বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বান্দরবানের পাহাড়েও বেনজীরের বিপুল সম্পদের সন্ধান

  • প্রতিনিধি, বান্দরবান   
  • ২ জুন, ২০২৪ ২২:৫৩

বান্দরবান সদরের সুয়ালক ইউনিয়নের মাঝের পাড়ায় বেনজীর আহমেদ স্ত্রী, দুই মেয়ে ও নিজের নামে কিনেছেন ২৫ একর জায়গা। সেখানে গড়ে তুলেছেন মাছের ঘের, গরুর খামারসহ আলিশান বাগানবাড়ি। এছাড়া সরই ইউনিয়নের ডলুছড়ি মৌজায় হাতিয়েছেন অর্ধশত একরের বেশি পাহাড়ি জায়গা।

সমতল পেরিয়ে এবার বান্দরবানেও বিপুল সম্পদের সন্ধান মিলেছে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের। বান্দরবান সদর উপজেলার সুয়ালক ইউনিয়ন এবং লামার সরই ইউনিয়নে স্ত্রী, কন্যা ও তার নিজের নামে রয়েছে অর্ধশত একরের বেশি জমি।

পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকাকালে প্রভাব খাটিয়ে ক্রয়কৃত সম্পত্তির পাশাপাশি দখল করে নিয়েছেন অনেক দরিদ্র পরিবারের জায়গা-জমিও। এসব জায়গায় গড়ে তুলেছেন বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষের বাগান, মাছের ঘের, গরুর খামারসহ আলিশান বাগানবাড়ি।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অভিযানের পর বেরিয়ে এসেছে এসব তথ্য।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বান্দরবান সদর উপজেলার সুয়ালক ইউনিয়নের মাঝের পাড়া এলাকায় বেনজীর আহমেদ স্ত্রী জীশান মির্জা, মেয়ে ফারহিন রিশতা ও নিজ নামে ক্রয় করেছেন ২৫ একর জায়গা। সে জায়গার ওপর গড়ে তুলেছেন মাছের ঘের, গরুর খামারসহ আলিশান বাগানবাড়ি। যাতায়াতের জন্য করা হয়েছে রাস্তা। আশপাশে কোনো জনবসতি না থাকলেও বেনজীরের সম্পত্তিতে রয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ। আর অবকাশযাপনের জন্য করা হয়েছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত দোতলা বাড়ি।

এখানেই শেষ নয়, বান্দরবানের লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের ডলুছড়ি মৌজায় বেনজীরের নামে-বেনামে রয়েছে অর্ধশত একরের বেশি পাহাড়ি জায়গা। স্থায়ী বাসিন্দা ছাড়া পার্বত্য এলাকায় অন্য কারও জমি কেনার বিধান না থাকায় শুধু নোটারি পাবলিকের মাধ্যমেই নামমাত্র মূল্যে এসব জায়গা কিনে নিয়েছেন এই সাবেক আইজিপি।

রেজিস্ট্রি না করায় প্রশাসনের কাছে নেই জায়গার কোনো দলিল। আর এসব জমি দেখাশোনা করার জন্য স্থানীয় এক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে লিখিতভাবে দায়িত্ব দেয়া হয়। বেনজীর তার মাধ্যমে সেখানে গড়ে তুলেছেন বিভিন্ন প্রজাতির গাছের বাগান।

স্থানীয়দের অভিযোগ, নামমাত্র মূল্যে ও বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে তিনি এসব জমি হাতিয়ে নিয়েছেন।

সরই ইউনিয়নের ডলুছড়ি টংগঝিরি এলাকার বাসিন্দা অজিত ত্রিপুরা বলেন, ‘আমরা ছোট ছিলাম। অভাবের কারণে বাবা আমাদের পাঁচ একর জায়গা বেনজীর নামে এক পুলিশ অফিসারের কাছে বিক্রি করে দেয়। শুধু আমাদের পরিবার না, অনেক পরিবারের জায়গা ওই পুলিশ অফিসার সামান্য কিছু টাকা দিয়ে নিয়ে নেয়। আবার অনেকেই তার কাছে জমি বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছে।’

টংগঝিরি এলাকার আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘এখানে প্রায় ৬৫-৭০টি ত্রিপুরা পরিবার ছিল। এখন ২৫-৩০টি পরিবার আছে। বেনজীর নামে এক পুলিশ কর্মকর্তা বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে জোর করে তাদের জমি দখল করে বাগান করেছে।’

সরই ডলুছড়ি মৌজায় বেনজীরের জায়গা দেখাশোনার কাজে নিয়োজিত থাকা ইব্রাহিম বলেন, ‘এক পুলিশ অফিসারের জায়গা শুনেছি। কিন্তু ওনার সাথে আমার কখনো দেখা বা যোগাযোগ হয়নি।’

কেয়ারটেকার ইব্রাহিমের স্ত্রী বলেন, ‘আমি আগে বাগানে থাকতাম না। কিছুদিন হলো বাগানে এসেছি। এটা কার জায়গা আমি কিছুই জানি না। তবে এখন শুনছি বেনজীর নামে এক পুলিশ অফিসারের জায়গা। অনেক লোকজন আসতেছে জায়গা দেখতে। অনেকে এসে ভিডিও করছে। তবে কী কারণে কেন লোকজন আসছে সে বিষয়ে কিছুই জানি না।’

এ বিষয়ে সুয়ালক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উক্যনু মার্মা বলেন, ‘বান্দরবানের বিভিন্ন এলাকায় বেনজীরের নামে অনেক সম্পত্তি আছে। আমার ইউনিয়নেও বেনজীরের সম্পত্তি আছে, যার মূল্য কয়েক কোটি টাকা হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর