ঈদ কিংবা অন্য কোনো লম্বা ছুটি পেলেই প্রকৃতিপ্রেমী পর্যটকরা ভিড় জমাতে শুরু করেন চায়ের রাজধানী খ্যাত মৌলভীবাজারে, তবে পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে এবার শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জে পর্যটকদের আগাম বুকিং কম বলে জানাচ্ছেন হোটেল-রিসোর্ট মালিকরা।
শহর ও শহরের বাহিরের হোটেল-রিসোর্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শনিবার বিকেল পর্যন্ত শহরের হোটেলগুলোতে প্রায় ২০ শতাংশ ও শহরের বাহিরের রিসোর্টগুলোতে প্রায় ৪০ শতাংশ রুম আগাম বুকিং করেছেন পর্যটকরা।
চা–বাগান ছাড়াও বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিটিআরআই), টি মিউজিয়াম, বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশন, হাইল হাওর, মৎস্য অভয়াশ্রম বাইক্কা বিল, সাত রঙের চা, চা-কন্যা ভাস্কর্য, বধ্যভূমি-৭১–সহ নানা স্থান ঘুরে দেখেন দেশি-বিদেশি পর্যটকরা।
শহর থেকে একটু দূরে লাল পাহাড়, শঙ্কর টিলা, গরম টিলা, ভাড়াউড়া লেক, হরিণছড়া গলফ মাঠ, নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী পল্লি, সুদৃশ্য জান্নাতুল ফেরদৌস মসজিদ ঘুরে দেখেন অনেকেই।
এদিকে কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, মাধবপুর লেক, পদ্মা লেক, পাত্রখলা লেক, ক্যামেলিয়া লেক, বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান, মণিপুরী পল্লি, খাসিয়া পল্লি পর্যটকদের আকর্ষণ করে। প্রকৃতির টানে তাই পর্যটকরা ছুটে আসেন চায়ের রাজ্যে।
শ্রীমঙ্গল শহরের গ্রীনলিফ গেস্টহাউজের মালিক এসকে দাশ সুমন বলেন, ‘দিন দিন পর্যটকরা দেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। ট্যুর কোম্পানি গুলো ঈদ কিংবা অন্যান্য ছুটির সময় ভারত, থাইল্যান্ডসহ অন্যান্য দেশে যাওয়ার অফার দেন। এখন বেশির ভাগ পর্যটকই বিদেশমুখী হয়ে যাচ্ছেন। এবার ঈদুল আযহা উপলক্ষে আমরা হোটেল রিসোর্ট মালিকরা খুব কম আগাম বুকিং পাচ্ছি। মূলত যারা শ্রীমঙ্গলে রাত্রী যাপন করেন ৮০ ভাগই আগাম বুকিং দিয়ে আসেন।
তিনি বলেন, ‘সিলেটে বৃষ্টির কারণে বন্যা হচ্ছে। অনেক পর্যটক ধারণা করছেন শ্রীমঙ্গলেও বন্যা, কিন্তু শ্রীমঙ্গলে কখনই বন্যা হয় না। অনেকে সিলেটের সাথে সেটা গুলিয়ে ফেলছেন। এখন শ্রীমঙ্গলে প্রকৃতি অপরূপ সাজে সজ্জিত। সবুজে ভরে আছে সবকিছু।’
শ্রীমঙ্গল পর্যটন সেবা সংস্থার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও গ্র্যান্ড সেলিম রিসোর্টের মালিক সেলিম আহমেদ বলেন, ‘সাধারণত ১ সপ্তাহ আগ থেকেই হোটেল রিসোর্টে আগাম বুকিং হয়। এবার আগাম বুকিং অনেক কম। তবে আমরা আশা করছি ঈদের দিন পর্যটক বাড়বে৷ তাছাড়া ঈদুল আযহায় অনেকে কোরবানি দেন। সেজন্য অনেকে বাড়িতে ঈদ পালন করেন। আমরা আশা করছি ঈদের পরের শুক্র শনিবার আমরা অনেক পর্যটক পাব।’
মৌলভীবাজার সহকারী পুলিশ সুপার (শ্রীমঙ্গল সার্কেল) আনিসুর রহমান বলেন, ‘ঈদকে সামনে রেখে আমরা পর্যটক ও স্থানীয়দের নিরাপত্তার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। ঈদের আগে শপিংমল ও কোরবানির পশুর হাটে পুলিশ মোতায়েন থাকবে। ঈদের ছুটিতে ঘুরতে আসা পর্যটকদের জন্য ট্যুরিস্ট পুলিশের সাথে সমন্বয় করে প্রতিটি পর্যটন স্পটগুলোতে আমাদের পুলিশ থাকবে। পর্যটকরা যেন ঈদের ছুটি কাটিয়ে নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরতে পারে সেই লক্ষ্যেই আমরা কাজ করছি।’