মধ্যপ্রাচ্যে সৃষ্ট উত্তেজনাকর পরিস্থিতির দিকে যথাযথ নজর রাখতে মন্ত্রিসভার সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় ও কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরিস্থিতি খারাপের দিকে গেলে অর্থাৎ যুদ্ধ শুরু হলে এবং সৃষ্ট উত্তেজনা দীর্ঘ সময়ে গড়ালে উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় সবাইকে প্রস্তুত থাকারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বুধবার অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই নির্দেশ দেন সরকার প্রধান। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার ফলে সম্ভাব্য রি-অ্যাকশন কী হতে পারে, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে এখন থেকেই সে বিষয় বিবেচনায় প্রস্তুতি নিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। কনফ্লিক্ট যদি দীর্ঘমেয়াদি হয়, সেটি কীভাবে আমরা মোকাবিলা করব, সেগুলো মোকাবিলা করার জন্য আমরা কী করতে পারি; সেগুলোর প্রস্তুতি নিতে বলেছেন তিনি। ঘটনাপ্রবাহের দিকে নজর রাখতে বলেছেন।
মাহবুব হোসেন বলেন, যুদ্ধ যদি দীর্ঘমেয়াদি হয় তখন বিভিন্ন সেক্টরে যে ইমপ্যাক্ট পড়তে পারে, সেটি সংশ্লিষ্ট সেক্টর থেকে এক্সারসাইজ করে তা মোকাবিলায় পরিকল্পনা গ্রহণ করে প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে বলেছেন সরকার প্রধান। তিনি বলেছেন, যার যার সেক্টরে সবাই যেন প্রস্তুতি নেয়।
ক্রাইসিস তৈরি হলে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যেতে পারে। তখন কী করা যায়, সেসব বিষয়ে পরিকল্পনা রাখতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সচিব জানান, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বাস্তবায়নাধীন সিদ্ধান্তের বিষয়ে বিস্তারিতভাবে মন্ত্রিসভাকে জানাতে বলেন।
দেশে এখনও ১৬টি আইন তালিকাভুক্ত করা হয়নি উল্লেখ করে সচিব মাহবুব বলেন, প্রধানমন্ত্রী শিগগির আইনগুলো বাদ দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মন্ত্রিসভা ‘মহেশখালী ইন্টিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (এমআইডিএ) অ্যাক্ট-২০২৪’ এবং ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার (পারিশ্রমিক ও সুযোগ-সুবিধা) আইন-২০২৪’ এর খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, মহেশখালীর মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দরকে কেন্দ্র করে চলমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সমন্বিত প্রক্রিয়ায় পরিচালনার জন্য একটি কর্তৃপক্ষ গঠনের লক্ষ্যে এমআইডিএ আইনের খসড়াটি মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব।
আইনটির আওতায় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃপক্ষের গভর্নিং বোর্ডের চেয়ারম্যান হবেন এবং এটি ১৭ সদস্যের বোর্ড দ্বারা পরিচালিত হবে। গভর্নিং বোর্ড ছাড়াও সরকার একজন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগ করবে, যিনি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে অফিসটি পরিচালনা করবেন।
কর্তৃপক্ষের মূল লক্ষ্য হচ্ছে- প্রায় ৫৫ হাজার ৯৬৮ একর জমির নির্দিষ্ট এলাকার জন্য একটি মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়ন করা, সেখানে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে শৃঙ্খলা আনা, বিদেশি বিনিয়োগকে উৎসাহিত করা এবং এলাকাটিকে উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করা।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার (পারিশ্রমিক ও সুযোগ-সুবিধা) আইন-২০২৪’ সম্পর্কে তিনি বলেন, এটি মূলত প্রচলিত ইংরেজির বাংলা সংস্করণ এবং এই সংস্করণে কোনো পরিবর্তন নেই। এর আগে এই আইনের ইংরেজি ভার্সন অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একজন বিচারপতি যে বেতন-ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা পান, প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্য নির্বাচন কমিশনাররাও সেই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। এ আইনটিই পুনরায় বাংলায় করা হয়েছে। সেটির নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে।