বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ছুটি শেষে ঢাকায় ফিরছে মানুষ, সদরঘাটে যাত্রীর চাপ

  •    
  • ২২ জুন, ২০২৪ ১৮:৫২

আরও দুই-একদিন যাত্রীর চাপ থাকবে বলে জানিয়েছেন লঞ্চ-সংশ্লিষ্টরা।

প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ আনন্দ কাটিয়ে ঈদুল আজহা উদযাপন শেষে ঢাকায় ফিরছে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। রোববার থেকে অনেকেরই অফিস খুলবে। এ কারণে রাজধানীর প্রধান নদীবন্দর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে বেড়েছে ঢাকামুখী যাত্রীর চাপ। যাত্রীর ভিড়ে ধীরে ধীরে চিরচেনা রাজধানী ফিরে পাচ্ছে তার পুরনো রুপ।

সপ্তাহ শুরুর প্রথম দিন সকাল থেকেই সদরঘাটে মানুষের কর্মব্যস্ততা লক্ষ করা গিয়েছে। হকারদের হাকডাকে মুখর ছিল পুরো সদরঘাট এলাকা। বরিশাল, ভোলা, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, বরগুনা, চরফ্যাশন, হুলারহাট, ভান্ডারিয়া, লালমোহনসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে সদরঘাটে ফিরছে- এমন লঞ্চগুলোতে দেখা গিয়েছে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়।

শনিবার বিকেল পর্যন্ত সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে এমন চিত্র ফুটে ওঠে।

গন্তব্যস্থল থেকে লঞ্চগুলো যাত্রীতে পরিপূর্ণ হয়েই ঘাটে ভিড়তে দেখা গেছে। আবার যাওয়ার সময়ও কোন লঞ্চের কেবিন ও ডেক ফাঁকা নেই।

এদিকে চাঁদপুরের লঞ্চগুলো নির্ধারিত সময় পরপর ঘাট ছেড়ে যাচ্ছে। তবে ইলিশা, বগাগামী যাত্রী তুলনামূলক কম। অন্যদিকে, ভোলা থেকে আসা লঞ্চগুলো কানায় কানায় পূর্ণ, কিন্তু ছেড়ে যাওয়া লঞ্চে পাওয়া যাত্রী পাচ্ছে না তারা। এ ছাড়াও বেতুয়া, চরফ্যাশন থেকে বিশেষ ট্রিপ দেবে কর্ণফুলী-৩-সহ বেশকিছু লঞ্চ। আরও দুই-একদিন যাত্রীর চাপ থাকবে বলে জানিয়েছেন লঞ্চ-সংশ্লিষ্টরা।

পটুয়াখালী থেকে আসা হাসিবুল ইসলাম পিয়াস বলেন, ‘ছুটি শেষ, ঢাকায় ফিরতেই হবে। লঞ্চে বাড়তি ভাড়া নেয়নি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় যাত্রাপথেও কোনো ঝামেলা হয়নি। আমরা সুন্দরভাবেই ঢাকা এসে পৌঁছেছি।’

বরিশাল থেকে ঢাকায় আসা মোবারক হোসেন বলেন, ‘সুন্দরভাবেই ঢাকা এসেছি। যদিও একটু ভিড় ছিল, কিন্ত তেমন সমস্যা হয়নি। ছুটি শেষ, সবারই তো গন্তব্য ঢাকা। সবাইকেই ঢাকা ফিরতে হবে। ঈদের সময় ভিড় তো হবেই।’

সুরভী ৭ লঞ্চের স্টাফ সবুজ আহমেদ বলেন, ‘কয়েকদিন থেকে যাত্রীর চাপ রয়েছে, আরও কয়েকদিন এমন চাপ থাকবে। আমাদের লঞ্চে কোনোরকম বেশি ভাড়া নেয়া হচ্ছে না। আগের ভাড়াতেই যাত্রীরা ঢাকায় ফিরতে পারছেন।’

রাজারহাট-সি লঞ্চের স্টাফ তাসনিম আলম জানান, বর্তমানে নদীতে স্রোত থাকার কারণে লঞ্চগুলো সময়মতো ঢাকা যেতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। এদিন দৌলতখান ঘাট থেকে সকাল ৮টায় ছেড়ে ইলিশা এসেছে ৯টা ৪৩ মিনিটে। এর প্রায় সাড়ে সাত ঘণ্টা পর ঢাকায় এসে পৌঁছেছে।

পারাবত-১২ লঞ্চের সুপারভাইজার মো. বাবলু মিয়া বলেন, ‘যারা লঞ্চের যাত্রী, তারা লঞ্চেই যায়। তবে ধনী ব্যক্তি যারা আগে বিলাসবহুল কেবিনে যেতো, পদ্মা সেতু হওয়ায় তারা এখন ব্যক্তিগত গাড়িতে যাচ্ছে। এতে করে কেবিনের যাত্রীর সংখ্যা কমেছে। যারা পরিবারসহ যাচ্ছে, তারা লঞ্চেই আসছে।’

লঞ্চ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, ‘যাত্রী নিয়ে আশার আলো নেই বললেই চলে। লঞ্চগুলোতে যাত্রীবোঝাই দেখা গেলেও সেগুলো আসলে ধারণক্ষমতার চেয়ে অনেক কম। আমরা যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে শতভাগ সচেতন। ঈদের আগে যাত্রীর চাপ ছিল। তবে বৃষ্টির কারণে অনেকেই নৌপথ ছেড়ে সেতু দিয়ে ঢাকা এসেছেন।’

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল (যাত্রী পরিবহন) সংস্থার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. আবুল কালাম খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পদ্মা সেতু হওয়াতে মানুষ এখন সেটি দেখার জন্যেও বাসে করে যাচ্ছে। গুলিস্তান থেকে সদরঘাট আসা-যাওয়ার রাস্তায় যে জ্যাম আর বেহাল দশা, এসব কারণে মানুষ এখন এদিকে কম আসতে চায়। সেজন্য অনেকে মাইক্রোবাস রিজার্ভ করে বরিশাল যাচ্ছে। এসব কারণে যাত্রী কম হচ্ছে।’

সার্বিক বিষয়ে সদরঘাটের দায়িত্বে থাকা বিআইডব্লিউটিএর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম পরিচালক মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘ঈদযাত্রা যেন সুন্দর হয়, সেজন্য আমরা সর্বদা প্রস্তুত রয়েছি। কোনো ধরনের ঝামেলা লক্ষ করা যায়নি, ভাড়া বেশি নেয়ার খবরও পাইনি। যাত্রীদের যেন ভোগান্তি না হয়, আমরা সেই দিকটি দেখছি।’

টার্মিনাল এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সদরঘাট নৌ-থানার ওসি মো. আবুল কালাম বলেন, ‘রোববার অনেকের অফিস খোলা হবে। এজন্য শনিবার যাত্রীর চাপ অনেকটাই বেশি। আমাদের নৌ-পুলিশের সদস্যরা ঘাটে লঞ্চ ভেড়ানোর পর সর্বক্ষণ সেখানে টহল দিচ্ছেন।’

পাশাপাশি নৌ-পথেও নজরদারি অব্যাহত রয়েছে। যাত্রীর চাপ বাড়লে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হবে বলে জানান নৌ-পুলিশের এই কর্মকর্তা।

এ বিভাগের আরো খবর