জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে নিখোঁজের চার দিন পর পরিত্যক্ত সেপটিক ট্যাংক থেকে এক কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
উপজেলার ডোয়াইল ইউনিয়নের বালিয়া গ্রামে রোববার বিকেলে রাজমিস্ত্রি আপেল মিয়ার বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
প্রাণ হারানো উজ্জ্বল মিয়া (১৪) সরিষাবাড়ীর ডোয়াইল ইউনিয়নের চরবালিয়া গ্রামের উশর আলীর ছেলে। সে রাজমিস্ত্রির হেলপার ছিল।
এ ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে দুজনকে আটক করেছে পুলিশ। তারা হলো চরবালিয়া গ্রামের আবু সাইদ ও সাদ্দাম হোসেন।
উজ্জ্বলের ফুফাতো ভাই মিজানুর রহমান বলেন, ‘বালিয়া গ্রামের পরান মিয়া ইমুতে কল করে ইফতারের সময় বুধবার সন্ধ্যায় উজ্জ্বলকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে উজ্জ্বলের নম্বর থেকে তার বোন অন্তরাকে কল করে বলা হয় যে, বিকাশে পাঁচ হাজার টাকা পাঠাতে হবে, টাকা না দিলে উজ্জ্বলকে মেরে ফেলা হবে। এরপর পরিবারের সঙ্গে উজ্জ্বলের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।’
মিজানুর রহমান আরও বলেন, ‘তার (উজ্জ্বল) বন্ধুরা অধিকাংশ মাদকাসক্ত ও কিশোর গ্যাং হিসেবে এলাকায় পরিচিত। রাজমিস্ত্রি আপেলের নির্মাণাধীন আধা পাকা ঘরে ওই গ্যাং প্রায় সময় আড্ডা দিত।’
উজ্জ্বলের বোন অন্তরা বলেন, ‘ভাইকে কয়েক দিন ধরে খুঁজেছি। কোনো জায়গায় পাওয়া যায়নি। আমরা থানায় অভিযোগ দিয়েছিলাম।
‘আমি রোববার দুপুরে বাড়ির সামনে কাজ করার সময় হঠাৎ এমন দুর্গন্ধ নাকে আসল। দুর্গন্ধ পেয়ে ট্যাংকির মুখ খোলার পরে আমার ভাইয়ের লাশ দেখতে পাই। আমি ভাই হত্যার বিচার চাই। ফাঁসি চাই হত্যাকারীদের।’
এ ঘটনার পর উজ্জ্বলের বাবা উশর আলী সরিষাবাড়ী থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। এরপর ঘটনার তদন্তে কয়েকটি স্থানে পুলিশ অভিযান চালিয়েছে।
উশর আলী বলেন, ‘আমার ছেলেডারে ওর বন্ধুরা মাইরা ফেইলা বাড়ির পাশে ট্যাংকির মধ্যে রাইখা গেছে। আমি ছেলে হত্যার উপযুক্ত বিচার চাই।’
জামালপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সোহরাব হোসাইন বলেন, ‘গত ২৭ মার্চ আমাদের কাছে একটি অভিযোগ আসে। এ অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করি।’
তিনি আরও বলেন, ‘যে মোবাইলে উজ্জ্বলের মুক্তিপণ চেয়ে কল দেয়া হয়, আমরা নম্বরটি ট্র্যাকিং করি। ওই নাম্বারটি বন্ধ ছিল। আজ (রোববার) একটি পরিত্যক্ত টয়লেটের ট্যাংকি থেকে মরদেহ উদ্ধার করেছি।
‘এ সময় সন্দেহভাজন দুজনকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে ৷’