সিজারে জন্ম নেয়া নবজাতক চুরি করে নিয়ে পালিয়ে যায় চোরের দল। এ ঘটবার ৭ মাস পর উদ্ধার করা হয়েছে ওই নবজাতককে।
কুমিল্লা পুলিশ বুর্যো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সদস্যদের অভিযানে সোমবার রাজধানী ঢাকা থেকে ওই নবজাতক উদ্ধার করা হয়।
নবজাতক চুরির এ ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে বাড়ির ভাড়াটিয়াসহ দুই নারীকে। তারা হলেন- কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার নিয়ামতপুর এলাকার জাকির হোসেনের স্ত্রী পারভীন ও বরুড়া উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের আব্দুল মালেকের মেয়ে জেসমিন।
পুলিশ জানায়, গত বছরের ১৩ এপ্রিল কুমিল্লা জেনারেল (সদর) হাসপাতালের টিকিট কাউন্টারের সামনে থেকে চারদিনের ওই নবজাতক চুরি হয়ে যায়। এ ঘটনায় নবজাতকের বাবা জসিম উদ্দীন কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। পরে পিবিআই মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায়।
গ্রেপ্তার আসামিদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, পারভীনের সঙ্গে জেসমিন কথোপকথনে জানান যে তার একটি নবজাতক ছেলে থাকলে ভালো হতো। পারভীন তার কথা শুনে বলেন- ৫০ হাজার টাকা দিলে তিনি একটি নবজাতক এনে দিতে পারবেন। পরে তারা পরিকল্পনা করেন যে নবজাতককে এখানে এনে দিলে জেসমিন তাকে নিয়ে পালিয়ে যাবেন।
নানু নুরজাহান বেগম শিশুটিকে নিয়ে হাসপাতালের বারান্দায় হাঁটাহাঁটি করার সময় তাদের বাসার ভাড়াটিয়া পারভীন নবজাতকের শারীরিক সমস্যার কথা বলে বড় ডাক্তার দেখানোর জন্য বলেন। নবজাতকের মাকে কিছু না জানিয়ে পারভীন নবজাতকসহ ওর নানুকে নিয়ে টিকিট কাউন্টারে যান।
এ সময় সেখানে উপস্থিত জেসমিন নুরজাহান বেগমকে বলেন, ‘বাচ্চা সঙ্গে থাকলে তাড়াতাড়ি টিকিট দেবে। কিন্তু আপনি বৃদ্ধ মহিলা। বাচ্চা কোলে টিকিট কাটতে আপনার কষ্ট হবে। ওকে আমার কোলে দেন।’
নুরজাহান বেগম সরল বিশ্বাসে নবজাতককে জেসমিনের কোলে দিয়ে টিকিট কাউন্টারের একপাশে দাঁড়ান। এই সুযোগে নবজাতককে নিয়ে জেসমিন পালিয়ে যান।
কিছুক্ষণ পর পারভীনকে টিকিট কাউন্টারের কাছে পেয়ে ওই মহিলার কথা জিজ্ঞাসা করলে তিনি তাকে দেখেননি বলে জনান।
এ অবস্থায় চারদিকে খোঁজাখুঁজি করেও নবজাতক এবং ওই নারীকে কোথাও না পেয়ে পুলিশকে অবহিত করা হয়। এ ঘটনার ৭ মাস পর পিবিআই নবজাতককে উদ্ধার করতে সক্ষম হলো।
পিবিআই কুমিল্লা জেলার পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘রাজধানী ঢাকার মহাখালী বাসস্ট্যান্ড থেকে সোমবার জেসমিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় নবজাতক তার কাছেই ছিল। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে জেসমিন স্বীকার করেন যে পারভীনের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে (৩০ হাজার টাকা পরিশোধ করে) শিশুটিকে তিনি কিনে নিয়েছেন। এ বিষয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা শেষে আদালতে পাঠানো হয়।’
প্রসঙ্গত, কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতাল থেকে এই নবজাতক চুরির ঘটনা নিয়ে ওই সময় নিউজবাংলায় সংবাদ প্রকাশ হয়েছিল।