সুন্দরবনে স্বাভাবিক সময়ে ২৪ ঘণ্টায় দুবার জোয়ার-ভাঁটা হয়। সেই হিসেবে ঘূর্ণিঝড় রিমাল আঘাত হানার পর গত ৪৮ ঘণ্টায় সুন্দরবন চারবার জোয়ারের পানিতে প্লাবিত ও চারবার ভাঁটায় পানি নেমে যাওয়ার কথা।
কিন্তু এবার সুন্দরবনের প্রাণ-প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য এক অস্বাভাবিক পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে। কারণ রিমাল আঘাত হানার পর এবার টানা প্রায় ৪৮ ঘণ্টা পানিতে তলিয়ে ছিল পুরো বনাঞ্চল।
ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে সুন্দরবনে বন্যপ্রাণীর নিহতের সংখ্যা বাড়ছেই। সুন্দরবনের বিভিন্ন স্থান থেকে আরও ১৫টি হরিণ ও একটি শূকরের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
এর আগে, ৩৯টি হরিণ ও একটি শূকরের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। ফলে সুন্দরবন থেকে উদ্ধার করা মোট মৃত প্রাণীর সংখ্যা দাঁড়াল ৫৬টিতে।
বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন খুলনা অঞ্চলের বনসংরক্ষক মিহির কুমার দো।
বন বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, রিমালের আঘাতে সুন্দরবনের পূর্ব ও পশ্চিম বন বিভাগের ফরেস্ট স্টেশন অফিস, ক্যাম্প ও ওয়াচ টাওয়ারের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বনের ভেতরে বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য যোগাযোগের মাধ্যম ওয়্যারলেস টাওয়ারও। মিষ্টি পানির পুকুর নিমজ্জিত হয়েছে লবণাক্ত পানিতে।
খুলনা অঞ্চলের বনসংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত ৫৪টি হরিণ ও দুটি শূকর মিলিয়ে সুন্দরবনের ৫৬টি বণ্যপ্রাণীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
‘মৃত হরিণগুলো কটকা অভয়ারণ্য এলাকায় মাটিচাপা দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া ভেসে আসা ১৭টি জীবিত হরিণ উদ্ধার করা করা হয়, যা বনে অবমুক্ত করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে দফায় দফায় উচ্চ জোয়ারে সুন্দরবনের সব নদী-খাল উপচে বনের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। জোয়ারের পানি সুন্দরবনের গহীনে উঠে যাওয়ায় হরিণগুলো সাঁতরে কূলে উঠতে না পেরে মারা গেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।’
এছাড়া বনের অবকাঠামো বিধ্বস্ত হয়ে যাওয়াসহ অন্যান্য ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক পরিমাণ ৬ কোটি ২৭ লাখ টাকার ওপরে বলে জানানিএ কর্মকর্তা।