‘বিগত নির্বাচনে একটি শক্তিধর রাষ্ট্র সব ষড়যন্ত্র করার পরও সফল হতে পারেনি। কারণ বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন ও আদর্শ এদেশের সব মানুষের অন্তরের অন্তস্থলে আছে। অন্যরা যত প্রলোভনই দেখাক তাদেরকে মানুষ বিশ্বাস করে না। আর সেজন্যই বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন টিকে আছে, বাংলাদেশ টিকে আছে, আওয়ামী লীগ টিকে আছে, অসাম্প্রদায়িকতা টিকে আছে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল শনিবার এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন।
রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘বাঙালির অস্তিত্বের উৎস বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক এই আলোচনার আয়োজন করে সম্প্রীতির বাংলাদেশ।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাকসুদ কামাল বলেন, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরপরই বাংলাদেশের শিক্ষানীতি করার জন্য ড. কুদরত-ই-খুদাকে প্রধান করে কমিশন গঠন করেন৷ ড. কুদরত-ই-খুদা সেদিন যে শিক্ষানীতি দিয়েছিলেন, যদি বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকতেন এবং সেই শিক্ষানীতি যদি প্রয়োগ হতো তাহলে বহু আগেই সিঙ্গাপুরের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক যে স্থিতিশীলতা সেটি বাংলাদেশ অর্জন করতো।
‘শিক্ষাক্ষেত্রেও সিঙ্গাপুরের যে অগ্রগতি সেটি বহু আগেই বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্র অর্জন করতে পারত। কিন্তু ঘাতকরা সেটি হতে দেয়নি। ঘাতকরা চেয়েছে বাংলাদেশ হবে পাকিস্তানের মতো অনেকটা মৃত অকার্যকর রাষ্ট্রের মতো। তবে যে দলের অস্তিত্বের মধ্যে আছে বঙ্গবন্ধু, যে দলের উৎস হল বাঙালি জাতীয়তাবাদ আর অসাম্প্রদায়িকতা সেই দলের আদর্শকে হত্যা করা যায় না।’
সভাপতির বক্তব্যে পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘সাধারণ মানুষের আকাঙ্ক্ষার মধ্যেও বঙ্গবন্ধুর গবেষণা চলছে। তিনি এখনও আমাদের কাছে অতিপ্রয়োজনীয়। একটি জাতিকে তিনি মুক্ত করেছেন অপরিসীম দুঃখ-কষ্ট ও ত্যাগ সহ্য করে। অবর্ণনীয় নির্যাতন সহ্য করে তিনি বাঙালির স্বাধীনতা এনেছেন। বাঙালির জীবনে অনেক বরেণ্য ব্যক্তি এসেছেন। কিন্তু সবাইকে ছাপিয়ে বঙ্গবন্ধু শ্রেষ্ঠ বাঙালি হয়েছেন।
‘স্বাধীনতা এনে দিয়ে তিনি বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছেন বাঙালি পিছিয়ে পড়া জাতি নয়। বিশ্বের মাঝে বাঙালি জাতিকে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সাহস দিয়েছেন। তিনি জীবনভর বৈষম্যহীন একটি জাতির কথা বলে গেছেন। ভাষার জন্য লড়াই করেছেন, জাতিসত্তার জন্য লড়াই করেছেন। ধর্মনিরপেক্ষতার কথা তিনি মুখেই বলেছেন এমনটা নয়। ধর্মনিরপেক্ষতার কথা তিনি সংবিধানেও সংযোজন করেছেন।’
সম্প্রীতি বাংলাদেশের সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীলের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. বিমান চন্দ্র বড়ুয়া, মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হাসানুজ্জামান খান, খ্রীষ্টান ধর্মযাজক রেভারেন্ড মার্টিন অধিকারী, সিনিয়র সাংবাদিক ও কবি মুস্তাফিজ শফি, ডিক্যাব সভাপতি নুরুল ইসলাম হাসিব, বঙ্গবন্ধু-গবেষক মেজর (অব.) আাফিজুর রহমান প্রমুখ।