বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নওগাঁ ২: নৌকার সঙ্গে তিন প্রার্থীর লড়াই

ভোটারদের মতে, আওয়ামী লীগ সমর্থিত (নৌকার প্রতীক নিয়ে) শহীদুজ্জামান সরকার, স্বতন্ত্র (ট্রাক প্রতীক) প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার আখতারুল আলমের মধ্যে ভোটের মাঠে ও ময়দানে ব্যাপক প্রতিদ্বন্দ্বিতা হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এ দৌড়ে খুব একটা পিছিয়ে নেই জাতীয় পার্টির মনোনীত (লাঙ্গল প্রতীক) প্রার্থী অ্যাডভোকেট তোফাজ্জল হোসেন।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্থগিত হওয়া নওগাঁ-২ (ধামইরহাট ও পত্নীতলা) আসনের ভোটগ্রহণ হবে সোমবার।

৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, কিন্তু স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আমিনুল হকের মৃত্যুর কারণে নওগাঁ-২ আসনের ভোটগ্রহণ স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী ৪৭ (নওগাঁ-২) আসনের সাবেক এমপি শহীদুজ্জামান সরকার বাবলুর সঙ্গে ভোটের মাঠে লড়াই হবে স্বতন্ত্র প্রার্থী আখতারুল আলমের।

আওয়ামী লীগ সমর্থিত স্বতন্ত্র এ প্রার্থী ট্রাক প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়ায় পাল্টে যাচ্ছে ভোটের হিসাবনিকাশ।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কে জয়ী হবেন তা নিয়ে সকাল-সন্ধ্যা পাড়া-মহল্লায় এবং চায়ের টেবিলে প্রার্থীদের পক্ষে ও বিপক্ষে চলছে নানান আলোচনা ও সমালোচনা। শেষ মুহূর্তে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ভোট প্রার্থনা করছেন প্রার্থীরা।

এ আসনের নির্বাচনি প্রচারণা শেষ হয়েছে শনিবার সকাল ৮টার থেকে।

অন্যদিকে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেদী মাহমুদ রেজা ৩০ জানুয়ারি দুপুরে উচ্চ আদালতের রায়ের মাধ্যমে প্রার্থীতা ফিরে পেয়েছেন। ৩১ জানুয়ারি দুপুরে ঈগল প্রতীক পেয়েছেন।

তিনিসহ এ আসনে চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, তবে বিজয়ের হাসি কে হাসবেন সেটিই এখন দেখার বিষয়।

স্থানীয় ও একাধিক সূত্রে জানা যায়, শহীদুজ্জামান সরকার ১৯৯১ সালে বিএনপির প্রার্থী আব্দুল মান্নানকে হারিয়ে প্রথম সংসদ সদস্য নিদর্বাচিত হন। এরপর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপির) ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে শামসুজ্জোহা খান জোহা ১৯৯৬-২০০১ সালে নির্বাচিত হন।

ভোটের মাঠে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে জানা যায়, আসন্ন ১২ ফেব্রুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে (ধামইরহাট ও পত্নীতলা) আসনের উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের সাবেক ও বর্তমান পদ বঞ্চিত নেতা-কর্মী এবং বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা স্থানীয় সংসদ সদস্য শহীদুজ্জামান সরকারের বিরুদ্ধে একতাবদ্ধ হয়ে ইঞ্জিনিয়ার আখতারুলের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।

অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট আইয়ুব হোসেন নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহার ঘোষণা করে ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আখতারুলের পক্ষ নিয়েছেন।

সুষ্ঠু নির্বাচন ও ভোটের মাঠে সাধারণ ভোটারদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা গেলে, এ আসনে নতুন মুখ আসার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায় না এমনটাই দাবি করেন আওয়ামী লীগের একাধিক বঞ্চিত সাবেক ও বর্তমান নেতা-কর্মী, ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও সাধারণ ভোটাররা।

ভোটারদের মতে, আওয়ামী লীগ সমর্থিত (নৌকার প্রতীক নিয়ে) শহীদুজ্জামান সরকার, স্বতন্ত্র (ট্রাক প্রতীক) প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার আখতারুল আলমের মধ্যে ভোটের মাঠে ও ময়দানে ব্যাপক প্রতিদ্বন্দ্বিতা হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এ দৌড়ে খুব একটা পিছিয়ে নেই জাতীয় পার্টির মনোনীত (লাঙ্গল প্রতীক) প্রার্থী অ্যাডভোকেট তোফাজ্জল হোসেন।

উপজেলা যুবলীগের সহসভাপতি আব্দুল হাই দুলাল বলেন, ‘এর আগে উপজেলায় চার খলিফা ছিল। এখন তা বেড়ে হয়েছে অর্ধ শতাধিক। ক্ষমতার অপব্যবহার করে বালু মহল থেকে শুরু করে সব জায়গায় টেন্ডারবাজিসহ নিজেদের ইচ্ছেমতো অপকর্ম করে যাচ্ছেন। এদের পরিবর্তন না হলে আওয়ামী লীগসহ এর অঙ্গ সংগঠনের অস্তিত্ব সংকট দেখা দেবে।’

পত্নীতলা উপজেলার পাটিচোড়া ইউনিয়ন ৮ নম্বর ওয়ার্ডের জেলা মুক্তিযোদ্ধা ডেপুটি কমান্ডার ছাদেক উদ্দীন আহম্মেদ বলেন, ‘বর্তমান সংসদ সদস্য দুই উপজেলায় তার পছন্দের খলিফারদের নিয়ে একটি সিন্ডিকেট তৈরি করেছেন। তা ছাড়া যে নেতার কাছে সাধারণ মানুষ ও ত্যাগী নেতা-কর্মীরা যেতে পারেন না তাদের পরিবর্তন দরকার। এ কারণেই একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়ে তিনি আওয়ামী লীগ সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী আখতারুলের পক্ষ নিয়েছেন।’

লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘নওগাঁর অবহেলিত জনপদের (ধামইরহাট ও পত্নীতলা) সাধারণ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন ও উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যেতে তিনি জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। যোগ্য প্রার্থী হিসেবে এ এলাকার সাধারণ ভোটাররা তাকেই ভোট দিয়ে এমপি নির্বাচিত করবেন।’

স্বতন্ত্র প্রার্থী আখতারুল আলম বলেন, ‘অবহেলিত এ জনপদের মানুষ টেন্ডারবাজি ও সিন্ডিকেট থেকে মুক্তি চায়। কর্মীবান্ধব নেতৃত্ব তৈরির পাশাপাশি দুই উপজেলার শিক্ষিত ও বেকার তরুণ দের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি সাধারণ মানুষ ও কৃষকদের সঙ্গে নিয়ে কৃষি বান্ধব শিল্প ও সমৃদ্ধ উপজেলা হিসেবে গড়ে তুলতে সাধারণ ভোটাররা তাকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত করবেন বলে জানান।’

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দেলদার হোসেন বলেন, ‘খলিফা বলে এখানে কেউ নেই। আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনে গণতান্ত্রিক পন্থায় বিভিন্ন সেক্টরে কমিটি হয়েছে। কমিটিতে অনেক নতুন মুখ এসেছে আবার পুরাতন অনেকেই বাদ পড়েছেন। এতে করে অনেকের মনে কষ্ট থাকতে পারে কিন্তু ত্যাগী নেতা-কর্মীরা দলছুট হয়েছে বা অন্য পক্ষ নিয়েছে এ বিষয়ে জানা নেই।

‘দীর্ঘ ১৫ বছর দল ক্ষমতায়। এমপিও ক্ষমতায়। এতে করে এলাকায় যে উন্নয়ন হয়েছে তার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সাধারণ মানুষ আবারও আওয়ামী লীগকেই ভোট দেবেন।’

উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ধামইরহাট উপজেলায় আট ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় মোট ভোটার সংখ্যা এক লাখ ৫৭ হাজার ১৫ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭৮ হাজার ৩০১ জন, মহিলা ৭৮ হাজার ৭১৩ ও হিজরা একজন। নির্বাচনে ৫৩ জন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও ৩০৪ জন সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তাসহ পোলিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ৬০৮ জন। এবং ৫৩টি ভোট কেন্দ্রে স্থায়ী ভোট কক্ষের সংখ্যা ২৯১ এবং অস্থায়ী ১৩ টি।

এবারই প্রথমবারের মতো ভোটের দিন সকালে কেন্দ্রে ব্যালট পেপার পাঠানো হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা আসমা খাতুন বলেন, ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শতভাগ উৎসবমুখর ও নিরপেক্ষতার মধ্য দিয়ে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন ও নিরাপত্তার দায়িত্বে উপজেলায় ৯ জন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে চারজন ও সাধারণ কেন্দ্রে তিনজন পুলিশসহ আনসার ৬৩৬ জন, পুলিশের মোবাইল টিম ১৩টি, স্ট্রাইকিং টিম তিনটি ও ছয়টি চেকপোস্ট নিয়মিত কাজ করছে।’

এ বিভাগের আরো খবর