ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুককে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে।
বিমানবন্দরে অবতরণের পরপরই ভুটানের রাজা ও রানি জেৎসুন পেমাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও তার স্ত্রী ড. রেবেকা সুলতানা। খবর বাসসের
এর আগে ভুটানের রাজা ও রানিসহ তাদের সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিশেষ বিমানটি সকাল ১০টা ১১ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছায়।
রাষ্ট্রীয় অতিথিকে অভ্যর্থনার অংশ হিসেবে রাজা বিমান থেকে নামার পর ২১ বার তোপধ্বনি দেয়া হয়। পরে সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল অতিথিকে অভিবাদন জানায়।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও ভুটানের রাজা অভিনন্দন মঞ্চে নির্ধারিত স্থানে দাঁড়ানোর পর দুই দেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। পরে রাজা প্যারেড পরিদর্শন করেন। কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন প্রেজেন্টেশন লাইনে অপেক্ষারত বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলকে পরিচয় করিয়ে দেন। অন্যদিকে ভুটানের রাজা ও তার প্রতিনিধিদের পরিচয় করিয়ে দেন।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ আমন্ত্রণে ৪ দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকায় এসেছেন ভুটানের রাজা ও রানি।
মহান স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করা ছাড়াও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন তারা।
বাংলাদেশের সঙ্গে ভুটানের সম্পর্ক ঐতিহাসিক। ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার প্রথম স্বীকৃতিদানকারী দেশ ভুটান।
দীর্ঘ ১১ বছর পর বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ঢাকায় আসলেন ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক।
ঢাকায় পৌঁছে রাজা প্রথমেই যাবেন ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে। সেখানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাবেন তিনি। সেখান থেকে যাবেন হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে। সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যাবেন রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে স্বাগত জানাবেন।
এরপর রাজা ও প্রধানমন্ত্রী দুই দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে আনুষ্ঠানিক বৈঠকে অংশ নেবেন। বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সার্বিক দিক আলোচনা-পর্যালোচনা করা হবে। এতে বিশেষকরে ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানি, বাণিজ্য, পর্যটন, কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন বিষয় গুরুত্ব পাবে বলে জানা গেছে।
বৈঠক শেষে দুই দেশের মধ্যে তিনটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর এবং একটি সমঝোতা নবায়ন হওয়ার কথা রয়েছে।
সফরের দ্বিতীয় দিন ২৬ মার্চ ভোর সাড়ে পাঁচটায় সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে যাবেন ভুটানের রাজা। এ সময় সেখানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও উপস্থিত থাকবেন। রাজা মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর শহিদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন এবং সেখানে একটি বৃক্ষ রোপণ করবেন।
স্মৃতিসৌধ থেকে ফিরে সকাল সাড়ে ১০টায় রাজা রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে যাবেন। সেখানে ভারত থেকে ফিরে এসে বাংলাদেশে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হওয়া ভুটানের রোগী কারমা দেমার সঙ্গে কথা বলবেন।
২৬ মার্চ বিকেলে রাজা ও রানি বঙ্গভবনে মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। পরে বঙ্গভবনে ইফতার ও নৈশভোজে অংশ নেবেন রাজা-রানিসহ অতিথিরা।
২৭ তারিখ সকালে পদ্মা সেতু পরিদর্শনে যাবেন ভুটানের রাজা। ২৮ মার্চ তিনি ঢাকা ত্যাগ করবেন বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।