মাদারীপুরে ঈশিতা আলী হত্যার বিচার চাইল তার দুই শিশু সন্তান মরিয়ম ও রাইয়ান। রোববার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে হত্যা মামলার আসামিদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করেছে তারা।
সংবাদ সম্মেলন সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুর ইউনিয়নের সুচিয়ার ভাঙ্গা গ্রামের ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ঈশিতা আলীকে নির্যাতন করে হত্যা করে শ্বশুর বাড়ির লোকজন। পরে এই ঘটনায় থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি।
পরবর্তীতে নিহতের ভাই সোহেল মাতুব্বর বাদী হয়ে ছয়জনকে আসামি করে ২২ এপ্রিল মাদারীপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে মামলা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে নিহতের ভাই সোহেল মাতুব্বর ও সাব্বির মাতুব্বর ছাড়াও উপস্থিত ছিল নিহতের দুই শিশু সন্তান ১০ বছরের মরিয়ম ও আট বছর বয়সী রাইয়ান।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার ঘটমাঝি ইউনিয়নের সিদ্দিকখোলা গ্রামের আইয়ুব আলী মাতুব্বরের মেয়ে ঈশিতা আলীর সঙ্গে ১২ বছর আগে বিয়ে হয় মস্তফাপুর ইউনিয়নের সুচিয়ারভাঙ্গা গ্রামের এনামুল ঢালীর। এর কয়েক বছর পর ভাসুর টুকু ঢালী ও ভাসুরের স্ত্রী খাদিজা বেগমের সঙ্গে পারিবারিক কলহ শুরু হয় ঈশিতার। এর জের ধরে ২০ এপ্রিল টুকু ঢালীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন অন্তঃসত্ত্বা ঈশিতারকে নির্যাতন করে। এতে গুরুতর অসুস্থ হয়ে রাতেই মারা যান আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা ঈশিতা।
ঈশিতার ভাই সোহেল মাতুব্বর বলেন, ‘আমার বোনকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন নির্যাতন করে মেরে ফেলেছে। সেই ঘটনায় আমি মামলা করলেও পুলিশ আসামিদের ধরছে না। আমি এর বিচার চাই।’ নিহতের আরেক ভাই সাব্বির বলেন, ‘আমার বোনকে হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। পরে আমরা আদালতে মামলা করি। এরপরও পুলিশ আসামিদের ধরছে না। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আসামিদের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়ে আসামিদের বাঁচানোর চেষ্টা করছেন।’
শিশু মরিয়ম সংবাদ সম্মেলনে বলে, ‘আমার চাচা টুকু ঢালী মাকে মারধর করেছে। পরে মা মারা গেছে। আমি এর বিচার চাই।’
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মাদারীপুর সদর মডেল থানার এসআই হাসিব বলেন, ‘নিরীহ মানুষ যাতে হয়রানির শিকার না হয় সে কারণে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। মামলার সাক্ষ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করছি। দোষীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’
আসামিদের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।