সিলেটে শনিবার রাতে মাত্র তিন ঘণ্টায় রেকর্ড ২২০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
এ ভারি বৃষ্টিতে আবারও তলিয়ে গেছে সিলেট নগর। এ নিয়ে এক সপ্তাহের ব্যবধানে দুইবার জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ পোহাতে হলো সিলেট নগরের বাসিন্দাদের।
জেলায় শনিবার রাত ৯টার দিকে বৃষ্টি শুরু হয়। রাত ১২টা পর্যন্ত টানা বৃষ্টি চলে। এতে নগরের বেশির ভাগ এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। পানি ঢুকে পড়ে বাসাবাড়ি ও দোকানপাটে। পানিতে তলিয়ে যায় ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিচতলাও। এতে দুর্ভোগে পড়েন রোগীরা। অবশ্য রোববার সকালে পানি নেমে যায়।
এর আগে গত ২ জুন রাতে ভারি বৃষ্টিতে সিলেট নগরে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। পানিতে তলিয়ে যায় নগরের শতাধিক এলাকা। এতে দুর্ভোগে পড়েন এসব এলাকার বাসিন্দারা। সে রাতেও ওসমানী হাসপাতালে পানি ঢুকে পড়েছিল।
শনিবার রাতে নগরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বৃষ্টিতে নগরের উপশহর, তেররতন, দরগাহ মহল্লা, জালালাবাদ, তালতলা, জামতলা, সোবহানীঘাট, শিবপগঞ্জ, মিরের ময়দানসহ বিভিন্ন এলাকয়ে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। এসব এলাকার বেশির ভাগ বাসায় পানি ঢুকে পড়ে।
সিলেট আবহাওয়া অফিসর সহকারী আবহাওয়াবিদ মো. সজীব জানিয়েছেন, শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত তিন মিলিমিটার এবং ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত ২২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। আর রাত ১২টা থেকে রোববার সকাল ৬টা পর্যন্ত বৃষ্টি হয় ৩৪ মিলিমিটার।
নগরের দরগাহ মহল্লা এলাকার বাসিন্দা, প্রকাশনা সংস্থা চৈতন্যর স্বত্বাধিকারী রাজিব চৌধুরী বলেন, ‘শনিবার রাতে কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতেই দরগাহ মহল্লা এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। সড়কে হাঁটু সমান পানি জমে। এলাকার বিভিন্ন বাসা বাড়িতেও পানি ঢুকে পড়ে।’
তিনি বলেন, ‘মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে এনিয়ে দুইবার বাসায় পানি ঢুকলো। সিলেটে সবচেয়ে বড় যন্ত্রণার নাম জলাবদ্ধতা।’
কলেজ শিক্ষক সালমান ফরিদ ফেসবুকে বলেন, ‘স্মার্ট সিলেট সিটি গড়ার কথা বলছেন মেয়র। অথচ মাত্র দুই ঘণ্টার বৃষ্টিতে মিরের ময়দান এলাকার কেওয়াপাড়ার আমার বাসায় পানি উঠে যায়। নিচতলায় পানি থইথই করছে।’
তিনি বলেন, ‘একের পর এক মেয়র বদল হচ্ছেন, কিন্তু কেউই জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দিতে পারছেন না।’
এর আগে গত ২৯ মে এক রাতের ঢলে তলিয়ে গিয়েছিল সিলেটের পাঁচ উপজেলা। পুরো জেলায় দেখা দিয়েছিল বন্যা পরিস্থিতি, তবে বন্যার পানি এখন কমে আসছে। বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির মধ্যে এক সপ্তাহের মধ্যে দুইবার ডুবল সিলেট নগর।
সিলেট সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজলু লস্কর বলেন, ‘রেকর্ড বৃষ্টিপাতের কারণে কিছুক্ষণ জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছিল, তবে সকাল হওয়ার আগেই পানি নেমে গেছে।’