নওগাঁর মহাদেবপুরে পারিবারিক অশান্তির জেরে এক দম্পতি গ্যাস ট্যাবলেট (বিষ) সেবনে আত্মহত্যা করেছে। দ্বিতীয় স্ত্রীকে ঘরে তোলার তিন দিন পরই ছোট বউকে নিয়ে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেছেন সুমন হোসেন নামের ওই ব্যক্তি।
বুধবার রাতে মহাদেবপুর উপজেলার চেরাগপুর ইউনিয়নের বরাইল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এ দিন রাত ৯টার দিকে তারা গ্যাস ট্যাবলেট সেবন করেন। পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে নওগাঁ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়।
নিহতরা হলেন- উপজেলার চেরাগপুর ইউনিয়নের বরাইল গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে ৪০ বছর বয়সী সুমন হোসেন ও তার স্ত্রী ৩০ বছর বয়সী গোলাপী খাতুন।
নিহতের পরিবারের বরাতে পুলিশ জানায়, প্রথম স্ত্রী খাতিজা বেগমকে না জানিয়ে এক সপ্তাহ আগে গোলাপীকে বিয়ে করেন সুমন। গত মঙ্গলবার খাদিজা তার বাবার বাড়ি গেলে এ সুযোগে ছোট বউ গোলাপীকে বাড়িতে নিয়ে আসেন তিনি। বুধবার বিকেলে খাদিজা বাড়িতে আসার পর থেকেই শুরু হয় ঝগড়া। রাতের খাবার খাওয়ার পর সবাই শুয়ে পড়েলে রাত ৯টার দিকে সুমন ও গোলাপী গ্যাস ট্যাবলেট সেবন করেন।
প্রতিবেশীরা জানতে পেরে তাদের রাত ১১টার দিকে নওগাঁ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১২টার দিকে গোলাপীর ও রাত ২টার দিকে সুমনের মৃত্যু হয়।
সুমনের প্রতিবেশী গৃহবধূ চম্পা বেগম বলেন, ‘সুমনের আগের সংসারে দুই সন্তান ও স্ত্রী আছে। দিনজমুর হওয়ার পরও গোপনে আরেকটি বিয়ে করে মঙ্গলবার বউ বাড়ি নিয়ে আসে। এ সময় বড় বউ তার বাবার বাড়ি ছিল। সংবাদ পেয়ে বড় বউ খাদিজা মঙ্গলবার বিকেলেই বাড়ি চলে আসে। এরপর থেকে পারিবারিক দ্বন্দ্ব চলছিল।’
তিনি বলেন, ‘রাতেও তারা সবাই একসঙ্গে খাবার খেয়ে ছোট বউকে নিয়ে শুয়ে পড়ে সুমন। পরে সুমন বড় বউয়ের কাছে যেতে চাইলে সে সময়ও দুজনের মধ্যে ঝগড়া হয়।
‘রাত ৯টার দিকে হয়ত তারা দুজনে গ্যাস ট্যাবলেট সেবন করে। বিষয়টি জানার পর তাদের উদ্বার করে হাসপাতালে নেয়া হয়।’
হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার ডা. আবু আনসারি বলেন, ‘হাসপাতালের নিয়ে আসার পর থেকেই তাদের দুজনের অবস্থা খুবই গুরুতর ছিল। তবে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের রেফার করার প্রক্রিয়া করা হলেও রোগীর স্বজনরা অনত্র নিতে চাননি। তারপর তাদের যথাসাধ্য চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিল। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গোলাপী ও পরে সুমন মারা যান।’
মহাদেবপুর থানার ওসি রুহুল আমিন বলেন, ‘পারিবারিক দ্বন্দ্বে গ্যাস ট্যাবলেট সেবনে আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি। ময়নাতদন্তের পর আইনানুগ প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হবে।’