পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় মুগ ডাল ক্ষেতে প্রয়োগ করা বিষ মেশানো ধান খেয়ে কবুতরসহ অর্ধশতাধিক বন্যপাখির মৃত্যু হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ওই এলাকার কবুতর খামারিরাও। রোববার উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের পশ্চিম হাজিপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
এনিমেল লাভার্স অফ পটুয়াখালীর কলাপাড়া শাখার টিম লিডার রাকায়েত আহসান বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বন্যপাখি ও কবুতর মারা যাওয়ার খবরের সত্যতা পেয়েছি। বন বিভাগকে খবর দিয়ে এ বিষয়ে স্থানীয় কৃষকদের সচেতন করেছি।’
ক্ষতিগ্রস্ত কবুতর খামারি মেসকাত মিয়া বলেন, ‘আমি পড়ালেখার পাশাপাশি কবুতর পালন করি। রোববার সকালে প্রায় ৪২টি কবুতর আমার খামার থেকে ছেড়ে দেই। দুপুর ১২টার দিকে বাড়ি এসে দেখি ২২টি কবুতর মারা গেছে।
‘আমার বাড়ির পেছনে মুগ ডাল চাষ করেছেন মেহেদী শেখ। তিনি ক্ষেতে ধানের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে ছিটিয়ে দিয়েছেন, যাতে কোনো পাখি বা কবুতর ক্ষেতে না বসে। তার ক্ষেত থেকে কবুতর বাড়িতে আসার পর পরই সেগুলোর মৃত্যু হয়। শুধু আমার কবুতরই নয়, এই এলাকার অনেক কবুতরসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখির মৃত্যু হয়েছে ওই ক্ষেতে ছিটানো ধান খেয়ে।’
একই এলাকার অপর কবুতর খামারি ইব্রাহিম মিয়া বলেন, আমার খামারের ১০টি কবুতর মারা গেছে। মারা যাওয়া অনেক কবুতরের ছোট ছোট বাচ্চা রয়েছে। এখন এই বাচ্চা কবুতরের অবস্থাও কাহিল। আমি অনেক লোকসানে পড়ে গেলাম।
‘মেহেদীর ক্ষেতে ছিটানো বিষযুক্ত ধান খেয়েই কবুতরগুলো মারা গেছে। ক্ষেতে বিষ দেয়ার আগে আমাদের জানালে আমরা কবুতরগুলো আটকে রাখতাম। এছাড়া ঘুঘু, শালিকসহ বিভিন্ন বন্যপাখিও মারা গেছে।’
একই কথা জানিয়েছেন মনির, সবুজ, ছালেকসহ বেশ কয়েকজন কবুতর খামারী।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কৃষক মেহেদী শেখ। তিনি বলেন, ‘আমি নিজেও কবুতর পালন করি। আমি এই কাজ করিনি।’
জানতে চাইলে কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা বন বিভাগের সদস্য কামরুল আলম বলেন, ‘আমরা এখানে এসে জানতে পেরেছি যে বেশ কয়েকজন খামারির কবুতর মারা গেছে। কিছু বন্য পাখিরও মৃত্যু হয়েছে। ডাল ক্ষেতে বিষ প্রয়োগের ফলে এসব পাখির মৃত্যু হয়েছে এবং একজন কৃষককে অভিযুক্ত করেছেন এই এলাকার খামারিরা। আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করছি।’