বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ফরিদপুরে ২২০ টাকা ফিতেই পুলিশে চাকরি পেলো ২২ জন

  • মাহবুব পিয়াল, ফরিদপুর   
  • ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ২২:১০

অভাবের সংসারের মাহিন্দ্রা চালক বাবার মেয়ে তন্দ্রা আক্তারী (১৮)। একটি সরকারি চাকরি ছিল তার জন্য দুঃসাধ্য। মাহিন্দ্রা চালক বাবার স্বপ্ন পূরণে আর পরিবারের অস্বচ্ছলতার মাঝে তার যোগ্যতা ও মেধার ভিত্তিতে বাংলাদেশ পুলিশের ট্রেইনি কনস্টেবল পদে নিয়োগে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হয়েছে। তার মতো এ বছরে ফরিদপুরে আরও ২২ জন মাত্র ২২০ টাকায় সরকারি ফির মাধ্যমে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হয়েছে। অস্বচ্ছল পরিবারের বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণের সারথি যেন প্রত্যেকেই।

ফরিদপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি মাসে পুলিশের কনস্টেবল পদে ফরিদপুর থেকে ১২১১ জন আবেদন করেন। এরপর প্রতিটি কঠিন ধাপ অতিক্রম করে লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ৩৪৩ জন এবং ২৮ জন উত্তীর্ণ হয়। পরে মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে ২৩ জনকে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত করা হয়। পুলিশ সুপার মো. আব্দুল জলিল জানিয়েছেন- প্রত্যেকেই মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হয়েছে।

তাদের মধ্যে তন্দ্রা আক্তারী একমাত্র নারী কনস্টেবল হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে। সে ফরিদপুর জেলা সদরের ঘনশ্যামপুর গ্রামের তোরাব বিশ্বাসের মেয়ে। তার এমন খবরে হাসি ফুটেছে বাবা-মা সহ আত্মীয়-স্বজনদের মুখে।

আবেগাপ্লুত হয়ে তন্দ্রা আক্তারী বলেন- একজন মাহিন্দ্রা চালকের মেয়ে পুলিশে চাকরি মানে অনেক কিছু। মানুষ বলাবলি করেছিল টাকা ছাড়া পুলিশে চাকরি হবে না। আমার বাবার পক্ষে ৮/১০ লাখ টাকা দিয়ে চাকরি দেয়া সম্ভব ছিল না। কিন্তু আমার যোগ্যতার মূল্যায়ন করা হয়েছে, মাত্র ২২০ টাকার বিনিময়ে চাকরিটা হয়েছে। একজন পুলিশ সদস্য হিসেবে আমার বাবার পাশে দাড়াতে পেরে আমি গর্বিত। গত মঙ্গলবার দুপুরে ফরিদপুর পুলিশ লাইনসে গিয়ে দেখা যায়, চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত ২৩ জন একত্রে জড়ো হয়েছে। সেসময় ট্রাক চালক বাবার ছেলে তামীম মন্ডল চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। সে জেলা শহরের রঘুনন্দন এলাকার ট্রাক চালক সুমন মন্ডলের ছেলে। মাত্র ২২০ টাকায় চাকরি হওয়ার ও বাবার অক্লান্ত পরিশ্রমের গল্প তুলে ধরে সে।

২৩ জনের মধ্যে অধিকাংশের গল্পটা যেন অভাবের সঙ্গে যুদ্ধ জয়ের। মৌখিক পরীক্ষায় বন্ধুর পোশাক ধার করে অংশগ্রহণ করেছিল সিয়াম মোল্যা। তার বাবা লাবলু মোল্যা পেশায় একজন কৃষি শ্রমিক। অনুভূতি জানিয়ে সিয়াম বলেন, ছোট সময় থেকে স্বপ্ন ছিল পুলিশ হওয়ার। বাবার সঙ্গে কৃষি কাজ করে পড়ালেখা করেছি। তাই আজ আমার মেধাকে মূল্যায়ন করা হয়েছে, এ সাফল্য আমার বাবার হাত ধরেই পেয়েছি।

এসব বিষয়ে কথা হয় ফরিদপুরের পুলিশ ট্রেইনি কনস্টেবল পদের নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি পুলিশ সুপার মো. আব্দুল জলিলের সঙ্গে। তিনি বলেন- পুলিশের নিয়োগে অনেক সময় নানা বিষয় নিয়ে অভিযোগ উঠলেও ফরিদপুরে মেধা, যোগ্যতার ভিত্তিতে নির্বাচিত হয়েছে। আমরা কারও পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড দেখে নিয়োগও দেইনি। যারা নিয়োগ পেয়েছে প্রত্যেকেরই মেধা ও যোগ্যতার অনুসারে দেওয়া হয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর