মানিকগঞ্জের ঘিওরে মানবপাচার মামলায় এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন ও তার স্ত্রীকে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক বেগম তানিয়া কামাল সোমবার বিকেলে এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত হাসান মোল্লা (৩৫) মানিকগঞ্জের ঘিওরের রামদিয়া এলাকার বাসিন্দা এবং ছালমা আক্তার (৩২) দণ্ডিত হাসান মোল্লার স্ত্রী।
এজহার সূত্রে জানা যায়, আট লাখ টাকার বিনিময়ে বিদেশ কাজের কথা বলে ২০১৪ সালের ৫ সেপ্টেম্বর মানিকগঞ্জের ঘিওরের আশরাফুল ইসলাম আশিষকে মধ্যপ্রাচ্যের ওমানে পাঠান হাসান মোল্লা ও তার স্ত্রী ছালমা আক্তার। পরে আশিষের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করতে না পেরে বিষয়টি স্থানীয়দের জানান তার পরিবার। স্থানীয়দের মাধ্যমে আশিষের পরিবার জানতে পারে প্রবাসের নামে আশিষকে পাচার করে দেয়া হয়েছে।
পরে স্থানীয়দের চাপে ও মামলার ভয়ে ২০১৫ সালের ২০ আগস্ট দেশে ফেরত আনা হয় আশিষকে।
এজহারপত্রে আরও উল্লেখ আছে, আশিষের বাবা ২০১৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ঘিওর থানায় ছালমা আক্তার ও হাসান মোল্লাসহ চারজনকে আসামি করে মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা করেন। মামলার পর পুলিশ ছালমা আক্তার ও হাসান মোল্লাকে গ্রেপ্তার করে। মামলায় দীর্ঘদিন কারাভোগের পর ছালমা আক্তার ও হাসান মোল্লা জামিনে বের হন এবং হাসান মোল্লা পলাতক থাকেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মজিবুর রহমান ও পুলিশ পরিদর্শক নুর ইসলাম জানান, ২০১৬ সালের ২৭ মার্চ ছালমা আক্তার ও হাসান মোল্লাকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। মামলায় ছয়জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে দোষী প্রমাণিত হওয়ায় ছালমা আক্তারের উপস্থিতিতে ট্রাইব্যুনালের বিচারক হাসান মোল্লাকে যাবজ্জীবন ও দুই লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে এক বছরের কারাদণ্ড দেন এবং একই মামলায় ছালমা আক্তারকে তিন বছরের কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে তিন মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
রায়ে রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী একেএম নুরুল হুদা রুবেল সন্তোষ প্রকাশ করেছেন, তবে আসামি পক্ষের আইনজীবী নজরুল ইসলাম বাদশার মন্তব্য পাওয়া যায়নি। রায় ঘোষণার সময় হাসান মোল্লা পলাতক ছিলেন।