ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কে নারায়ণগঞ্জের সিদ্বিরগঞ্জের শিমরাইলে রোড ডিভাইডারের দুই পাশে মই দিয়ে যাত্রীদের পারাপারের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর মইয়ের মালিককে আটক করেছে পুলিশ।
রোববার রাত আটটার দিকে শিমরাইল এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। একই সঙ্গে জব্দ করা হয়েছে তিন ফুটের দুইটি মই। এর আগে দুপুরে মই দিয়ে যাত্রী পারাপারের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
আটক ২৬ বছর বয়সী রবিউল ইসলাম চট্টগ্রামের পূর্ব দুগাপুর এলাকার আলতাব হোসেনের ছেলে। তবে থাকেন সিদ্বিরগঞ্জের শিমরাইলে। পেশায় গাড়ির চালক।
হাইওয়ে পুলিশের শিমরাইল পুলিশ ফাড়ির পরির্দশক শরফুদ্দিন আহাম্মেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, আটক রবিউল গাড়ির চালক। তবে কিছুদিন ধরে তিনি গাড়ি চালানো বন্ধ করে দিয়ে বেকার ছিলেন। রোববার সকাল থেকে ডিভাইডারের দুই পাশে মই দিয়ে বাস থেকে নামা যাত্রীদের পারাপার করেন। এ জন্য জনপ্রতি পাঁচ টাকা করে নেয়া শুরু করেন। রাত আটটার দিকে শিমরাইল এলাকায় ঘোরাঘুরি করা অবস্থায় তাকে আটক করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, যানজট এড়াতে ঢাকামুখী যানবাহনগুলো চলাচল করার জন্য গত বছর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে নারায়ণগঞ্জের অংশে চার লেনে রোড ডিভাইডার দিয়ে ফাঁকাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়। ফলে দূরপাল্লার যানবাহনগুলো সরাসরি ঢাকায় যেতে পারে। এ লেনে সড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের কাঁচপুর ব্রিজ থেকে মৌচাক এলাকায় ছাড়া যাত্রী ওঠা নামার ব্যবস্থা নেই। এখানে উঁচু বিভাজক দিয়ে দুই লেন বিভক্ত করে দেয়া হয়েছে।
তবে আঞ্চলিক যানবাহন চলাচলের জন্য খোলা রাখা রাখা হয়েছে বাকি দুই লেন। দূরপাল্লার যাত্রীদের আঞ্চলিক লেনে আসতে হলে কাঁচপুর ব্রিজের সিদ্ধিরগঞ্জের পারে নেমে হেঁটে কিছুটা সামনে নামতে হয়। এরপর সেখান থেকে আঞ্চলিক সড়কের যানবাহনে উঠতে যেতে হয়। আর এই সুযোগ নিয়েছেন রবিউল।
রোববার সকাল থেকে মহসড়কের শিমরাইলের সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর অফিসের সামনে ছোট দুটি মই দিয়ে রাস্তার ডিভাইডারের দু পাশে রেখে যাত্রীরা পারাপার শুরু করেন। এতে দূরপাল্লার যানবাহন থেকে যাত্রীরা নামার পর হাঁটার ভয়ে তার মই দিয়ে ডিভাইডারের ওপরে উঠে, আবার আরেকটি মই দিয়ে নিচে নামে রাস্তা পার হয়েছেন। এর বিনিময়ে একজনের কাছ থেকে রবিউল দিনভর ৫ টাকা করে নেন।
গত কয়েকদিন ধরে যাত্রীরা এভাবেই তার মই দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার হচ্ছিলেন। দুপুরে একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর মই নিয়ে পালিয়ে যান রবিউল। তার সঙ্গে আরও একজন এ কাজে যুক্ত ছিলেন।
কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা (ওসি) জানান, রাস্তার ডিভাইডারের দু পাশে মই দিয়ে যাত্রী পারাপারে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়ালে পুলিশ রবিউলকে খুজঁতে শুরু করে। ততক্ষণে হয়তো সে নিজে ভিডিও দেখে ফেলে, এজন্য পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ বিকেল থেকে খুঁজে বেড়িয়ে রাত আটটার দিকে তাকে আটক করে।
ওসি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে রবিউল জানিয়েছে, শিমরাইলেএকটি চায়ের দোকানে বসে থাকা অবস্থা যাত্রীদের হাঁটা দেখে হঠাৎ তার মাথায় টাকা কামানোর এ বুদ্ধি আসে। তবে ভুল করেছে বলেও সে স্বীকার করেছে। তার বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
এদিকে সড়কের মাঝখানে মই বসিয়ে যাত্রী পারাপারের দৃশ্য দেখে আগেই পুলিশকে ফোন করার কথা জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী শাহানা ফেরদৌস।
তিনি জানান, ঈদকে সামেন এ চক্র টাকা টাকা কামানো উপায় খুঁজে বের করেছে। এ দৃশ্য দেখার পর আনসার সদস্যদের মাধ্যমে তাদের মই জব্দ করা হয়। তবে ফের মই বানিয়ে এ কাজ শুরু করে চক্রটি। বিষয়টি আবার দেখার পর পুলিশের সাহায্য চাওয়া হয়।