মৌলভীবাজারের খলিলপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে সদস্য পদের ভোটে অভিনব কায়দায় কারচুপির প্রমাণ পেয়েছে আদালত। এতে ভোট পুনর্গণনা করে নির্বাচনের আড়াই বছর পর পরাজিত প্রার্থী সৈয়দ মুজাহিদ আলীকে ১০৩ ভোটের ব্যবধানে জয়ী ঘোষণা করা হয়েছে।
গত ৩০ এপ্রিল মৌলভীবাজারের সিনিয়র সহকারী জজ ও নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুমিনুল হকের আদলতে এই রায় হলেও জেলা নির্বাচন অফিসের মাধ্যমে সম্প্রতি বিষয়টি আলোচনায় এসেছে।
জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ২৬ ডিসেম্বর মৌলভীবাজার সদর উপজেলার খলিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন টিউবওয়েল প্রতীকের সৈয়দ মোজাহিদ আলী ও ফুটবল প্রতীকের মো. আবু সুফিয়ান। সেদিন ভোট গ্রহণ শেষে গোনার আগেই প্রিসাইডিং অফিসার ও রিটার্নিং কর্মকর্তারা ফলাফল ঘোষণা করে কেন্দ্র ত্যাগ করেন।
ঘোষিত ফলাফলে ৯৮ ভোটের ব্যবধানে ফুটবল প্রতীকের প্রার্থী মো. আবু সুফিয়ানকে বিজয়ী দেখানো হয়। তবে ওই ফল প্রত্যাখান করে মৌলভীবাজার নির্বাচনি আদালতে মামলা করেন পরাজিত প্রার্থী সৈয়দ মুজাহিদ আলী।
মামলার পর দীর্ঘদিন ধরে চলে বিচার কাজ। এক পর্যায়ে আদালত ব্যালটের ঘানি ব্যাগ তলব করে এবং প্রকাশ্যে আইনজীবীদের উপস্থিতিতে পুনরায় ভোট গণনা করা হয়।
আদালতের গণনায় দেখা যায়, টিউবওয়েল প্রতীকে ভোট পড়েছে ৬৮০টি ও ফুটবল প্রতীকের প্রার্থী পেয়েছেন ৫৭৭ ভোট। এই গণনায় কেউ আপত্তি না তোলায় টিউবওয়েল প্রতীকের সৈয়দ মোজাহিদ আলীকে বিজয়ী ঘোষণা করেন বিচারক মুমিনুল হক।
মামলার রায়ে আরও বলা হয়, ফুটবল প্রতীকের প্রার্থী মো. আবু সুফিয়ান বেআইনিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
এ ঘটনায় জড়িত প্রিসাইডিং অফিসার খালিশপুর মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মো. ইলয়াছ আলী ও রিটার্নিং কর্মকর্তা উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোতাহের বিল্লাহর বিরুদ্ধে নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনে সুপারিশ প্রেরণের নির্দেশ দেয় আদালত।
জানতে চাইলে বাদী পক্ষের আইনজীবী জাহেদুল ইসলাম বলেন, ‘আমার মক্কেল আদালতের মাধ্যমে ভোট পুনরায় গণনা করে সুষ্ঠু বিচার পেয়েছেন। বিবাদী বেআইনিভাবে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এ রায়ে অভিনব এই ভোট কারচুপির রহস্য উদঘাটন হয়েছে।’