মেহেরপুরের বাজারে মাংসের দাম বেড়ে পৌঁছেছে আগের বর্ধিত দামে, সেইসঙ্গে পেঁয়াজের দাম বেড়ে সেঞ্চুরি করেছে। কৃষিনির্ভর জেলা হলেও শীতকালীন প্রায় সব সবজির দামই সপ্তাহ ব্যাবধানে কেজি প্রতি বেড়েছে ১৫ থেকে ২৫ টাকা পর্যন্ত। বতর্মানে এক কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৩০ টাকায়।
ক্রেতারা বলছেন, শীত মৌসুমে শীতকালীন সবজি অতীতে কখনোই এত চড়া দামে কিনতে হয়নি তাদের। অন্যদিকে, ব্যাবসায়ীদের দাবি, গত এক সপ্তাহ ধরে তীব্র শীতের কারণে সবজির আমদানি কমে গেছে। ফলে দাম বেড়েছে।
মাংস বিক্রেতারা বলছেন, ‘গরুর দাম বেশি হওয়ায় মাংসের দাম বেড়েছে। এর চেয়ে কম দামে মাংস বিক্রি করতে হলে এক কেজি মাংসের মধ্যে অন্তত ৩ শ’ গ্রাম হাড় মিশিয়ে বিক্রি করতে হবে তাদের।
জেলার বাজার নিয়ন্ত্রণ রাখতে প্রতিনিয়ত বাজার মনিটরিং করে যাচ্ছেন বলে নিউজবাংলাকে জানিয়েজে ভোক্তা অধিকার কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার জেলার সবচেয়ে বড় বামন্দী বাজার ঘুরে দেখা যায়, বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে, সপ্তাহখানেক আগে যা ছিল ৩৫-৪৫ টাকা। দেশি শসা প্রতি কেজি ৭৫-৮০ টাকা, আগে যা ছিল ৪০ টাকা কেজি। পটল গত সপ্তাহে ৪৫ টাকায় বিক্রি হলেও আজ প্রতি কেজি ৮০ টাকা। ৪০ টাকার ফুলকপি হয়েছে ৬০ টাকা, ৩৫ টাকার পালংশাক ৬০ টাকা, ২৫ টাকার পেঁয়াজকলি ৪০ টাকা, ৩৫-৪০ টাকা কেজির টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকায়। গত ৪০ টাকা দরে বিক্রি হওয়ার গাজর কিনতে লাগছে ৭০ টাকা।
দাম বেড়েছে গরুর মাংসেরও। ৬৫০-৬৭৫ টাকার গরুর মাংসের দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৭২০ থেকে ৭৫০ টাকা কেজি দরে।
সবজি বিক্রেতা আব্দুর রশিদ বলেন, ‘এ সময় সবজি উৎপাদন ভালো হলেও প্রচণ্ড শীতের কারণে সবজি বাজারজাত করা কঠিন হয়ে পড়ছে। তাই বাজারে সবজির আমদানি কমে গেছে। যা সবজি আসছে, পাইকারদের কাছ থেকে বেশি দামে ঢাকার পার্টিরা কিনে নিয়ে যাচ্ছে।’
বামন্দী বাজারের কসাই বিপু হোসেন বলেন, ‘আমরা বাজার থেকে গাছান গরু (আস্ত গরু) বেশি দামে কিনছি। তাই গরুর মাংস সাত থেকে সাড়ে সাত শ’ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি, তা না হলে পড়তা হবে না। এর চেয়ে কম দামে মাংস বিক্রি করতে হলে এক কেজি মাংসের মধ্যে ৩ শ’ গ্রাম হাড্ডি ও চর্বি মেশানো লাগবে। তাছাড়া কম দামে মাংস বিক্রি করা সম্ভব হবে না।’
পেঁয়াজ বিক্রেতা পান্না বলেন, ‘গত হাটেও আমরা পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৭৫ টাকা কেজি বিক্রি করেছি। অথচ আজ হঠাৎ পাইকারি দামই চলছে ৮৫ থেকে ৯০ টাকা করে। আর আমরা খুচরা বিক্রি করছি ৯৫ থেকে একশ টাকা পযর্ন্ত।’
জুলফিকার আলী নামে এক সবজি ক্রেতা বলেন, ‘এখন শীতকাল, সবজির ভরা মৌসুম। সবজির দাম এমনিতেই কমে যাওয়ার কথা। অথচ সবজির এখন বাড়তি দাম। এর একটাই কারণ, ব্যাবসায়ীদের সিন্ডিকেটের লাগাম টেনে ধরার জন্য কেউ নেই। প্রশাসনের বাজার মনিটরিংয়ের অনেক কমতি রয়েছে।’
ভ্যানচালক টিটো বলেন, ‘আমরা দুদিনে যা ভাড়া মাইরি জমাই। বাজার করতে গেলে একদিনে সব টাকা ফুরিয়ে যায়, কিছুই থাকে না।’
মেহেরপুর জেলা ভোক্তা অধিকার কর্মকর্তা সজল আহমেদ বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে আমরা সর্বদা বাজার মনিটরিং করে যাচ্ছি, যাতে কোনো ব্যাবসায়ী দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করে বাজারে অস্তিরতা তৈরি করতে না পারে।’