চট্টগ্রামে সাত বছর বয়সী এক শিশুর বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে মীর হোসেন নামে এক যুবক গ্রেপ্তার হয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, ওই শিশুটিকে ধর্ষণের পর হত্যা করেছেন মীর হোসেন।
শিশুটির মরদেহ উদ্ধারের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মঙ্গলবার ভোরে নগরীর বাকলিয়া থানাধীন বউ বাজার পুলিশ বিট এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশের কাছে ঘটনার কথা স্বীকার করেছেন মীর হোসেন। পুলিশকে তিনি জানিয়েছেন, ওই শিশুটিকে চিপস ও চকলেট কিনে অপহরণ করেন তিনি। পরে তাকে পাহাড়ে নিয়ে মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ করা হয়। এরপর তাকে হত্যা করেন তিনি। পরে ভ্যানগাড়িতে করে শিশুটির মরদেহ বস্তায় ভরে ফলমণ্ডি এলাকার একটি ডাস্টবিনে ফেলে রেখে চলে যান তিনি।
আটককৃত যুবকের বরাতে মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান নগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মোস্তাফিজুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘সোমবার রাতে শিশুটির বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধারের পর পুলিশের বিশেষ টিম ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও আসামি ধরতে মাঠে নামে। এরপর মঙ্গলবার ভোরে হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামি মীর হোসেনকে নগরীর বাকলিয়া থানাধীন বউ বাজার পুলিশ বিট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রথামিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ধর্ষণ ও হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।’
পরবর্তীতে ঘটনায় ব্যবহৃত একটি ভ্যানগাড়ি, একটি পাটের বস্তা ও একটি টুপি উদ্ধার করা হয় বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
৩৪ বছর বয়সী মীর হোসেন কুমিল্লার নাগরিক। বর্তমানে চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়া বউ বাজার এলাকায় বসবাস করছেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, নিহত শিশুটি তার মায়ের সঙ্গে রোববার (৩১ মার্চ) রাত ৯টার দিকে আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতাল এলাকায় পরিত্যক্ত কাগজ-বোতল সংগ্রহ করে। পরে তাকে রেখে তার মা রাত ১টার দিকে আন্দরকিল্লা মসজিদের উত্তর গেটে যান। রাত দেড়টার দিকে এসে রেখে যাওয়া স্থানে এসে মেয়েকে আর দেখতে পাননি তিনি। আশপাশের এলাকাসহ সম্ভাব্য সব জায়গা খুঁজেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরদিন সোমবার রাতে পুলিশ কোতোয়ালী থানার বিআরটিসি ফলমণ্ডি এলাকার একটি ডাস্টবিন থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করার পর তার মা মেয়ের মরদেহ শনাক্ত করেন।
কোতোয়ালী থানার ওসি এসএম ওবায়দুল হক বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আসামি মীর হোসেন শিশুটিকে অহরণ করে নিয়ে গিয়ে প্রথমে ধর্ষণের পর হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। পুলিশকে তিনি জানিয়েছেন, তিনি রাতের বেলা বিভিন্ন স্থান থেকে ভাঙ্গারি মালামাল সংগ্রহ করে পরে বিক্রি করেন।
‘ঘটনার দিন আন্দরকিল্লা এলাকায় ভুক্তভোগী শিশুটিকে চিপস ও চকলেট কিনে দিয়ে টাইগার পাস এলাকায় বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার লোভ দেখান। এক পর্যায়ে তাকে রিকশা করে টাইগার পাস এলকার পাহাড়ের নিচে নিয়ে মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ ও পরে হত্যা করেন।’