ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার চাঞ্চল্যকর ফুয়াত কাজী হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের সাড়ে পাঁচ মাস পর মামলার প্রধান আসামি মিজানুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আর তার জবানবন্দিতেই বেরিয়ে এসেছে হত্যার রহস্য।
প্রধান আসামির স্বীকারোক্তির উল্লেখ করে পুলিশ জানিয়েছে, চার লাখ টাকা চুক্তিতে হত্যা মিশনে অংশ নেয় মিজানুর রহমান। তার সঙ্গে আরেকজন ছিল। আর তাদেরকে ভাড়া করেন স্থানীয় ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম হাওলাদার।
স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জিয়াউল আহসান ফুয়াদ কাজী। ফাইল ছবি
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার (২০ জুন) রাতে বিশেষ কৌশল অবলম্বন করে নলছিটি উপজেলার কুসঙ্গল গ্রাম থেকে ফুয়াত কাজী হত্যা মামলার প্রধান আসামি মিজানুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মিজানকে গ্রেপ্তারের তথ্য গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন ঝালকাঠির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. মুহিতুল ইসলাম।
চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি জিয়াউল আহসান ফুয়াদ কাজীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনার সাড়ে ৫ মাস পর শুক্রবার এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে হত্যায় ব্যবহৃত দেশীয় ধারালো অস্ত্র।
গ্রেপ্তারকৃত আসামি মিজানের স্বীকারোক্তির উল্লেখ গমমাধ্যমকে পুলিশ জানায়, চার লাখ টাকা চুক্তিতে হত্যা মিশনে অংশ নেয় মিজানুর রহমান। হত্যার এই মিশনে তারা দুজন অংশ নেয়। মিজানের সঙ্গী ফুয়াদ কাজীর কোমর ঝাপটে ধরে এবং সে অনবরত কোপাতে থাকে। এ সময় মিজানের সঙ্গীর হাতেও রক্তাক্ত জখম হয়। পরে সে বরিশালের একটি বেসরকারি হাসাপাতালে চিকিৎসা নেয়।
মিজান জানিয়েছে, স্থানীয় ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম হাওলাদার ফুয়াদকে হত্যা করার জন্য তাদেরকে ভাড়া করেছিলেন।
চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি রাতে জাতীয় নির্বাচনি কাজ শেষে বাড়িতে ফিরছিলেন সিদ্ধকাঠি ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি জিয়াউল আহসান ফুয়াদ কাজী। পথে চৌদ্দবুড়িয়া মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয় তাকে।
জানা যায়, সিদ্ধকাঠি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জেসমিন কাজীর সঙ্গে জেলা পরিষদ সদস্য হানিফ মোল্লার বিরোধ চলে আসছিল। ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চেয়ারম্যান জেসমিন কাজীর সঙ্গে ফুয়াদের দূরত্ব তৈরি হয়। অপরদিকে জেলা পরিষদ সদস্য হানিফ মোল্লার সঙ্গে ফুয়াদের সখ্য গড়ে ওঠে।
সংসদ নির্বাচনে এমপি আমির হোসেন আমু বিজয়ী হওয়ার পর বিজয় মিছিল বের করে ইউনিয়নবাসী। ওই মিছিলে ফুয়াদ অংশ নেন। সেদিন দলীয় অফিসে সবাই মিষ্টি খেয়ে বাড়ি চলে যান। আর বাড়ি যাওয়ার পথে চৌদ্দবুড়িয়া গ্রামে ফুয়াদকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।’
নলছিটি থানার ওসি মুরাদ আলী বলেন, ‘ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সিদ্ধকাঠি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জেসমীন আক্তারকে ২৯ মার্চ রাত ১২টার দিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া ওই ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার রফিকুল ইসলাম হাওলাদারসহ তিনজনকে আগেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
ওসি আরও বলেন, ‘আগে গ্রেপ্তারকৃতদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার রাতে কুশঙ্গল ইউনিয়নের বাসিন্দা আইয়ুব আলী হাওলাদারের ছেলে মিজানুর রহমানকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই।’