বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘দুঃখ হয়, যখন দেখি আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা তার বক্তব্যে বলেন- কী এমন ঘটল যে বাংলাদেশে অতি বাম, অতি ডান এক হয়ে আমাকে উৎখাত করতে চায়।
‘শুধু অতি বাম-অতি ডান নয়, শুধু মধ্যপন্থী নয়; আজকে সব মানুষই মনে করছেন যে এই সরকার তাদের ন্যূনতম অধিকারটুকুও কেড়ে নিয়েছে।’
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বুধবার শোভাযাত্রা-পূর্ব শ্রমিক সমাবেশের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মহান মে দিবস উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল এই কর্মসূচির আয়োজন করে।
বিকেল পৌনে ৫টায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শোভাযাত্রা শুরু হয়। এটি কাকরাইলে নাইটিঙ্গেল মোড় ঘুরে পার্টি অফিসের সামনে দিয়ে আরামবাগ হয়ে আবারও কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়।
সমাবেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অনেকে বলেন যে এটা বিএনপির সংগ্রাম। এটা বিএনপির সংগ্রাম নয়, এদেশের মানুষের অস্তিত্বের সংগ্রাম। এই অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছি। আমাদেরকে আরও ত্যাগ স্বীকার করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘মে দিবসে দেশের সব মানুষের কাছে আমরা আহ্বান জানাতে চাই- আসুন, আর চুপ করে বসে থাকলে চলবে না। আমাদের (সব রাজনৈতিক দল, সংগঠন, ব্যক্তি) জেগে উঠতে হবে। ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
‘আপনার অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য আন্দোলন ও সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ুন। আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্যে দিয়েই জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনব- এই হোক আজকের মে দিবসে আমাদের অঙ্গীকার।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি শুধু নয়, এ দেশের সব গণতন্ত্রকামী মানুষ আজ জেগে উঠছে। আমরা অতীতেও পরাজিত হইনি, পরাজিত হবো না। আমাদের যে লক্ষ্য, বাংলাদেশে আমরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করব এবং ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনব।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘অনেক ত্যাগ আমরা স্বীকার করেছি। আমাদের অনেক ভাই গুম ও খুন হয়েছেন। আমাদের নেতাকর্মীরা মিথ্যা মামলায় জর্জরিত। এখনও বেগম খালেদা জিয়া মিথ্যা মামলায় কারাগারে। এরকম একটা অবস্থায় ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মামলা। প্রশাসন, গণমাধ্যমসহ সবকিছু কুক্ষিগত করে দেশে একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জোর পাঁয়তারা চলছে। কৌশলটা ভিন্ন।
‘তারা সংসদে বিল পাস করে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করতে চায় না। গণতন্ত্রের ছদ্মবেশ রেখে দিয়ে গণতন্ত্রের সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়ে, জনগণকে দমন করে তারা একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছে।’
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘উনি আরেকটি কথা বলেছেন যে- আমাদের অপরাধ কী। আপনাদের অপরাধ আপনারা গণতন্ত্র ধ্বংস করে দিয়েছেন, সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়েছেন। জনগণের যে ন্যূনতম অধিকার, ৫ বছর পর পর তারা তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করবে, সেই অধিকারটুকুও আপনারা কেড়ে নিয়েছেন।’