ঝালকাঠিতে এক বৃদ্ধার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বুধবার দুপুরে পৌর এলাকার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের রামনগর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
৭০ বছরের বেশি বয়সী হাসিনা বেগমকে তার ছেলে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। স্বামী হারানো তিন সন্তানের জননী হাসিনা থাকতেন রামনগর গ্রামের বটতলা এলাকায়।
স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ জানায়, বুধবার সকালে বৃদ্ধা হাসিনার সঙ্গে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে বেশ কথা কাটাকাটি হয় বড় ছেলে শাহ আলমের। তারপর শাহ আলম ঘর থেকে বের হন। পরে শাহ আলমের স্ত্রী এবং ভাই প্রবাসী সুমনের স্ত্রীকে এক সঙ্গে টিসিবির পণ্য কিনতে বাজারে চলে যান।
প্রবাসী সুমনের স্ত্রী ময়না বেগম জানান, তিনি এবং তার ননদ দুপুর দুইটার পর ঘরে ফেরেন। তখন তাদের কারো ঘরে শাশুড়ি হাসিনা বেগম ছিলেন না। কিছুক্ষণ পর দুপুর আড়াইটার দিকে প্রতিবেশী কালামের স্ত্রী লিলি বেগম চিৎকার করে সবাইকে ডাক দিতে থাকেন। তখন ঘর থেকে বের হয়ে বাড়ির পাশে ডোবার ধারে গাছের সাথে গলায় ফাঁস অবস্থায় শাশুড়ি হাসিনা বেগমকে দেখতে পান।
নিহতের স্বজন মো.রুবেল জানান, লিলির চিৎকারের পর ডোবার ধারে এসে হাসিনা বেগমের বড় ছেলে শাহ আলম পাশের ঘরের জয় হাওলাদারকে সঙ্গে নিয়ে হাসিনার মরদেহ বাড়ির ভেতর নিয়ে যান।
অন্য স্বজনরা বলেন, বৃদ্ধা হাসিনা বেগম দু পায়ে ক্রাচ দিয়ে ভর করে চলাফেরা করতেন। তিনি কীভাবে গলায় ফাঁস দেবেন ?
স্থানীয়দের অভিযোগ, বড় ছেলে শাহ আলম তার মায়ের সাথে ঝগড়া করে তার মায়ের মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করেছেন। তবে হাসিনার ছেলে শাহ আলম এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “ঝগড়ার পর আমার মা নিজেই নিজের মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করে পরবর্তীতে নিজেই গলায় ফাঁস দিয়েছে।”
সদর থানার ওসি মো. শহিদুল ইসলাম জানান, শাহ আলম নিজেই থানায় এসে তাদের জানায় তার মা হাসিনা বেগম আত্মহত্যা করেছেন। এরপর তারা ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে যান এবং বৃহস্পতিবার রাতে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। এটি হত্যাকাণ্ড বলে তারা প্রাথমিকভাবে ধারণা করেছেন। বিস্তারিত তথ্য ময়না তদন্ত রিপোর্টের পর জানা যাবে।
ঝালকাঠি সদর সার্কেলের দায়িত্বরত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহিতুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের বড় ছেলে শাহ আলম, দুই পুত্রবধূ খাদিজা বেগম ও ময়না বেগম, প্রতিবেশী বাবু হোসেনকে পুলিশ হেফাজতে এনে রেখেছেন তারা।