রাজধানীবাসীর জন্য স্বস্তির পরিবহন হয়ে ওঠা মেট্রোরেলের টিকিটে ভ্যাট বসতে যাচ্ছে, এতে টিকিটের দাম বাড়তে পারে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এমন তথ্য জানালেও সরকার বিষয়টি এখনও জানে না।
শুক্রবার সকালে রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউয়ে আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের ঈদ উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানে এ প্রসঙ্গে কথা বলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘হঠাৎ করে মেট্রোরেলের ভাড়ায় ১৫% ভ্যাট জুলাই থেকে বাড়বে, এই ঘোষণা কে দিল- এ সম্পর্কে আমরা কিছু জানি না। এটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলাপ করব।
‘একটা বিশেষ সেবাধর্মী গণপরিবহন মেট্রোরেল। মানুষ এর সুবিধা পাচ্ছে। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত হওযার আগেই হুট করে কারা এ ধরনের খবর দিলেন আমি জানি না।’
আগেরদিন বৃহস্পতিবারই ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর পাঠানো এনবিআরের ভ্যাট বিভাগের দ্বিতীয় সচিব ব্যারিস্টার মো. বদরুজ্জামান মুন্সীর সই করা চিঠিতে মেট্রোর টিকিটে ভ্যাট বসানো সংক্রান্ত নির্দেশনা দেয়া হয়।
ওই চিঠির তথ্যানুযায়ী, এনবিআর ভ্যাট মওকুফে অপারগতা প্রকাশ করায় আগামী অর্থ বছর অর্থাৎ আসন্ন ১ জুলাই থেকে মেট্রোরেলের টিকিটে ভ্যাট বসছে। মেট্রোরেলের টিকিটের ওপর এখন ভ্যাট মওকুফ আছে। তবে নির্দেশনা অনুসারে ১৫ শতাংশ ভ্যাট বসতে যাওয়ায় টিকিটের দামও ১৫ শতাংশ বাড়তে পারে।
ভ্যাট বিভাগের আদেশে বলা হয়েছে, রূপকল্প-২০৪১ অনুযায়ী উন্নত দেশের কাতারে যাওয়ার লক্ষ্য সামনে রেখে দেশে বিভিন্ন ধরনের উন্নয়নমূলক কার্যক্রম চলছে। সে জন্য সরকারকে প্রতিনিয়ত অর্থের জোগান দিতে হচ্ছে, যা মূলত আহরিত হচ্ছে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ করের মাধ্যমে। দেশীয় শিল্পের বিকাশ, আমদানি বিকল্প পণ্য উৎপাদনে সক্ষমতা বৃদ্ধি, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের বিকাশ ইত্যাদি লক্ষ্য সামনে রেখে সময়ে সময়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর অব্যাহতি সুবিধা দেয়া হয়ে থাকে।
এতে বলা হয়, উন্নয়নের বিপুল কর্মযজ্ঞে অর্থের জোগান অব্যাহত রাখাসহ দেশের এলডিসি উত্তরণ এবং কর-জিডিপি অনুপাত কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় উন্নীত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন খাতের সক্ষমতা বিবেচনায় নিয়ে প্রদত্ত অব্যাহতি সুবিধা ক্রমান্বয়ে প্রত্যাহার করা হচ্ছে। অর্থাৎ অব্যাহতির ক্ষেত্র সংকুচিত করা হচ্ছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, এ বাস্তবতায় ২৮ ডিসেম্বর, ২০২২ থেকে ৩০ জুন, ২০২৪ পর্যন্ত যে মূসক অব্যাহতি দেয়া হয়েছিল, মেয়াদ শেষে তা আবারও অব্যাহতি দেয়ার ক্ষেত্রে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড অপারগতা জানিয়েছে।
২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চালু হয় হয় উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেল। আর গত বছর থেকে চালু হয় মতিঝিল থেকে উত্তরা মেট্রোরেল। গড় হিসাবে এখন দিনে আড়াই লাখ যাত্রী এতে যাতায়াত করে।