মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে চার বছরেও শেষ হয়নি লতব্দী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজ। এমন পরিস্থিতিতে পুরাতন ভবনে কক্ষ সংকটের কারণে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান কার্যক্রম।
স্কুলের শিক্ষক ও সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, সমস্যাটি নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগসহ নানাভাবে যোগাযোগ করেও মেলেনি সুফল।
লতব্দী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী আছে ৩৫০ জন। স্কুলের পুরাতন ভবনটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়ার পাশাপাশি সেখানে কক্ষ সংকট থাকায় ২০১৯-২০ অর্থবছরে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে একটি ভবন নির্মাণ করতে বলা হয়। সে জন্য ৮৫ লাখ টাকাও বরাদ্দ দেয়া হয়। এর পর টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ করে কার্যাদেশ দেয়া হয়।
ঢাকার মেসার্স ‘হেদায়েত উল্লাহ অ্যান্ড কোং’ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেই ভবন নির্মাণকাজের দায়িত্ব পায়। প্রতিষ্ঠানটি কাজ শুরু করার চার বছর অতিবাহিত হলেও কাজটি অসম্পন্ন রয়ে গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে বুধবার দেখা যায়, স্কুলের পুরোনো ভবনে গাদাগাদি করে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেয়া হচ্ছে। স্কুলের মাঠে ও ভবনের কক্ষের সামনে পড়ে আছে নির্মাণসামগ্রী।
স্কুলের এক শিক্ষার্থীর ভাষ্য, ‘এতদিনেও নতুন ভবনের নির্মাণকাজ শেষ হয়নি। এ কারণে পুরাতন ভবনে গাদাগাদি করে ক্লাস করতে হচ্ছে। প্রচণ্ড গরমে শ্রেণিকক্ষে গাদাগাদি করে ক্লাস করতে আমাদের অনেক কষ্ট হয়।
‘এতে আমাদের পাশাপাশি স্যারদেরও অনেক সমস্যা হচ্ছে। তাই দ্রুতই নতুন ভবনের নির্মাণকাজ শেষ করার দাবি জানাচ্ছি।’
প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক মোক্তার হোসেন বলেন, ‘আমি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ভবন নির্মাণকাজ দ্রুত শেষ করার জন্য বারবার অনুরোধ করছি। জরাজীর্ণ পুরাতন ভবন আর টিনশেড কক্ষে ক্লাস নিতে আমাদের অনেক কষ্ট হচ্ছে।
‘এ ছাড়া সেখানে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও রয়েছে। আর মাঠে নির্মাণসামগ্রী ফেলে রাখায় শিক্ষার্থীরা সেখানে খেলাধুলাও করতে পারছে না।’
স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মাহাবুব হোসেন রন্টু বলেন, ‘চার বছর ধরে স্কুলের কাজ অসম্পূর্ণ করে রেখেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এ বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে একাধিকবার লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ করেও কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায়নি।
‘এ ছাড়া ভবন নির্মাণে একেবারে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করাসহ শিডিউলের ড্রইং বহির্ভূত ভবন নির্মাণকাজটি করা হচ্ছে।’
বিষয়টি নিয়ে জানতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স হেদায়েত উল্লাহ অ্যান্ড কোংয়ের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
সিরাজদিখান উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মিজানুর রহমান বলেন, ‘প্রয়োজনীয় শ্রেণিকক্ষের অভাবে শিক্ষাক্ষেত্রে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। আমার জোর দাবি, সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক নির্মাণকাজ শেষ করে দ্রুত হস্তান্তর করা হোক।’