বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

চুরি করতে দেখে ফেলায় প্রবাসীর স্ত্রী-সন্তানকে হত্যা

  • প্রতিনিধি, পাবনা   
  • ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ২০:১১

বাড়ি নির্মাণের জন্য ২৫ হাজার ইট ক্রয় এবং ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের খবর পেয়ে চুরির পরিকল্পনা করেন মো. হোসেন আলী ও তার ছোট ভাই সাদ্দাম হোসেন। সহযোগী হিসেবে তারা সঙ্গে নেন তাদের পূর্বপরিচিত দূর্ধর্ষ চোর হুমায়ুন কবির হৃদয়কে।

উদ্দেশ্য ছিল চুরি। চুরি করার সময় দেখে ফেলায় হত্যা করা হয় প্রবাসীর স্ত্রী এবং তার ১০ বছরের শিশুকে। পাবনার চাটমোহর উপজেলার চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। শুধু তাই নয়, এ ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডের ব্যবহৃত মালামাল উদ্ধার করেছে।

বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে পাবনা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সী।

গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা হলেন- উপজেলার দিঘুলিয়া গ্রামের ২৬ বছর বয়সী মো. সাদ্দাম হোসেন ও তার ভাই ৩৭ বছর বয়সী মো. হোসেন আলী এবং রাজবাড়ী জেলার সদর থানার খানখানাপুর দত্তপাড়ার ২৮ বছর বয়সী মো. হুমায়ন মিজী ওরফে হৃদয়।

আসামিদের মধ্যে মো. সাদ্দাম হোসেন ২০২২ সালের অক্টোবরে চাটমোহরের ফৈলজানা এলাকায় একজন সিএনজি ড্রাইভার হত্যা মামলাসহ একাধিক হত্যা মামলার আসামি।

হত্যাকাণ্ডের শিকার ৩৫ বছর বয়সী লাবনী খাতুন ও ৮ বছরের রিয়াদ হোসেন দিঘুলিয়ার আব্দুর রশিদের স্ত্রী ও সন্তান।

পুলিশ সুপার জানান, আব্দুর রশিদ গত ৭ বছর যাবত মালয়েশিয়া থাকেন। প্রবাসী রশিদের স্ত্রী লাবনী খাতুন তার বাড়ি নির্মাণের জন্য কয়েক দিন আগে প্রায় ২৫ হাজার ইট কেনেন এবং ব্যাংক থেকে নগদ অর্থ উত্তোলন করে বাড়িতে রাখেন।

গত ২৫ জানুয়ারি লাবনী তার ১০ বছরের ছেলে রিয়াদকে নিয়ে রাতে খাওয়া-দাওয়া শেষে নিজ ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। পরের দিন সকালে ঘরের দরজা খোলা এবং আসবাবপত্র এলোমেলো দেখে সবাই তাদের খোঁজাখুজি শুরু করে। একপর্যায়ে লাবনীর ছাগল রাখার ঘরে লাবনীর মরদেহ এবং বাড়ির পাশে পুকুর পাড়ে শিশু রিয়াদের মরদেহ গাছের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়।

এ ঘটনায় পুলিশ হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদঘাটন এবং চুরি হওয়া মালামাল উদ্ধারে তদন্তে নামে।

ওসি বলেন, ‘নিহত লাবনী খাতুন বিপুল টাকায় ইট কেনা এবং ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের খবরে আসামিদের ধারনা হয়, তাদের কাছে অনেক টাকা-পয়সা ও স্বর্ণালঙ্কার আছে। এই ধারনা নিয়ে আসামি মো. হোসেন আলী ভুক্তভোগীদের বাড়িতে চুরির পরিকল্পনা করেন। পরবর্তীতে তার ছোট ভাই সাদ্দাম তাদের পূর্বপরিচিত ফরিদপুর জেলার আরেক দূর্ধর্ষ চোর হুমায়ুন কবির হৃদয়কে সঙ্গে নিয়ে ২৫ জানুয়ারি রাতে ওই বাড়িতে চুরি করতে যান।

‘এক পর্যায়ে লাবনী খাতুন ও তার সন্তান রিয়াদ টের পেয়ে গেলে তারা সঙ্গে সঙ্গে তাদের হত্যা করেন এবং ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য রিয়াদের মরদেহ বাড়ির পাশের গাছে ঝুলিয়ে রাখেন এবং লাবনীর লাশ গোয়াল ঘরে ফেলে রাখেন। পরে স্বর্ণের আংটি, হার, হাতের বালা, কানের দুল, দুই জোড়া রুপার নুপুরসহ বিভিন্নি মূল্যবান সামগ্রী নিয়ে পালিয়ে যান।’

তিনি বলেন, ‘এ ঘটনার তদন্তের এক পর্যায়ে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন এবং তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়।’

সংবাদ সম্মেলনে পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) মো. মাসুদ আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) আবু বক্কর সিদ্দিক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) হাসিবুল বেনজির, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি ইমরান মাহমুদ তুহিন, সদর থানার ওসি রওশন আলী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এ বিভাগের আরো খবর