পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটের ফলাফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকরা নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর হামলা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার উপজেলার শালডাঙ্গা ইউনিয়নের দামানিগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ফল ঘোষণা নিয়ে ওই হামলা হয়। এ সময় তিনটি সরকারি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।
হামলায় নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবু আউয়াল, ওই কেন্দ্রের সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার কাদেরুল ইসলাম, উপসচিবের সহকারী জাহাঙ্গীর আলম, গাড়ি চালক আবু বক্কর সিদ্দিক, আটোয়ারী থানার উপপরিদর্শক বুলু মিয়া ও গোয়েন্দা পুলিশের কনস্টেবল আব্দুল বারী আহত হন। তাদের দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মিঠুন রায় (৩২) ও দীনবন্ধু রায় (৩৩) নামের দুই ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। দেবীগঞ্জ থানায় তাদেরসহ এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার ভোট গণনার পর ওই কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এ সময় চেয়ারম্যান প্রার্থী মদন মোহন রায়ের সমর্থকরা বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ভোটগ্রহণ কাজে নিয়োজিত উপসচিব আবু আউয়ালসহ সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের ওপর আক্রমণ করেন। এ সময় উপসচিবের ব্যবহৃত গাড়িটি ভাঙচুর করেন তারা।
পরে বিজিবি ও পুলিশসহ অতিরিক্ত আইনশৃখলা বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তাদের ওপরও হামলা করা হয়। রাস্তায় গাছ ফেলে গতিরোধ করে ইট পাটকেল ছোড়া হয়।
এ সময় পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়িও ভাঙচুর করেন তারা। তাদের আক্রমণে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবু আউয়াল, ওই কেন্দ্রের সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার কাদেরুল ইসলাম, উপসচিবের সহকারী জাহাঙ্গীর আলম, গাড়ি চালক আবু বক্কর সিদ্দিক, আটোয়ারী থানার উপপরিদর্শক বুলু মিয়া ও গোয়েন্দা পুলিশের কনস্টেবল আব্দুল বারী আহত হন। প্রশাসন পরিস্থিতি সামাল দেয়। পরে আটক করা হয় দুই ব্যক্তিকে।
এদিকে নির্বাচনে ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। ফলাফলে দেবীগঞ্জ উপজেলার শালডাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি মদন মোহন রায় ৩৪ হাজার ৭৪২ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হাসনাৎ জামান চৌধুরী জর্জ পেয়েছেন ২৯ হাজার ৭০৩ ভোট। প্রধান এই প্রতিদ্বন্দ্বীর বাড়ি শালডাঙ্গা ইউনিয়নে।
বিচ্ছিন্ন ঘটনা উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, ভোটের ফলাফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে প্রার্থীর লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। অতিরিক্ত পুলিশ ও বিজিবিসহ আমাদের লোকজন সর্বোচ্চ সহনশীলভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। কয়েকজন কর্মকর্তা কর্মচারী সামান্য আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।