শিশুদের টাইফয়েড প্রতিরোধে “টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন ২০২৫” সফল বাস্তবায়নে সিটি কর্পোরেশন পর্যায়ে অ্যাডভোকেসী সভা আজ বৃহস্পতিবার ঢাকায় নগরভবন অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব মোঃ জহিরুল ইসলাম উপর্যুক্ত সভায় সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। দেশব্যাপী ৯ মাস হতে ১৫ বছর কম বয়সী সকল শিশুদের এক ডোজ টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন (টিসিবি) টিকা প্রদানের অংশ হিসেবে ডিএসসিসি এলাকায় ১২ অক্টোবর থেকে এই টিকা প্রদান শুরু হবে।
টাইফয়েড ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সংক্রমিত একটি রোগ যেটি দূষিত পানি ও খাবারের মাধ্যমে ছড়ায়। টাইফয়েড টিকা গ্রহণের মাধ্যমে টাইফয়েড জ্বর ও জ্বর জনিত জটিলতা প্রতিরোধ করা যায়। ১২ই অক্টোবর থেকে ১৩ই নভেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত “টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন ২০২৫” এর আওতায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকায় প্রায় ১০ লক্ষ শিশুকে বিনামূল্যে এই টিকা দেওয়া হবে। ২২৫২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ওয়ার্ড কার্যালয়স্থ ৭৫টি স্থায়ী কেন্দ্র ও প্রায় ৪৫০টি অস্থায়ী কেন্দ্রের মাধ্যমে ২টি পর্যায়ে এই টিকাদান কার্যক্রম বাস্তবায়ন হবে। প্রথম পর্যায়ে, ১২ই অক্টোবর হতে ৩১ই অক্টোবর সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের টিকাদান করা হবে। দ্বিতীয় পর্যায়ে, ১লা নভেম্বর হতে ১৩ই নভেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত অস্থায়ী কেন্দ্রসমূহের মাধ্যমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বহির্ভূত কমিউনিটির শিশু এবং প্রান্তিক পর্যায়ের সকল শিশুদের টিকাদান করা হবে। এছাড়া, ১২ই অক্টোবর হতে ১৩ই নভেম্বর পর্যন্ত শুক্রবার ও সরকারি ছুটির দিন ব্যতীত প্রতিটি ওয়ার্ড কার্যালয়স্থ স্থায়ী টিকাদান কেন্দ্র হতে এই টিকা গ্রহন করা যাবে।
টিকা গ্রহণের জন্য শিশুর অনলাইনে বিদ্যমান ১৭ ডিজিটের জন্ম নিবন্ধন নম্বর দিয়ে www.vaxepi.gov.bd ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করে টিকা কার্ড ডাউনলোড করতে হবে। যাদের জন্ম নিবন্ধন নম্বর অনলাইনে নেই বা পূর্বে জন্ম নিবন্ধন করা হয়নি তাদেরকে নিজ নিজ ওয়ার্ড কার্যালয়ে যোগাযোগপূর্বক অনলাইন জন্ম নিবন্ধন নিশ্চিত করতে হবে। সভাপতির বক্তব্যে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, “টাইফয়েড টিকা সম্পূর্ণ নিরাপদ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক পরীক্ষিত। সকলের সহযোগিতায় আমরা শিশুদের টিকাদান কার্যক্রমকে একটি উৎসবে পরিণত করতে চাই।” তিনি বলেন, টিকা গ্রহণের জন্য জন্ম নিবন্ধন প্রয়োজন বিধায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে জন্ম নিবন্ধন সেবা প্রদানের জন্য ডিএসসিসির আঞ্চলিক কার্যালয়সমূহে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
অ্যাডভোকেসি সভায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, সমাজসেবা অধিদপ্তর, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, থানা শিক্ষা অফিসার, রেড ক্রিসেন্ট, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং ইউনিসেফের প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করেন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সচিব জনাব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মোঃ মাহাবুবুর রহমান তালুকদার, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (অতি. দা.) ডাঃ নিশাত পারভীন এবং আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাগণ সভায় উপস্থিত ছিলেন।