বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

চট্টগ্রামে দিনভর ভোগান্তির পর সন্ধ্যায় পরিবহন ধর্মঘট স্থগিত

  • প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম   
  • ২৮ এপ্রিল, ২০২৪ ১৯:১৮

বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্যপরিষদের সদস্য সচিব মোহাম্মদ মুছা বলেন, ‘জেলা প্রশাসক দাবি-দাওয়ার ব্যাপারে আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। আমাদের ওপর যেন হামলা না হয় সে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। সবকিছু বিবেচনা করে আমরা ধর্মঘট স্থগিত করেছি।’

দিনভর জনভোগান্তির পর চট্টগ্রামে ডাকা ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট রোববার সন্ধ্যায় স্থগিত করেছেন মালিক-শ্রমিকরা। এদিন বিকেলে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মো. ফখরুজ্জামানের সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকের পর সন্ধ্যা ৬টার দিকে ধর্মঘট স্থগিতের ঘোষণা দেয়া হয়।

বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্যপরিষদের সদস্য সচিব মোহাম্মদ মুছা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) শিক্ষার্থীদের দেয়া আগুনে পুড়ে যাওয়া বাসের ক্ষতিপূরণ এবং বাসে অগ্নিসংযোগকারীদের গ্রেপ্তারসহ চার দফা দাবিতে রোববার সকাল থেকে বৃহত্তর চট্টগ্রামে ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলেন গণপরিবহন মালিক-শ্রমিকরা।

ঐক্যপরিষদের সদস্য সচিব মোহাম্মদ মুছা বলেন, ‘জেলা প্রশাসক দাবি-দাওয়ার ব্যাপারে আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। আমাদের ওপর যেন হামলা না হয় সে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। সবকিছু বিবেচনা করে আমরা ধর্মঘট স্থগিত করেছি।’

তবে কাপ্তাই-চট্টগ্রাম সড়কে চুয়েট শিক্ষার্থীদের হামলা হলে আবার ধর্মঘটের হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

মুছা বলেন, ‘বিনা কারণে আমাদের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে। গত তিন মাসে বিভিন্ন থানায় লাইনম্যান, পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা হয়েছে। অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চাঁদাবাজির কথা বলে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।’

জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের সভাপতিত্বে বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ কে এম গোলাম মোর্শেদ খান, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রতিনিধি অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার নোবেল চাকমা, রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের প্রতিনিধি, বিআরটিসির সহকারী পরিচালক রায়হানা আক্তার উর্থি প্রমুখ।

ধর্মঘটে চরম ভোগান্তিতে পড়েন বিভিন্ন গন্তব্যের যাত্রীরা। রোববার সকালে চট্টগ্রাম নগরীর ব্যস্ততম এলাকার চিত্র। ছবি: নিউজবাংলা

দিনভর জনভোগান্তি

চার দফা দাবিতে রোববার ভোর ৬টা থেকে শুরু হয় পরিবহন ধর্মঘট। শনিবার বিকেলে ঘোষণা দেয়া এই ধর্মঘটে জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করে। তীব্র গরমে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও গণপরিবহন পায়নি লোকজন।

চট্টগ্রাম নগরীর রাস্তায় বাসসহ কোনো ধরনের গণপরিবহন ছিল না। এছাড়া তিন পার্বত্য জেলা, কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলাগামী রুটেও বাস চলাচল বন্ধ ছিল। মোড়ে মোড়ে বিভিন্ন গন্তব্যমুখী মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা যায়। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়ে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা।

অক্সিজেন মোড়ে অপেক্ষারত তরুণ সাদিক খান জানান, এই গরমের মধ্যে প্রায় দুই ঘণ্টা সড়কে দাঁড়িয়ে থেকেও কোনো যানবাহন পাননি। সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ভেঙে ভেঙে গেছেন অনেকে। এতে সময় দুই থেকে তিন ঘণ্টা বেশি লাগে।

চট্টগ্রাম নগর থেকে দিনভর বিভিন্ন উপজেলা, কক্সবাজার, রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি জেলার উদ্দেশে কোনো বাস ছাড়েনি। ওইসব এলাকা থেকে কোনো বাসও চট্টগ্রাম নগরীতে আসেনি। জেলাগুলোর শহর এলাকায়ও চলেনি কোনো গণপরিবহন।

সকালে অক্সিজেন এলাকায় গিয়ে কয়েক শ’ যাত্রীকে গণপরিবহন ও দূরপাল্লার বাসের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায়। অক্সিজেন এলাকা থেকে রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলার উদ্দেশে বাস ছাড়ে।

পার্বত্য জেলা ছাড়াও চট্টগ্রামের কোনো উপজেলায় চলেনি যানবাহন। সিএনজিচালিত অটোরিকশা চললেও ভাড়া হাঁকা হয় তিন থেকে চার গুণ বেশি। অনেকে বাড়তি ভাড়া দিয়েই রওনা হয়েছেন গন্তব্যে।

নগরীর মুরাদপুর, ২ নম্বর গেট, বহদ্দারহাট, আগ্রাবাদ, জিইসি এলাকায় শত শত মানুষ যানবাহনের জন্য দাঁড়িয়ে থাকেন সকালের দিকে। এই জনদুর্ভোগকে সুযোগ হিসেবে নিয়ে রিকশা, যাত্রী টানা মোটরসাইকেল ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালকরা বাড়তি ভাড়া দাবি করে বসেন।

গণপরিবহন না থাকায় যাত্রীদের বাড়তি ভাড়া গুনতে হয়েছে। নগরের চান্দগাঁও থানা এলাকা থেকে সাধারণত কক্সবাজারগামী বাস ছেড়ে যায়। তবে সকালে কাউন্টারগুলোর সামনে কোনো বাস ছিল না। অধিকাংশ কাউন্টার ছিল বন্ধ। সকালের দিকে বহদ্দারহাট এলাকায় কয়েকটি বাস আটকে দেয় পরিবহন শ্রমিকরা।

চান্দগাঁও থানার ওসি জাহিদুল কবীর বলেন, ‘কর্মবিরতির সমর্থকেরা নগরে চলাচলকারী বাস আটকে রেখেছিল। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।’

এ বিভাগের আরো খবর