পটুয়াখালীতে একটি অ্যাম্বুলেন্সের চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স আটকে রাখাকে কেন্দ্র করে হাসপাতালে যেতে দেরি হওয়ায় এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
পটুয়াখালীর হেতালিয়া বাঁধঘাট এলাকায় পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কে রোববার রাতে এ ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনার পর পুলিশের ওপর হামলাসহ মহাসড়ক অবরোধ করে রাখা হয়েছিল।
মারা যাওয়া বেবি বেগম আমতলী উপজেলার কলাগাছিয়া গ্রামের শহিদুল ইসলামের স্ত্রী।
শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এ ঘটনার সময় ট্রাফিক পুলিশ অ্যাম্বুলেন্স আটকে রেখেছে- এমন গুঞ্জন ছড়িয়ে পরলে বিক্ষুব্ধ স্থানীয় লোকজন ট্রাফিক পুলিশ সদস্য জাকিরের ওপর হামলা চালায়। প্রায় এক ঘণ্টাব্যাপী পটুয়াখালী- কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখা হয়।’
জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) শাখার ইনচার্জ একেএম আজমল হুদার নেতৃত্বে একদল পুলিশ সদস্য এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহত ট্রাফিক পুলিশ সদস্যকে উদ্ধার করে পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ (পমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বেবি বেগমের ভাই মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘রোববার বিকেলে বেবি অসুস্থ হয়ে পড়লে আমি অ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইভারকে কল দিই। ড্রাইভার প্রায় দুই ঘণ্টা পর আসে। পরে অ্যাম্বেুলেন্স আসার পর ড্রাইভারকে জিজ্ঞেস করি, ‘এতো দেরি কেন?’ সে বলে পুলিশ লাইসেন্স রেখে দিয়েছে।
‘পরে কলাগাছিয়া থেকে রোগী নিয়ে যাওয়ার মধ্যে রাস্তায় হেতালিয়া বাঁধঘাট এলাকায় অ্যাম্বুলেন্স দাঁড় করেন ড্রাইভার। সেখানে ট্রাফিক সার্জেনকে ড্রাইভার খুঁজতে থাকেন। প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে ড্রাইভার অ্যাম্বুলেন্সের কাছে না আসায় আমি ড্রাইভারকে কল দিই। এর মধ্যে অ্যাম্বুলেন্সের ভেতরেই আমার বোন বেবির মৃত্যু হয়।’
ড্রাইভার বিজন হাওলাদার বলেন, ‘সাইরেন বাজিয়ে পটুয়াখালী থেকে আমতলীর কলাগাছিয়ায় মুমূর্ষু রোগী বেবি বেগমকে নিতে যাই। এ সময় হেতালিয়া বাঁধঘাট এলাকায় দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক সার্জেন মাখন লাল ড্রাইভিং লাইসেন্স ও গাড়ির কাগজপত্র দেখতে চান। পরে ড্রাইভিং লাইসেন্স রেখে দেন ট্রাফিক সার্জেন্ট। সার্জেন্ট মাখন আমাকে বলেন, ‘রোগী নিয়ে যাওয়ার পথে আমার সঙ্গে দেখা করে যাবে।’
কিছুক্ষণ পর ড্রাইভার বিজন হাওলাদার রোগী নিয়ে হেতালিয়া বাঁধঘাট ট্রাফিক পুলিশ বক্সের সামনে এসে অ্যাম্বুলেন্স দাঁড় করান। এ সময় ট্রাফিক সার্জেন্ট মাখন লালকে প্রায় আধাঘণ্টা ধরে খুঁজতে থাকেন বিজন। এর মধ্যে রোগী বেবি বেগম অ্যাম্বুলেন্সের ভেতরে মারা যান।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, ট্রাফিক পুলিশ রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স আটকে রেখেছে- এমন গুজবে স্থানীয় লোকজন উত্তেজিত হয়ে ঘটনাস্থল থেকে খানিক দূরে থাকা ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় মাসুম নামের এক ট্রাফিক পুলিশ সদস্য আহত হন।
এই ঘটনায় পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় রাত ১১টার দিকে বেবি বেগমের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ।