মানিকগঞ্জে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য একটি রেস্টুরেন্ট পরিদর্শন করায় সেটি জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সিফাত কোরাইশী সুমনের রোষের কবলে পড়েছে। অভিযোগ উঠেছে, ছাত্রলীগ সভাপতি ও তার অনুসারীরা রেস্টুরেন্টটি জবরদস্তি বন্ধ করে দিয়েছেন।
জেলা ছাত্রলীর সভাপতির নেতৃত্বে প্রায় ১০জন নেতাকর্মী সোমবার মানিকগঞ্জ সদরে কর্নেল মালেক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনে অবস্থিত পাণসী নামের একটি রেস্টুরেন্টটি বন্ধ করে দেন। এর আগে ২৭ জানুয়ারি রেন্টেরেন্টটি পরিদর্শন করেন মানিকগঞ্জ-২ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য জাহিদ আহমেদ টুলু।
রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ১০ নভেম্বর পানসী রেস্টুরেন্ট আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম শুরু করে। রেস্টুরেন্টের চেয়ারম্যান ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশারের আমন্ত্রণে রোববার (২৭ জানুয়ারি) রেন্টেুরেন্ট পরিদর্শনে আসেন জাহিদ আহমেদ টুলু এমপি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে পরদিন দুপুরে জেলা ছাত্রলীর সভাপতি সিফাত কোরাইশী সুমনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরারা এসে রেস্টুরেন্টটি বন্ধ করে দেয়।
পানসী রেস্টুরেন্টের প্রধান শেফ কবীর হোসেন বলেন, রেস্টুরেন্ট বন্ধ থাকায় প্রতিদিন শ্রমিকদের পেছনে মালিক পক্ষের ১০ হাজার টাকা করে দিতে হচ্ছে। রেস্টুরেন্ট খোলা থাকলে মালিক- শ্রমিক উভয় পক্ষেরই ভালো হয়।
পানসী রেস্টুরেন্টের চেয়ারম্যান ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার বলেন, ‘২৮ জানুয়ারি দুপুরে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সুমনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের ১০ নেতাকর্মী রেস্টুরেন্টে এসে ম্যানেজার ও কর্মচারীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। তারা রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার ও কর্মচারীদের বের করে দেন। এমনকি রেস্টুরেন্ট বন্ধ করার সময় তারা মানিকগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য জাহিদ মালেকের কথাও বলেন।
‘এছাড়া রেস্টুরেন্ট বন্ধ না করলে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) রেস্টুরেন্টে পাঠিয়ে ৫ থেকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করানোরও হুমকি দেন সুমন।’
তিনি আরও বলেন, রেস্টুরেন্ট বন্ধের বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সিফাত কোরাইশী সুমনকে বেশ কয়েকবার ফোন করা হলেও তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। আমাদের ধারণা, মানিকগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য জাহিদ আহমেদ টুলু আসার কারণেই রেস্টুরেন্ট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কারন আমার রেস্টুরেন্টের সব কাগজপত্র নবায়ন করা আছে।’
রেস্টুরেন্ট বন্ধ করায় ছাত্রলীগ সভাপতিসহ অন্যদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সুমন বলেন, ‘আমার জানামতে পানসী রেস্টুরেন্টের কোনো কাগজপত্র নেই। সম্ভবত ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযানের ভয়ে হোটেল মালিকরাই রেস্টুরেন্ট বন্ধ রেখেছে। আমি বা কোনো ছাত্রলীগ নেতাকর্মী রেস্টুরেন্ট বন্ধের সঙ্গে জড়িত নই।’
জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আসাদুজ্জামান রুমেল বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি বা ভোক্তা অধিদপ্তরের কেউ অবগত নন।’
মানিকগঞ্জ সদর থানার ওসি হাবিল হোসেন বলেন, ‘এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’