দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঠাকুরগাঁও-২ আসনে জাতীয় পার্টি (জাপা) মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন নূরুন নাহার বেগম।
নির্বাচনে লাঙ্গল প্রতীকে ১ হাজার ৯৮৬ ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছিলেন এ প্রার্থী। তাকে জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনের জন্য মনোনয়ন দিয়েছে জাপা।
জাতীয় সংসদে ৫০টি সংরক্ষিত নারী আসনের মধ্যে ৪৮টিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী থাকলেও দুটিতে প্রার্থী দেয় জাপা। এর একটিতে সালমা ইসলাম ও অন্যটিতে জামানত হারানো নূরুন নাহার বেগমকে মনোনীত করে দলটি।
জাতীয় পার্টির যুগ্ম দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলম স্বাক্ষরিত সংগঠনের প্যাডের পাতায় বৃহস্পতিবার এ বার্তা নিশ্চিত করা হয়।
এদিকে নারী সংরক্ষিত আসনে নূরুন নাহারের মনোনীত হওয়ার খবরে জেলাজুড়ে মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ প্রার্থীকে অনেকে অভিনন্দন জানিয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। অনেকে আবার দলের অসহায়ত্বের কথাও বলেছেন।
কেউ কেউ মনে করছেন, জাতীয় পার্টিতে শক্ত নারী নেতৃত্ব নেই বলেই জামানত হারানো প্রার্থীকে আবার মনোনীত করে সুযোগ দেয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির ঠাকুরগাঁওয়ের সদস্য সচিব মাহবুব আলম রুবেল বলেন, ‘জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসন যেভাবে ক্ষমতাসীন দল ও শরিক দলের মধ্যে ভাগাভাগি হচ্ছে, এভাবে সঠিক নারী নেতৃত্ব বিকশিত হচ্ছে না। ফলে দেশের যে সঠিক নারী নেতৃত্ব, এটির বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে না।
‘যদি তা হতো তাহলে এই সংরক্ষিত আসনে আমরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা লক্ষ করতাম, কিন্তু আমরা দেখছি নারী নেতৃত্বের অভাবে জামানত হারানো প্রার্থীকে আবারও মনোনীত করা হচ্ছে। এ আসনগুলোতে প্রতিযোগিতা হলে নারী নেতৃত্বের বিকাশ দৃশ্যমান হতো।’
স্থানীয় এক প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক শারমিন আক্তার বলেন, ‘সংসদ নির্বাচন নিয়ে দেশে যতটা উম্মাদনা থাকে, প্রচারণা থাকে বা অংশগ্রহণে স্বতঃস্ফূর্ততা থাকে, নারী সংরক্ষিত আসনে তেমনটা থাকে না। সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পর বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে এ আসনগুলোতে প্রার্থী দেয়া হয়, কিন্তু প্রতিযোগিতাপূর্ণ করতে নারী শক্তির বিকাশ ঘটাতে এ ৫০টি আসনে অংশগ্রহণের জন্য নারীদের তেমনভাবে উদ্বুদ্ধ করতে আমরা দেখছি না, যার ফলে ইচ্ছা থাকলেও অনেক নারী আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।
‘আমরা যদি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের প্রসঙ্গে কথা বলি বা সেভাবে নারীদের উদ্বুদ্ধ করি, তাহলে রাজনৈতিক দলের বাইরেও অনেক সমাজকর্মী নারী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন।’
তিনি বলেন, ‘আমরা নারীরা ধরেই নিই সংসদের সংরক্ষিত আসনে কে নারী সদস্য হবেন, তা রাজনৈতিক দল ঠিক করে, কিন্তু এখানে যে সব নারী প্রতিযোগিতা করতে পারে, এ শক্তি আমরা নারীরা এখনও আয়ত্ত করতে পারিনি।’
জামানত হারানোর পরও সংরক্ষিত আসনে জাপার মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়ে নূরুন নাহার বেগমের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদের ৫০টি সংরক্ষিত নারী আসনে আগামী ১৪ মার্চ ভোটের দিন রেখে তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। এ আসনগুলোতে নির্বাচনে এখনও কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নারী প্রার্থী পাওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।