল করেন ছেলের প্রকৃত পরিচয়।
‘মতিউরের দাবি ছিল, ইফাত তার ছেলে নন, এই নামে কাউকে চেনেনও না, তবে সমকালের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, মতিউরের দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর ছেলে ইফাত। বাবার অঢেল সম্পদে বিলাসী জীবনযাপন করেন এই তরুণ।’
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ‘১৯ বছরের ইফাত মোবাইল ফোনে যে সিম কার্ড ব্যবহার করছেন, সেটি তার বাবার জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে তোলা। ইফাতের স্বজনও বলছেন, মতিউর রহমান তার বাবা। মতিউর রহমান সম্পর্কে ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীর মামাতো বোন জামাই।’
নিজাম হাজারীকে উদ্ধৃত করে সমকালের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ইফাত এনবিআর কর্মকর্তা মতিউর রহমানের ছেলে, এটাই সত্য। কেন নিজের সন্তানকে অস্বীকার করছেন, সেটা তিনিই ভালো বলতে পারবেন। আমার মামাতো বোন শাম্মী আখতার শিবলীর সঙ্গে মতিউরের বৈবাহিক বিচ্ছেদও হয়নি।’