বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বাবরের এভারেস্ট জয় নিয়ে যা বললেন মা-বাবা

  • প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম   
  • ২০ মে, ২০২৪ ১০:৪৯

বাবা-মা জানান, তাদের স্বপ্ন ছিল বাবর আলী চিকিৎসক হবে। ছেলে সেই স্বপ্ন পূরণ করেছেন, কিন্তু সেই পেশায় প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পথে হাঁটেননি তিনি। বরং হাঁটতে শুরু করলেন পাহাড়-সমতলের দুর্গম পথে পথে। হাঁটতে, হাঁটতে বাবর আলী স্বপ্ন দেখলেন এভারেস্ট জয়ের।

‘আমার ছেলের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। এভারেস্ট জয় করেছে আমার বাবর। এটা বাবা হিসেবে আমার জন্য খুবই গর্বের, তবে পাহাড় থেকে নেমে না আসা পর্যন্ত আমাদের চিন্তা দূর হবে না।’

সংবাদমাধ্যমকে রোববার দুপুরে এ কথাগুলো বলছিলেন এভারেস্ট জয় করা বাংলাদেশের পর্বতারোহী বাবর আলীর বাবা লিয়াকত আলী।

লিয়াকত আলী ও লুৎফুন্নাহার দম্পতির দ্বিতীয় সন্তান বাবর আলী। বাবা-মায়ের স্বপ্ন ছিল ছেলে চিকিৎসক হবে। ছেলে সেই স্বপ্ন পূরণ করেছেন, কিন্তু সেই পেশায় প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পথে হাঁটলেন না ছেলে।

বরং হাঁটতে শুরু করলেন পাহাড়-সমতলের দুর্গম পথে পথে। হাঁটতে, হাঁটতে বাবর আলী স্বপ্ন দেখলেন এভারেস্ট জয়ের।

তাদের বাড়ি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার বুড়িশ্চর গ্রামের নজু মিয়া হাট এলাকায়। বাবা লিয়াকত আলী কুয়েত প্রবাসী ছিলেন। ২০১৭ সালে দেশে ফিরে বর্তমানে অবসর জীবনযাপন করছেন। মা লুৎফুন্নাহার বেগম গৃহিণী।

তিন ভাই এক বোনের মধ্যে বাবর দ্বিতীয়। বড় ভাই ব্যারিস্টার, অস্ট্রেলিয়ায় থাকেন। বাবর আলী চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করেন। সেখান থেকে জনস্বাস্থ্য বিষয়ে এমফিল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিজিটি সম্পন্ন করেন।

একমাত্র বোন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে কক্সবাজার জেলা আদালতে কর্মরত। সবার ছোট ভাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে মাস্টার্স সম্পন্ন করে বর্তমানে বিকাশের মার্চেন্ট ডেভেলপমেন্ট এক্সিকিউটিভ অফিসার হিসেবে আছেন।

বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্টের চূড়ায় রোববার সকালে লাল-সবুজের পতাকা উড়ালেন বাবর আলী।

সন্তানের এভারেস্ট বিজয়ে বাবরের বৃদ্ধ বাবা-মা খুশিতে আত্মহারা, একই সঙ্গে শঙ্কিতও। ছেলে ঠিকমতো শৃঙ্গ চূড়া থেকে নেমে তাদের বুকে ফিরে না আসা পর্যন্ত কাটবে না এ শঙ্কা।

মা লুৎফুন্নাহার বেগম বলেন, ‘সবসময় টেনশনে ছিলাম। এখনও আছি। বাবর এভারেস্টের দিকে যাত্রা করার পর থেকে ঘুম আমার চোখ থেকে চলে গেছে। গত দেড় মাসে মনে হয় দিনে আমি দুই ঘণ্টাও ঘুমাতে পারিনি। নামাজ পড়ে আল্লাহকে বলেছি, আল্লাহ আপনি আমার ছেলেকে সুস্থভাবে আবার আমার কাছে ফিরিয়ে দেন।

‘আল্লাহ আমার ছেলেকে তার লক্ষ্যে পৌঁছে দিয়েছেন, কিন্তু আমি তো মা। যতক্ষণ পর্যন্ত সে পাহাড় থেকে নেমে না আসবে, ততক্ষণ তো আমার টেনশন যাবে না।’

গত ৩০ মার্চ চট্টগ্রামে সংবাদ সম্মেলনে এসে বাবর আলী তার এভারেস্ট জয়ের স্বপ্নের কথা জানিয়েছিলেন। পরদিন ১ এপ্রিল থেকে শুরু হয় তার এভারেস্ট জয়ের অভিযান। ৪ এপ্রিল নেপালের কাঠমান্ডু থেকে পৌঁছান লুকলাতে। ১০ এপ্রিল এভারেস্টের বেজ ক্যাম্পে পৌঁছান তিনি।

এরপর এক মাস ধরে অপেক্ষার পালা। ১৪ মে শুরু হয় চূড়ান্ত অভিযান। ওইদিনই তিনি দ্বিতীয় ক্যাম্পে, ১৮ মে তৃতীয় ক্যাম্পে এবং ১৯ মে ভোরে ক্যাম্প ফোরে পৌঁছান। ১৯ মে সকালে তিনি ‘ডেথ জোন’ নামে পরিচিত ২৯ হাজার ৩১ ফুট উচ্চতায় শৃঙ্গে আরোহণ করে লাল-সবুজের পতাকা উড়িয়ে দেন।

এভারেস্ট জয়ের আগে আরও অনেক পর্বতশৃঙ্গ জয় করেন বাবর। চার হাজার ৯৮৪ মিটার উচ্চতার সারগো রি থেকে ছয় হাজার ৮১২ মিটার উচ্চতার মাউন্ট আমা দাবলাম, অন্তত নয়টি পর্বতশৃঙ্গ জয়ের রেকর্ড আছে বাবরের ভাণ্ডারে।

২০১৩ সালের ২০ মে এভারেস্ট জয় করে নামার পথে মারা যান সজল খালেদ। সেই অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর পর গত ১১ বছরে আর কোনো বাংলাদেশি এভারেস্টের পথে যাননি।

এ বিভাগের আরো খবর