রাজধানীর গুলশানের কূটনৈতিকপাড়ায় সহকর্মীর গুলিতে নিহত পুলিশ সদস্য মনিরুল ইসলামের গ্রামের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। মাত্র ১৮ মাসের ছেলে কিছু না বুঝেই বাবার মরদেহের পাশে চিৎকার করে কাঁদছে। কেউই থামাতে পারছে না তার কান্না।
রোববার রাত তিনটার দিকে নেত্রকোণার আটপাড়া উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামে নিজ বাড়িতে মনিরুলের মরদেহ পৌঁছায়। তারপর থেকে পরিবার, স্বজন ও প্রতিবেশীদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
মনিরুল ইসলাম বিষ্ণুপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা শামছুল হক মাস্টারের ছেলে। তিন ভাই ও তিন বোনের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন তিনি।
সোমবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে মনিরুলের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ে আছেন তার স্ত্রী তানিয়া সুলতানা তন্বী। দুজন নারী তার মাথায় পানি ঢালছেন। একসময় ছেলে তাকির চিৎকারে সংজ্ঞা ফেরে তার।
এসময় তন্বীকে বলতে শোনা যায়, ‘আমার স্বামী একজন পুলিশ সদস্য। তারে কেন গুলি কইরা মারল? আমি এর সর্বোচ্চ শাস্তি চাই। আমার সন্তানের কী অইব? আমার সন্তানরে কে দেখব?’ বলতে বলতে আবারও জ্ঞান হারান তিনি।
সোমবার সকাল দশটার দিকে বিষ্ণুপুর গ্রামের ঈদগাহ মাঠে মনিরুলের জানাজা সম্পন্ন হয়। পরে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
জানাজায় আটপাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. খায়রুল ইসলাম, ভাইস চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান নন্দন, আটপাড়া থানার ওসি মো. তাওহিদুর রহমান, বীর মুক্তিযুদ্ধা সংসদ কমান্ডার কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সুলতান উদ্দিন, ইউপি চেয়ারম্যান রুকুনুজ্জামান রুকন, নিহত পুলিশ সদস্যের চাচা হুমায়ুন কবীর লিটন, সাবেক চেয়ারম্যান টিএম জয়নাল আবেদীনসহ শত শত মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
মনিরুলের জানাজায় উপস্থিত হয়ে ওসি মো. তাওহিদুর রহমান বলেন, ‘সহকর্মীর এমন মৃত্যু কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যিনি জড়িত, তার সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি।’
শনিবার (৮ জুন) মধ্যরাতে ফিলিস্তিন দূতাবাসের সামনে মনিরুল ইসলামকে উর্পযুপরি গুলি করে হত্যা করেন পুলিশ সদস্য কাওসার আলী।
মনিরুল ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কূটনৈতিক নিরাপত্তা বিভাগে কর্মরত ছিলেন।