মৌলভীবাজারের জুড়ীতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একই পরিবারের ছয়জনের মৃত্যুর ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার দায়ে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পবিস) তিনজন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে এক কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করেছে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ।
পল্লী বিদ্যুতের মৌলভীবাজার আঞ্চলিক কার্যালয়ের মহাব্যবস্থাপক এ বি এম মিজানুর রহমান বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
সাময়িক বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তারা হলেন পূর্ব গোয়ালবাড়ী এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্বে থাকা পল্লী বিদ্যুতের বড়লেখা কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক সোহেল রানা চৌধুরী, সহকারী মহাব্যবস্থাপক আশরাফুল হুদা ও জুড়ী কার্যালয়ের ইনচার্জ রেজাউল করিম তালুকদার।
এর মধ্যে সোহেল রানা চৌধুরীকে পবিসের সিলেটে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর কার্যালয়, আশরাফুল হুদাকে কুমিল্লার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর কার্যালয় এবং রেজাউলকে বরিশালের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।
চাকরিচ্যুত কর্মচারী হলেন শিক্ষানবিশ লাইনম্যান মো. আশিক।
এ বিষয়ে পল্লী বিদ্যুতের মৌলভীবাজার আঞ্চলিক কার্যালয়ের মহাব্যবস্থাপক এ বি এম মিজানুর রহমান জানান, এ দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের আরইবির পক্ষ থেকে প্রধান প্রকৌশলী বিশ্বনাথ শিকদারকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কমিটির সদস্যরা সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করেন। কমিটির সদস্যদের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে চার কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) মানবসম্পদ বিভাগের পরিচালক একরামুল হাসান স্বাক্ষরিত চিঠিতে চার কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানান মহাব্যবস্থাপক।
এর আগে মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় বসতঘরে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে একই পরিবারের ছয়জনের মৃত্যু হয়।
উপজেলার গোয়ালবাড়ি এলাকার ভাঙারপার গ্রামে গত ২৬ মার্চ ভোরে এ ঘটনা ঘটে।
গোয়ালবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ুম জানান, ভোর ৫টার দিকে ফয়জুর রহমানের বাড়িতে বৈদ্যুতিক লাইন ছিঁড়ে পড়ে।
বিদ্যুতায়িত হয়ে ঘটনাস্থলেই ফয়জুর রহমান (৫০), তাঁর স্ত্রী শিরি বেগম (৪৫), মেয়ে সামিয়া সুলতানা (১৪), সাবিনা আক্তার (১১) ও ছেলে সায়েম আহমদ (৭) মারা যায়। গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় সোনিয়াকে প্রথমে সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। উন্নত চিকিৎসার জন্য রাতে ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে ওই দিন রাতে সে মারা যায়।