নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করতে গিয়ে অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহিন মিয়া।
বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে উপজেলার বজরা ইউনিয়নের বারাহিনগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, সোনাইমুড়ী উপজেলার বজরা এলাকার বারাহিনগর গ্রামে অবৈধভাবে কৃষিজমি থেকে মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে- এমন অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে যান সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহিন মিয়া। এ সময় মাটি বহনকারী পিকআপের ড্রাইভারকে গাড়ি থামানোর নির্দেশ দেন তিনি, কিন্তু ড্রাইভার তা না মেনে আরও দ্রুত গতিতে পিকআপ চালিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট শাহিন মিয়াকে চাপা দেয়ার চেষ্টা করেন। পরে সড়কে মাটি ফেলে ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি আটকে আটকে দেয়া হয়।
এরপর বিকল্প রাস্তায় গিয়ে একটি মাটির গাড়ি আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এ সময় মাটিকাটা ও বিক্রির অপরাধে জাফর আহাম্মদ নামের এক ব্যক্তিকে এক লাখ টাকা জরিমানা এবং ভবিষ্যতে এমন অপরাধের পুনরাবৃত্তি করবে না মর্মে মুচলেকা গ্রহণ করা হয়।
উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, উপজেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কানিজ ফাতেমা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহিন মিয়া এ বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে ২০টি মামলায় ১১ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।
ইউএনও কানিজ ফাতেমা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন থেকে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখকে ফাঁকি দিয়ে কৃষিজমির মাটি কেটে বিক্রি করে আসছিল একটি চক্র। অভিযোগ পেয়ে মাটিকাটার অপরাধে বিভিন্ন সময় ২০টি মামলায় সাড়ে ১১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া তাদের সতর্কও করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘কৃষিজমির উর্বর মাটি কাটার কারণে চাষাবাদ বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। পাশাপাশি মাটি পরিবহনের কারণে এলাকার রাস্তাঘাট দ্রুত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।’
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহীন মিয়া বলেন, ‘প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে এখন রাতের বেলায় ফসলি জমি থেকে মাটি কাটছে। এসব মাটি রাতের বেলায় পিকআপে করে নিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন ইটভাটায়।’
বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আরেকটু হলে আমাকেই চাপা দিয়ে মাটি নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছিল মাটিখেকোরা। পরে রাস্তায় মাটি ফেলে আমাদের গাড়ি আটকে দেযোর চেষ্টা করা হয়। এদের বিরুদ্ধে অভিযান চলমান থাকবে।’