বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নতুন পানিতে ডিম ছাড়তে এসে বিপাকে যমুনার মা বোয়ালরা

  • প্রতিনিধি, সিরাজগঞ্জ   
  • ২৩ জুন, ২০২৪ ১৮:৩৬

মাছ ধরে শিকারীরা খুশি হলেও সিরাজগঞ্জ জেলা মৎস্য অধিদপ্তর বলছে, ডিমওয়ালা এসব মাছ ধরায় মাছের বংশবৃদ্ধি হ্রাসের আশঙ্কা রয়েছে।

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিরাজগঞ্জের যমুনাসহ অভ্যন্তরীণ ফুলজোড়, করতোয়া, বড়াল ও হুড়া সাগড় নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এতে যমুনা নদী ও চলনবিলের নদনদী ও খালবিলে এসেছে ঝাঁকে ঝাঁকে প্রচুর পরিমাণে ছোটবড় বোয়াল মাছ। উৎসবের আমেজে জাল, জুইতা ও টেঁটা দিয়ে সেসব মাছ ধরছেন সৌখিন ও পেশাজীবী মাছ শিকারীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, যমুনা নদীতীরবর্তী সিরাজগঞ্জ সদর, কাজিপুর, বেলকুচি, এনায়েতপুর, শাহজাদপুর, চৌহালী উপজেলাসহ চলনবিল এলাকার বিভিন্ন এলাকায় রোববার সকালে ঝাঁকে ঝাঁকে মাছ ধরা পড়েছে।

মাছ ধরে শিকারীরা খুশি হলেও সিরাজগঞ্জ জেলা মৎস্য অধিদপ্তর বলছে, ডিমওয়ালা এসব মাছ ধরায় মাছের বংশবৃদ্ধি হ্রাসের আশঙ্কা রয়েছে।

মাছ শিকারীরা জানান, গত কয়েক দিন ধরে চৌহালী উপজেলার যমুনা নদীর কাঁঠালিয়া হিজুলিয়ায় এলাকায় ঝাঁকে ঝাঁকে ছোটবড় বোয়াল মাছ ধরা পড়ছে। কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে বিভিন্ন ওজনের বোয়াল মাছ ধরা পড়ছে। এ মাছগুলোর মধ্যে অধিকাংশ মাছ ৫ থেকে ৭ কেজি ওজনের।

চৌহালী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘গতরাতে আমরা ১০ জন শখের বশে যমুনা নদীর খাষপুকুরিয়া এলাকায় বোয়াল মাছ ধরতে গিয়েছিলাম। মাছ ধরার সরঞ্জামাদি জাল ও ছোরা নদীতে পাতার কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ৩ থেকে ৬ কেজি ওজনের ১০টি বোয়াল মাছ ধরা পড়ে। মাছগুলো সবাই ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছি।’

তাড়াশ উপজেলার মাগুড়া বিনোদ ইউনিয়নের হামকুড়িয়া গ্রামের স্কুলশিক্ষক জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘চলনবিলে বন্যার নতুন পানি প্রবেশ করায় নদনদী ও খালবিলে পানিতে ভরে যাচ্ছে। এই পানিতে ডিম ছাড়ার জন্য মা বোয়াল মাছ কম পানিতে এসে লাফালাফি করছে। সেই সুযোগে পেশাদার ও সৌখিন মাছ শিকারীরা দল বেঁধে প্রতিদিন এসব জায়গা থেকে ছোটবড় বিভিন্ন ওজনের বোয়াল মাছ ধরছেন।’

তিনি জানান, শনিবার সকালে শ্যামপুর গ্রামের আশিকুর রহমান নামের এক মাছ শিকারী ৯ কেজি ওজনের একটি বোয়াল মাছ ধরেন। মাছটি ৮০০ টাকা কেজিতে বিক্রি করেছেন তিনি।

একই উপজেলার হামকুড়িয়া পশ্চিমপাড়ার সৌখিন মাছ শিকারী জুলমাত হোসেন বলেন, ‘রোববার সকালে তাড়াশ উপজেলার ৮ নম্বর ব্রিজ এলাকার একটি খাল থেকে ১০ কেজি ওজনের তিনটি ডিমওয়ালা বোয়াল মাছ ধরি। এর মধ্যে দুটি মাছ প্রতি কেজি ৮০০ টাকায় বিক্রি করে অন্যটা বাড়িতে নিয়ে যাই।’

ফুলজোড় নদীতে মাছ ধরতে আসা শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘পাঁচজনে মিলে শখের বশে নদীতে মাছ ধরতে এসেছি। জাল, ফছকা (মাছ ধরার সরঞ্জাম) নিয়ে ওঁৎ পেতে থাকি। কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ৮টি বোয়াল ধরা পড়েছে।

‘নতুন পানির মাছগুলো অনেক স্বাদের হবে। তাই মাছগুলো বাড়িতে নিয়ে পরিবারের সঙ্গে রান্না করে খাব।’

চৌহালী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তানভীর হাসান মজুমদার বলেন, ‘মৎস্য অধিদপ্তর থেকে বিভিন্ন নদ-নদীর মাছ সংরক্ষণের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করায় এখন পর্যাপ্ত মাছ ধরা পড়ছে।’

তবে শিকারীদের ডিমওয়ালা মা মাছ না ধরার জন্য পরামর্শ দেন এই কর্মকর্তা।

তাড়াশ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মশগুল আজাদ বলেন, ‘মা মাছ ধরলে মাছের বংশবৃদ্ধি হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা থাকে। মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিতে ডিমওয়ালা মা মাছ ধরায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। মা মাছ নিধনের বিরুদ্ধে শিগগিরই চলনবিল এলাকায় মৎস্য শিকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করা হবে।’

এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শাহিনুর রহমান বলেন, ‘যমুনাসহ বিভিন্ন নদনদীর মাছ সংরক্ষণের জন্য নানা ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এ কারণেই এখন যমুনা নদীতে বোয়ালসহ বিভিন্ন ধরনের বড় বড় মাছ ধরা পড়বে।’

তবে ডিমওয়ালা মাছ না ধরার জন্য সৌখিন ও পেশাজীবী মাছ শিকারীদের পরামর্শ দেন তিনি।

এ বিভাগের আরো খবর